কৃষ্ণসাগর শস্য উদ্যোগ ১৭ মে নবায়ন করা সত্ত্বেও, ইউক্রেন থেকে শস্য ও খাদ্যপণ্য রফতানির পরিমাণ গত আগস্ট থেকে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। এই চুক্তির অধীনে গত আগস্টে এই রফতানি শুরু হয়েছিল। এ দিকে, রাশিয়ার কর্মকর্তারা বারবার অভিযোগ করছেন যে- এই উদ্যোগ থেকে পর্যাপ্ত সুবিধা পাচ্ছে না মস্কো।
এই চুক্তি বাস্তবায়নের বিষয়টি দেখভাল করে ইস্তাম্বুল-ভিত্তিক জয়েন্ট কো-অর্ডিনেশন সেন্টার-জেসিসি। তারা শুক্রবার জানিয়েছে, পণ্য পরিবহনের জন্য নির্ধারিত তিনটি ইউক্রেনীয় বন্দরের মধ্যে এখন মাত্র দুটি সচল রয়েছে। আর, গত প্রায় এক মাসের মধ্যে, এই উদ্যোগের আওতায় পণ্য পরিবহনে নতুন কোনো জাহাজ তালিকাভূক্ত হয়নি।
এই মাসের শুরুতে, রাশিয়া এই শস্যচুক্তি থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেবে বলে হুমকি দিয়েছিল। এই চুক্তির আওতায়, গত ১০ মাসে ইউক্রেন থেকে ৩ কোটি টন শস্য ও খাদ্যদ্রব্য রফতানি করা হয়; যা বৈশ্বিক খাদ্যমূল্য হ্রাসে সহায়ক হয়।
রাশিয়া ও জাতিসঙ্ঘের মধ্যে একটি সমান্তরাল সমঝোতা-স্মারক হয়েছে। এই সমঝোতা উদ্বিগ্ন ব্যাঙ্ক, বীমাকারী, জাহাজ কোম্পানি ও অন্যান্য বেসরকারি খাতের কর্মকর্তাদের উৎকণ্ঠা অনেকাংশে হ্রাস করেছে।
চুক্তি বাতিল হয়ে যাওয়ার ঠিক আগের মুহূর্তে, ১৭ মে মস্কো এই চুক্তিকে আরো ৬০ দিনের জন্য নবায়ন করতে রাজি হয়। তবে, শুক্রবার রাশিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেরগেই ভারশিনিন আবারো বলেন যে- এই চুক্তি কাজ করছে না।
রাশিয়ার সংবাদ সংস্থা তাস জানিয়েছে, ভারশিনিন বলেছেন, শুধুমাত্র রাশিয়া-জাতিসঙ্ঘ স্মারকই যে বাস্তবায়ন হয়নি, তা নয়; বরং উভয় চুক্তির আওতায় নির্ধারিত রাশিয়ার অ্যামোনিয়া রফতানিও করা হচ্ছে না। এমনকি ইয়ুঝনি বন্দর থেকেও নয়। অথচ কৃষ্ণসাগর শস্য উদ্যোগে তা উল্লেখ করা হয়েছিল।
অ্যামোনিয়াসহ সার রফতানি এই উদ্যোগেরই অংশ। এই বিষয়ে শুক্রবার জেসিসি জানায়, এ পর্যন্ত এমন কোনো রফতানি হয়নি।
খাদ্যদ্রব্য ও সারের উপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা নেই। যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন তথাকথিত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ‘স্বস্তিপত্র’ দিয়েছে, যাতে রাশিয়ার সাথে ব্যবসা সংক্রান্ত তাদের উদ্বেগ হ্রাস পায়।
জাতিসঙ্ঘের মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিক রুশ পণ্য রফতানিতে বাধা কাটানো সংস্থার উদ্যোগ প্রসঙ্গে বলেন, আমরা ভিন্ন পথে মালপত্র পাঠানোর চেষ্টা করছি। সব কিছুর লক্ষ্য একটাই, আর তা হলো যাদের একান্ত দরকার তাদের কাছে যত বেশি সম্ভব খাদ্যদ্রব্য ও সার পৌঁছানো।
ইউক্রেনীয় রফতানি কার্যক্রম চলছে ধীর গতিতে। জেসিসির উপাত্ত বলছে, মে মাসের রফতানি তাদের মাসিক গড় ও সক্ষমতার চেয়ে অনেক কম।
সূত্র : ভয়েস অব আমেরিকা