ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইনে রাজ্যে শত শত রোহিঙ্গার মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করছে বেসরকারি ত্রাণ সংস্থা (এনজিও) পার্টনার্স রিলিফ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট এবং স্থানীয় জনগণ।
মোখার আঘাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি অনেক এলাকা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে, যার ফলে সঠিক তথ্য নির্ণয় কথা কঠিন হয়ে পড়েছে বলে এক খবরে জানিয়েছে কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা।
সোমবার রাতে, মিয়ানমারের সামরিক সরকার সংঘাত-বিধ্বস্ত রাখাইনকে “বিপর্যয় এলাকা” হিসেবে ঘোষণা করে। এ রাজ্যেই রবিবার ঘূর্ণিঝড় মোখা ঘণ্টায় ২৫০ কিলোমিটার বাতাসের বেগে আঘাত হানে। এতে করে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয় রাখাইনের রাজধানী সিত্তুয়ের। রাজধানীর অনেক ঘরবাড়ির ছাদ উড়ে যায়, বাতাসে গাছপালা ও টেলিযোগাযোগ টাওয়ার ভেঙে পড়ে। এ ছাড়া মুষলধারে বৃষ্টি ও জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয় শহরটি।
জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক দপ্তর ওসিএইচএ জানিয়েছে, রাখাইন রাজ্যে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে বিশেষ করে সিত্তুয়ে শহরে।
সংস্থাটি আরো জানায়, “প্রাথমিক প্রতিবেদন দেখে বুঝাই যায় ক্ষয়ক্ষতি ব্যাপক এবং দুর্বল সম্প্রদায়ের মধ্যে সহযোগিতা প্রয়োজন, বিশেষ করে বাস্তুচ্যুত লোকদের সংখ্যা বেশি।
রাখাইনে কাজ করছে বেসরকারি ত্রাণ সংস্থা (এনজিও) পার্টনার্স রিলিফ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট। সংস্থাটি জানিয়েছে সিত্তুয়ের কাছে বসবাসকারী রোহিঙ্গারা তাদের বলেছে যে তাদের আশ্রয়কেন্দ্রগুলো পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে, রোহিঙ্গাদের মৃত্যুর সংখ্যা কয়েকশ ছাড়াতে পারে।
এদিকে অং কিয়াও মো নামক একজন রোহিঙ্গা কর্মী এবং জাতীয় ঐক্য সরকারের মানবাধিকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এক টুইটার পোস্টে জানান, শুধুমাত্র সিত্তুয়েতেই মৃত্যুর সংখ্যা ৪০০। তিনি ঘুর্ণিঝড়ের কিছু ভিডিও শেয়ার করেন। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি।
এদিকে রয়টার্স জানিয়েছে, শতাধিক রোহিঙ্গার মৃত্যু হয়েছে বলছে স্থানীয়রা। ঝড়ের কারণে বহু লোক এখনো নিখোঁজ রয়েছে। এখন পর্যন্ত পর্যাপ্ত সাহায্য না পাওয়ার কথা জানিয়েছে তারা।
তবে মৃত্যুর বিষয়ে সঠিক কোন তথ্য দিতে পারেনি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো। এদিকে সামরিক মালিকানাধীন মায়াওয়াদ্দি চ্যানেল সোমবার জানিয়েছে যে ঘূর্ণিঝড়ে তিনজন নিহত হয়েছে।
রাখাইনে লাখ লাখ রোহিঙ্গার বসবাস করে থাকলেও নির্যাতিত এই সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীকে নিজেদের নাগরিক বলে স্বীকৃতি দিতে মিয়ানমারের কোনো সরকারই রাজি হয়নি। গত কয়েক বছরে সামরিক বাহিনীর প্রাণঘাতী দমনপীড়নের মুখে মিয়ানমারের ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা প্রতিবেশী বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে।