সেনার সাথে সংঘর্ষে ভারতের মণিপুরে ৪০ জন উগ্রবাদী নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী। আজ মণিপুরে যাচ্ছেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
মাঝে কিছুদিন শান্ত থাকার পর নতুন করে সংঘর্ষ শুরু হয়েছে মণিপুরে। রোববার মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং জানিয়েছেন, অন্তত ৪০ জন সন্ত্রাসবাদীর মৃত্যু হয়েছে। সেনার সাথে সংঘর্ষ হয়েছে তাদের।
বীরেনের দাবি, নতুন করে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে আর সংঘর্ষ হয়নি। অর্থাৎ, মেইতেই এবং কুকি জনজাতির মধ্যে লড়াই হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে অভিযান চালিয়েছিল সেনা এবং আধা সামরিক বাহিনীর সদস্যরা। তাদের সাথে কুকি জনজাতির বিচ্ছিন্নতাবাদীদের লড়াই হয়। বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সাথে একে ৪৭, একে ৫৬ -এর মতো আধুনিক অস্ত্র ছিল বলে অভিযোগ। এই লড়াইয়েই অন্তত ৪০ জন কুকি সন্ত্রাসবাদীর মৃত্যু হয়েছে। বেশ কিছু সন্ত্রাসীকে আটক করা হয়েছে বলেও তিনি জানিয়েছেন। তবে নির্দিষ্ট কোনো সংখ্যা বলেননি। তাদের কাছ থেকে প্রচুর অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
এদিকে, মুখ্যমন্ত্রী গোষ্ঠী সংঘর্ষের কথা অস্বীকার করলেও শনিবার রাতে এবং রোববার রাজধানী ইম্ফলসহ একাধিক এলাকায় গুলি চলেছে বলে জানা গেছে। রোববার ইম্ফলের কাছে দুই ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন বলে স্থানীয় সংবাদপত্রের খবরে বলা হয়েছে। এতে ১২ জন আহত হয়েছেন।
এই পরিস্থিতিতে সোমবারই ইম্ফল যাচ্ছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। জনজাতিগুলোর মধ্যে কিভাবে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা যায়, সেই লক্ষেই তার যাত্রা বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় সূত্রে জানানো হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী এবং সেনা কর্মকর্তাদের সাথে শাহের বৈঠক হওয়ার কথা। তিনি তিন দিন মণিপুরে থাকবেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই মণিপুর অগ্নিগর্ভ। সংখ্যাগুরু মেইতেই গোষ্ঠীর সাথে সেখানে বিরোধ শুরু হয় জনজাতি গোষ্ঠী কুকিদের। মেইতেইরা রাজ্যে জনজাতির সংরক্ষণ চায়। কুকিরা তার বিরোধিতা করছে। মেইতেইদের স্বপক্ষে সম্প্রতি মণিপুর হাইকোর্ট একটি রায় দেয়। এরপর মেইতেইরা একটি মিছিলের আয়োজন করে। ওই মিছিল ঘিরেই প্রথম উত্তেজনা শুরু হয়।
সরকারি হিসেবে ওই সংঘর্ষে ৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে। অসরকারি সূত্রের দাবি, মৃতের সংখ্যা ৭১। অন্তত ৩৫ হাজার মানুষ পাশের রাজ্যগুলোতে আশ্রয় নিয়েছেন। গত সপ্তাহে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, শরণার্থীদের ফেরানোর ব্যবস্থা শুরু হয়েছে। কিন্তু শনিবার রাত থেকে নতুন করে পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় সেই প্রক্রিয়া ব্যাহত হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।