• বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৩৪ অপরাহ্ন

২০ বছর পর বোনের সাথে সাক্ষাত করলেন আফিয়া সিদ্দিকি

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : বুধবার, ৩১ মে, ২০২৩

যুক্তরাষ্ট্রের কারাগারে প্রায় এক যুগ থাকা পাকিস্তানি নিউরোসায়েন্টিস্ট ড. আফিয়া সিদ্দিকি ২০ বছর পর প্রথমবারের মতো তার বড় বোন ড. ফৌজিয়া সিদ্দিকির সাথে সাক্ষাত করতে পেরেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের কার্সওয়েলে অবস্থিতি ফেডারেল মেডিক্যাল সেন্টারে তাদের এই সাক্ষাত হয় বলে জামায়াতে ইসলামির সিনেটর মুশতাক আহমদ খান বুধবার জানান।

জামায়াত সিনেটর টুইটারে খবরটি প্রকাশ করে জানান, আগামীকাল বৃহস্পতিবার ড. আফিয়ার সাথে তার আরেকটি সাক্ষাতের কথা রয়েছে।

ওই সাক্ষাতে প্রখ্যাত মানবাধিকার অ্যাক্টিভিস্ট ক্লাইভ স্ট্যাফোর্ড-স্মিথ সাথে থাকবেন। এই অ্যাক্টিভিস্ট কুখ্যাত গুয়ানতানামো বে কারাগার থেকে আবদুল রাব্বানি ও আহমদ রাব্বানিকে মুক্ত করতে সহায়তা করেছিলেন।

মুশতাক খান বলেন, ‘আগামীকাল আমি ড. ফৌজিয়া ও ক্লাইভ স্ট্যাফোর্ড-স্মিথের সাথে ড. আফিয়ার সাথে কারাগারে সাক্ষাত করব।’

তিনি বলেন, এর মাধ্যমে তার সাথে সাক্ষাতের দরজা খুলল। তিনি ড. আফিয়ার মুক্তির জন্য সোচ্চার হতে জনসাধারণের প্রতি আহ্বান জানান।

সিনেটর মুশতাক বলেন, বুধবার আড়াই ঘণ্টার সাক্ষাতের সময় ড. আফিয়া যে ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গেনে এবং তার ওপর যে নির্যাতন চালানো হয়েছে, তার বর্ণনা দেন।

তিনি বলেন, ‘এই সাক্ষাত হয় ২০ বছর পর। আর চলে আড়াই ঘণ্টা ধরে। ড. ফৌজিয়াকে তার বোনকে জড়িয়ে ধরা বা হ্যান্ডশেক করতে দেয়া হয়নি। তাকে তার সন্তানদের ছবি ড. আফিয়াকে দেখানোর অনুমতি দেয়। সাক্ষাতটি হয় কারাগারের একটি কক্ষে পুরো কাচের ভেতরে। আফিয়া সাদা স্কার্ফ এবং খাকি কারা পোশাক পরে ছিলেন।’

তিনি আরো বলেন, আড়াই ঘণ্টার সাক্ষাতের প্রথম ঘণ্টায় ড. আফিয়া প্রতিদিন যেসব নির্যাতনের শিকার হতেন, তার বর্ণনা দেন। ড. আফিয়া বলেন, তার মা এবং শিশুদের কথা প্রতিদিন তার মনে পড়ত। (তিনি তার মায়ের মৃত্যুর খবর জানতেন না।) কারাগারে হামলার স ময় তার সামনে দাঁতগুলো তুলে ফেলা হয়েছে বা পড়ে গেছে। মাথায় আঘাতে কারণে শুনতেও তার সমস্যা হচ্ছে।

কে এই আফিয়া সিদ্দিকি?
যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষিত পাকিস্তানি বিজ্ঞান ড. আফিয়া সিদ্দিকিকে ২০১০ সালে নিউ ইয়র্কের একটি ফেডারেল আদালত ৮৬ বছরের কারাদণ্ড দেয়। তার বিরুদ্ধে আফগানিস্তানের গজনিতে মার্কিন কর্তৃপক্ষের সাথে সাক্ষাতের সময় তিনি হত্যার চেষ্টা চালিয়েছিলেন। আফিয়া ওই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।

যুক্তরাষ্ট্র আল-কায়েদার সাথে সম্পৃক্ত সন্দেহভাজন হিসেবে প্রথম নারী হিসেবে তাকে গ্রেফতার করেছিল। তবে এই অভিযোগে তার শাস্তি হয়নি।

১৮ বছর বয়স্কা সিদ্দিকি বস্টনের মর্যাদাপূর্ণ এমআইটিতে পড়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে যান। সেখানে তার ভাই বাস করতেন। তিনি ব্রানডিস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিউরোসায়েন্সে পিএইচডি করেন।

তবে ২০০১ সালের ৯/১১-এ সন্ত্রাসী হামলার পর তিনি এফবিআইয়ের নজরে আসেন। তিনি ১০ হাজার ডলার মূল্যের নাইট ভিশন চশমা এবং যুদ্ধের বই কিনেছেন বলে অভিযোগ করা হয়।

যুক্তরাষ্ট্র সন্দেহ করে যে তিনি আমেরিকা থেকে আল-কায়েদায় যো দিয়েছিলেন। এরপর ৯/১১ হামলার অন্যতম হোতা খালিদ শেখ মোহম্মদক বিয়ে করে তিনি পাকিস্তানে ফেরেন।

তিনি ২০০৩ সালে করাচি থেকে তার তিন সন্তানসহ নিখোঁজ হয়ে যান। পাঁচ বছর পর প্রতিবেশী আফগানিস্তানে সন্ধান মেলে। গজনিতে স্থানীয় বাহিনী তাকে আটক করে বলে খবর প্রচার করা হয়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ