পরিবেশ দূষণরোধের পাশাপাশি ক্যানসার সচেতনতায় সামাজিকভাবে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ বাড়াতে রাষ্ট্রকেও এগিয়ে আসতে বলেন তিনি।
বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান অডিটোরিয়ামে ক্যানসার সার্ভাইবার দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ক্যানসার কেয়ার কমিউনিটি বাংলাদেশ।
স্ত্রী নাজমা চৌধুরীর ক্যানসার আক্রান্তের স্মৃতিচারণ করে সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, সমাজের ব্যাধিটা এমন যে- চিকিৎসা হবে কি-হবে না, রোগী বাড়বে কি-বাড়বে না তার যথেষ্ট কেয়ার নেই। কিন্তু কেয়ারটা আমাদের করতে হবে। আমাদের সংঘবদ্ধ কমিউনিটি প্রয়োজন। শুধু পরিবার বা ব্যক্তিগতভাবে নয়, যত্ন হতে হবে সামাজিকভাবে। সেজন্য রাষ্ট্রীয় উদ্যোগও প্রয়োজন। রাষ্ট্র এগিয়ে এলে সমাজও এগিয়ে আসবে। তাই আশা করব, রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ বাড়বে এবং সামাজিক সমন্বিত বিষয়গুলো আরও বেশি হবে।
তিনি বলেন, আমরা এমন একটি সমাজে বাস করি, যেখানে উন্নয়ন হচ্ছে। তবে যত উন্নয়ন হচ্ছে, ততো মানুষ মানুষের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে। আজ মানুষের সভ্যতা বিপন্ন হতে চলেছে। অধিকাংশ বিষয়ই আজ ব্যক্তি-মালিকানার। মানুষের রোগগুলোও ব্যক্তিগত হয়ে যাচ্ছে। এগুলোর বিরুদ্ধেও আমাদের সচেতন হতে হবে।
সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, জাহানারা ইমাম একবার নাজমাকে দেখতে এসেছিলেন। কিন্তু তিনি দেখতে পারেননি। শুধু একটা ছোট্ট কাগজে লিখে গিয়েছিল। সেখানে লেখা ছিল- ‘ভয় পেও না, বেঁচে আছি’। তার মানে হলো, তিনিও ক্যানসার আক্রান্ত ছিলেন। নাজমাকে ভয় না পাওয়ার জন্যই সাহস দিয়েছেন। এই নামে পরবর্তীতে আমি একটা বইও লিখেছি।
তিনি আরও বলেন, এই সাহসটা একা আসবে না, সবাইকে মিলে, পরিবার ও সমাজের সবাইকে দিতে হবে। আর জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা, শব্দ-পানি-বায়ু দূষণরোধেও আমাদের ভূমিকা রাখতে হবে। কেননা এগুলোও ক্যানসার প্রতিরোধের অন্যতম মাধ্যম।
অনুষ্ঠানে ক্যানসার নিয়ে সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন, এমন ১০ সার্ভাইবারকে সম্মাননা জানানো হয়। সম্মাননাপ্রাপ্তদের মধ্যে ব্যবসায়ী, চিকিৎসকসহ নানা পেশার সার্ভাইবার রয়েছেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- ক্যানসার বিশেষজ্ঞ ডা. হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন, বিশিষ্ট জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. আবু জামিল ফয়সাল ও শিল্পী সায়নসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।