• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:০৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম:
বাংলাদেশের উন্নয়নে পাকিস্তান প্রশংসা করে অথচ বিরোধী দল দেখে না গাজায় গণকবর থেকে প্রায় ৪০০ মরদেহ উদ্ধার দিনাজপুরে দুই ট্রাকের সংঘর্ষে দুজনের মৃত্যু রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানের মৌলিক কাঠামোকে আঘাত করে না, হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বিক্ষো হংকং, সিঙ্গাপুরের পর ইইউতে ভারতীয় ৫২৭ পণ্যে মিলেছে ক্যানসার সৃষ্টিকারী রাসায়নিক থাইল্যান্ডকে অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগে প্রস্তাব, হতে পারে বাণিজ্য চুক্তি: প্রধানমন্ত্রী বন্যা-ভূমিধস তানজানিয়ায় নিহত অন্তত ১৫৫, আহত দুই শতাধিক ভর্তুকি কমিয়ে বিদ্যুৎ-গ্যাস-সারের দাম বাড়ানোর সুপারিশ আইএমএফ’র অগ্রণী ব্যাংকের ভল্ট থেকে ১০ কোটি টাকা উধাও, গ্রেপ্তার ৩

৫০ ধরনের মাশুল বাড়তে পারে আগামী বাজেটে

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : সোমবার, ২৯ মে, ২০২৩

যেসব মাশুল (ফি) ৫ থেকে ১৫ বছর ধরে বাড়ানো হয়নি, সেগুলো বৃদ্ধির বিষয়ে এবার হাত দিচ্ছে সরকার। ফলে নতুন অর্থবছরে জমির নামজারি মাশুল; হাটবাজারের ইজারামূল্য, চিড়িয়াখানার প্রবেশমূল্য; রেশনে দেওয়া চাল, ডাল, ঘি, পোশাকসহ ৫০ ধরনের পণ্যের দাম বাড়তে পারে। এর মধ্যে কোনো মাশুল আগামী ১ জুলাই থেকে, কোনোটি আবার বাজেটের পরে জারি হওয়া প্রজ্ঞাপনের শর্ত অনুযায়ী হবে।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের বাজেট বক্তব্যে সরাসরি মাশুল বৃদ্ধির কথা উল্লেখ থাকবে না। মন্ত্রণালয় ও অধীন দপ্তরগুলো নিজেদের মতো করে প্রজ্ঞাপন জারি করে এসব মাশুল বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেবে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। অর্থমন্ত্রী ১ জুন জাতীয় সংসদে বাজেট উপস্থাপন করবেন।

সরকারের অর্থ আহরণের নতুন উদ্যোগটিকে স্বাগত জানিয়ে সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান বলেন, বর্তমানে বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে হারে এনটিআর আদায় করা হয়, তা হালনাগাদ করা উচিত। ফি বা মাশুল দেওয়ার সময় সাধারণ মানুষকে যে ভোগান্তিতে পড়তে হয়, সেটাও দূর করতে হবে।

রাজস্ব সংগ্রহের জন্য এনটিআর একটা বিরাট উৎস। যেহেতু মাথাপিছু আয় বেড়েছে, সেহেতু শুধু স্ট্যাম্প শুল্ক নয়, হাটবাজার ও রাস্তাঘাটের টোলসহ বিভিন্ন বিষয়ে মাশুল বৃদ্ধির মাধ্যমে এ খাত থেকে রাজস্ব আয় বৃদ্ধির সুযোগ আছে।
মাহবুব আহমেদ, সাবেক অর্থসচিব।
আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরে পাঁচ লাখ কোটি টাকার রাজস্ব সংগ্রহের পরিকল্পনা করছে সরকার। এর মধ্যে আয়কর, মূল্য সংযোজন কর (মূসক বা ভ্যাট) ও শুল্ক—এ তিন খাত থেকেই জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) সংগ্রহ করতে হবে ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। বাকি ৭০ হাজার কোটি টাকার মধ্যে ৫০ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করা হবে কর ছাড়া প্রাপ্তি বা নন-ট্যাক্স রেভিনিউ (এনটিআর) বাবদ। আর ২০ হাজার কোটি টাকা এনবিআরবহির্ভূত কর ও অনুদান থেকে পাওয়া যাবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে।

সূত্রগুলো জানায়, চলতি ২০২২–২৩ অর্থবছরের মূল বাজেটে সরকার এনটিআর থেকে ৪৫ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে। সংশোধিত বাজেটে তা কমিয়ে করা হয় ৪০ হাজার কোটি টাকা। আগামী অর্থবছরের মূল বাজেটে তা ৫০ হাজার কোটি টাকা ধরা হলেও শেষ পর্যন্ত তা কমিয়ে চলতি অর্থবছরের সমান, অর্থাৎ ৪৫ হাজার কোটি টাকাও রাখা হতে পারে।

বাজেট মাথায় রেখে অর্থ বিভাগের পক্ষ থেকে কয়েক মাস আগেই সরকারের বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউট (বিএসটিআই), বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন (বিএসএফআইসি), প্রধান আমদানি-রপ্তানি নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়, নৌপরিবহন অধিদপ্তর, পরিবেশ অধিদপ্তর, যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তরসহ (আরজেএসসি) বিভিন্ন অধিদপ্তর ও পরিদপ্তরকে মাশুল বৃদ্ধির প্রস্তুতি নিতে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আগে চিঠি দেওয়ার কারণ হচ্ছে মাশুল বাড়াতে অধিদপ্তর ও পরিদপ্তরগুলোকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিতে হয়।

এ ছাড়া অর্থ বিভাগ ভূমি মন্ত্রণালয়, প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, রেলপথ মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন মাশুলের সঙ্গে সম্পর্কিত মন্ত্রণালয়গুলোকেও একই বিষয়ে চিঠি দিয়েছে। মন্ত্রণালয় এবং অধিদপ্তর-পরিদপ্তরগুলো বাজেট আসার আগেই কিছু কিছু মাশুল বাড়িয়েছে, আর কিছু বৃদ্ধির প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

অর্থ বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, পয়সার তো এখন চল নেই। অবস্থাটা এমন যে কোথাও কোথাও পয়সা পর্যন্ত লেখা আছে। আইএমএফের দিক থেকে রাজস্ব বৃদ্ধির চাপ আছে। আইএমএফের চাপ ছাড়াও নিজেদের প্রয়োজনেই অর্থ সংগ্রহ করা দরকার। কেউ কেউ এখন রেশনে ঘি পান ৩৫০ টাকা কেজি দরে। এটা বাড়িয়ে ৯০০ টাকা করা হচ্ছে। যদিও ঘিয়ের বাজারদর এখন ১ হাজার ২০০ টাকার বেশি।

গত ২০২০-২১ অর্থবছরে কর ছাড়া প্রাপ্তি বা নন-ট্যাক্স রেভিনিউ (এনটিআর) থেকে সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৩৩ হাজার কোটি টাকা। অথচ ওই অর্থবছরে আদায় হয়েছে ৫৮ হাজার ৮৬২ কোটি টাকা। এর কারণ জানতে চাইলে অর্থ বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, কিছু সংস্থা তাদের আয় এখতিয়ারবহির্ভূত হিসেবে দীর্ঘদিন বিভিন্ন ব্যাংকে স্থায়ী আমানত (এফডিআর) হিসেবে রেখে দিয়েছিল। সেগুলো অর্থ বিভাগের চাপে তারা ফেরত দিয়েছে। তাই ওই অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি আদায় হয়েছে।

জানা গেছে, এনটিআর নিয়ে অর্থ বিভাগ কয়েক বছর ধরেই কাজ করছে। তাতে কিছুটা শৃঙ্খলার মধ্যে এলেও এখনো অনেক কাজ বাকি। আগামী অর্থবছরের মধ্যে এটাকে পুরোপুরি শৃঙ্খলার মধ্যে নিয়ে আসাই হচ্ছে অর্থ বিভাগের লক্ষ্য।

অর্থ বিভাগের সূত্রগুলো জানায়, আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রেশনের আওতাভুক্ত বিভিন্ন পণ্যের দাম বৃদ্ধির পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। এ জন্য প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও এর অধীন সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী এবং আন্তঃবাহিনী দপ্তর থেকে এনটিআর বৃদ্ধির বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব জানতে পেরেছে অর্থ বিভাগ।

জানতে চাইলে সাবেক অর্থসচিব মাহবুব আহমেদ বলেন, ‘রাজস্ব সংগ্রহের জন্য এনটিআর একটা বিরাট উৎস। যেহেতু মাথাপিছু আয় বেড়েছে, সেহেতু শুধু স্ট্যাম্প শুল্ক নয়; হাটবাজার, রাস্তাঘাটের টোলসহ বিভিন্ন বিষয়ে মাশুল বৃদ্ধির মাধ্যমে এ খাত থেকে রাজস্ব আয় বৃদ্ধির সুযোগ আছে।’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ