• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৭:৪৮ পূর্বাহ্ন

মালয়েশিয়ায় ৫ লাখ কর্মীর কর্মসংস্থান নিশ্চিতে দূতাবাসের সত্যায়ন স্বচ্ছতা জোরদার

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : বৃহস্পতিবার, ১ জুন, ২০২৩

মালয়েশিয়ায় কলিং ভিসার মাধ্যমে প্রায় ৫ লাখ বাংলাদেশী শ্রমিকের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা ২০০৭ -এর পর ২০২৩ -এ সর্বোচ্চ রেকর্ড সংখ্যা।

ইতোমধ্যে ৪ লাখ ২৭ হাজার ৭৫৯ জন কর্মী নিয়োগের অনুমোদন দিয়েছে মালয়েশিয়ার সরকার। এর মধ্যে ২ লাখ কর্মী মালয়েশিয়ায় পৌঁছেছে। বাকিগুলোর যাবতীয় প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করার মন্ত্রনালয় থেকে নির্দেশনা এসেছে। কেউ কেউ অভিযোগ করছেন দূতাবাস কর্তৃক সত্যায়নে সময় লাগছে।

দূতাবাস কতৃপক্ষ বলছে, ইতোমধ্যে কিছু কিছু কোম্পানির বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেছে তারা শ্রমিকদের মাসের পর মাস কাজ না দিতে পেরে বসিয়ে রাখছে। এসব অভিযোগ পাওয়ার সাথে সাথে দূতাবাস কোম্পানির সাথে কথা বলে তাদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করছে।

তাই সংগত কারণেই কর্মীরা মালয়েশিয়ায় এসে যেন কাজ না পেয়ে যাতে করে বসে না থাকতে হয় সেজন্য ওই কোম্পানিগুলো সরেজমিনে যাচাই বাছাই করে দেখা হচ্ছে তাদের সক্ষমতা কতটুকু। তারা শ্রমিকদের কাজ, বেতন-ভাতাদি, আবাসনসহ অন্যন্যা সুযোগ সুবিধা সঠিক সময়ে নিশ্চিত করার সামথ্য আছে কি না তা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এসব তথ্য-উপাত্ত যাচাই করে বাংলাদেশ দূতাবাস স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে কলিং ভিসার সত্যায়ন করা হচ্ছে।

দূতাবাসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, সত্যায়নে স্বচ্ছতার জন্য যেমন দরকার প্রয়োজনীয় সময় তেমনই দরকার দক্ষ লোকবল। হাইকমিশনের শ্রম বিভাগ এসব সত্যায়নের দায়িত্বে ন্যাস্ত। তারা ছুটির দিনসহ দিন-রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে লাখ লাখ সত্যায়নের আবেদনগুলো সম্পন্ন করছেন। তাই স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।

মাঝখানে মালয়েশিয়ার সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, দেশটির মানবসম্পদ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চূড়ান্ত অনুমোদনের পর বাংলাদেশ দূতাবাস কর্তৃক সত্যায়নের প্রয়োজনীয়তা নেই। কিন্তু শ্রমবাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, কলিং ভিসায় দূতাবাসের নজরদারি অব্যাহত না রাখলে প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশী শ্রমিকরা প্রতারিত কিংবা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। তাই স্বচ্ছতার ভিত্তিতে জনশক্তি নিয়োগ করা হলে নিয়োগকর্তাদের জবাবদিহিতার মধ্যে আনা যায়।

দূতাবাসের সত্যায়নে মূল কয়েকটি বিষয়ে আলোকপাত করে নিশ্চিত হতে হয় যে- উল্লেখিত কোম্পানি বাস্তবে এর কোনো অস্তিত্ব আছে কিনা। শ্রমিকদের বছরের পর কাজ দেয়ার মতো কাজ আছে কি না। তাদের বেতন-ভাতাদি সময়মতো পরিশোধ করার জন্য মালিকের ব্যাংক এ্যাকাউন্টে পর্যাপ্ত পরিমাণ অর্থ জমা আছে কি না। যেমন ৫০ জন শ্রমিকের জন্য কমপক্ষে ২ লাখ রিংগিত (মালয়েশিয়ার টাকা), ১০০ জন শ্রমিকের জন্য ব্যাংকে ৪ লাখ রিংগিত জমা থাকতে হবে। তাছাড়া শ্রমিকরা কাজ শেষে নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশে আবাসন ব্যাবস্থা মালিকের করতে হবে। নির্মাণ শ্রমিক হলে সরকার ঘোষিত সিআইডিবি কার্ড প্রত্যেকের জন্য বাধ্যতামূলক। তাছাড়া প্রত্যেক শ্রমিকের জন্য (সকসো) জীবন বীমা ও স্বাস্থ্য বীমা নিশ্চিত করতে হবে। এসব তথ্যগুলো প্রমাণ করতে যথোপযুক্ত ডকুমেন্ট থাকতে হবে। এর কোনোটা কম হলে দূতাবাস থেকে বলা হয় এগুলো পূরণ করার জন্য নতুবা দূতাবাস সত্যায়ন করে না।

মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত গোলাম সারোয়ার বলেন, কিছু কিছু কর্মী মালয়েশিয়ায় এসে কাজ না পাওয়ার ঘটনা হাই কমিশনের নজরে এসেছে। এ ক্ষেত্রে মালয়েশিয়ার মানব সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ডিমান্ড অনুমোদন প্রক্রিয়ার দুর্বলতা ও কিছু কিছু এজেন্সির গাফিলতি পরিলক্ষিত হয়েছে। তবে মালয়েশিয়ায় এসে কাজ না পাওয়া ভাগ্যবিড়ম্বিত কর্মীর সংখ্যা মোট আগত কর্মীর তুলনায় খুবই নগন্য এবং এটি এখন পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণযোগ্য সীমার মধ্যে রয়েছে। এই সকল বাংলাদেশী কর্মীদের সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্ট নিয়োগকর্তা, মালয়েশিয়া সরকারি দফতর এবং নিয়োগকারী এজেন্ট -এর সাথে বাংলাদেশ হাই কমিশন নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে যাতে করে বৈধভাবে আগত একজন বাংলাদেশী কর্মীও মালয়েশিয়াতে বিড়ম্বনার শিকার না হয়। তবে এক্ষেত্রে মালয়েশিয়ার ডিমান্ড অনুমোদনকারি কর্তৃপক্ষ ও উভয় দেশের সংশ্লিস্ট এজেন্সিগুলোকে আরো দায়িত্বশীল হবার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।

Share Button


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ

You cannot copy content of this page

You cannot copy content of this page