নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরে অবস্থিত আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রসিকিউটর করিম আসাদ আহমেদ খানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে রাশিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। চলতি বছরের মার্চে করিম খানের আবেদনের প্রেক্ষিতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল আইসিসি। ক্রেমলিন তখন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছিল এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রুশ গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, পুতিনের বিরুদ্ধে পরোয়ানার প্রতিক্রিয়ায় আইসিসির প্রধান প্রসিকিউটর ও বিচারকদের বিরুদ্ধে পাল্টা তদন্ত শুরু করে রাশিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি তদন্ত কমিটি। তদন্তটি রুশ ফৌজদারি আইনের ২৯৯ এবং ৩৬০ ধারায় করা হয়। এই দুই ধারা অনুযায়ী, নির্দোষ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ আনা এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ককে জটিল করার জন্য আন্তর্জাতিক সুরক্ষা উপভোগ করে বিদেশি রাষ্ট্রের প্রতিনিধিকে হয়রানি বা আক্রমণের অভিযোগের তদন্ত করে রুশ কমিটি।
তদন্তে করিম খানের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পায় রুশ কমিটি। ফলে তারা করিম খানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির সুপারিশ করেন। যেটি আমলে নিয়ে করিম খানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে বলে জানায় রাশিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
রুশ সামরিক বাহিনী ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করার পর ইউক্রেনের অধিকৃত বিভিন্ন এলাকা থেকে শত শত শিশুকে রাশিয়া ও রাশিয়ার বাইরে বিভিন্ন দেশে পাচার করছে জানিয়ে পুতিনের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারির আবেদন করেছিলেন ব্রিটিশ আইনজীবী করিম আসাদ আহমেদ খান। তার আবেদনে বলা হয়, যেহেতু পুতিনের নির্দেশেই ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরু করেছে রুশ বাহিনী, সুতরাং এই অপরাধের দায় রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের ওপরই বর্তায়।
তার এই আবেদন আমলে নিয়ে ২০ মার্চ রুশ রাষ্ট্রপতি পুতিন ও তার অফিসে শিশুদের অধিকার কমিশনার মারিয়া আলেকসেয়েভনা লভোভা-বেলোভাকে গ্রেপ্তারের পরোয়ানা জারি করেন তোমোকো আকানে, রোজারিও সালভাতোরে আইতালা এবং সার্জিও জেরার্ডো উগালদে গোদিনেজ— আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের এই তিন বিচারকের বেঞ্চ। যাতে বেশ ক্ষুব্ধ হয় রাশিয়া।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা তখন এক টেলিগ্রাম বার্তায় বলেন, ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের সিদ্ধান্ত আমাদের দেশের জন্য আইনি দৃষ্টিকোণসহ কোনো অর্থ রাখে না। রাশিয়া আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের রোম সংবিধির পক্ষ নয় এবং এর বিধিনিষেধ মেনে চলতে বাধ্য নয়।
রাশিয়া ছাড়াও আমেরিকা ও ইসরায়েল রোম সংবিধিতে স্বাক্ষর করেনি।