চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের কাছে চিঠি পাঠিয়ে জবাব পেলো এক বাংলাদেশি শিশু। আলিফা চিন নামের ওই শিশুকে ব্যক্তিগতভাবে নানা উপদেশ দিয়েছেন চীনা প্রেসিডেন্ট। আলিফারা থাকেন চট্টগ্রামের বন্দরটিলা এলাকায়। গত এপ্রিল মাসে চীনের প্রেসিডেন্টের উদ্দেশ্যে চিঠি লেখে ১২ বছরের আলিফা। এর এক মাস পর সেই চিঠির জবাব দিলেন শি জিনপিং।
চীনা সংবাদ মাধ্যম শিনহুয়াতে বিষয়টি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। এতে বলা হয়, চিঠিতে আলিফা চীনের মেডিকেল কলেজে পড়ার ইচ্ছা ব্যক্ত করেছিল। এর জবাবে আলিফাকে স্বপ্নপূরণ করার পথে এগিয়ে যাওয়ার জন্য উৎসাহিত করেছেন শি জিনপিং। একইসঙ্গে বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের যে দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বের সম্পর্ক তারও উল্লেখ করেন শি জিনপিং।
শি জিনপিং তার চিঠিতে লিখেছেন, আলিফার স্বপ্ন বাংলাদেশ এবং চীনের মধ্যকার ঐতিহ্যবাহী সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে। আলিফা চিনের চিঠি দুই দেশের মধ্যকার বন্ধুত্বের একটি ভাল উদাহরণ। প্রাচীন কাল থেকেই চীনা ও বাংলাদেশিরা ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী এবং ভালো বন্ধু, যাদের বন্ধুত্বপূর্ণ আদান-প্রদান হাজার বছরেরও বেশি পুরনো।
শি জিনপিং আরও বলেন, ৬০০ বছরেরও বেশি সময় আগে চীনের মিং সাম্রাজ্যের আমলে ঝেং হে নামে চীনা নাবিক দুইবার বাংলাদেশে গিয়েছিলেন। যা দুই দেশের মানুষের মধ্যকার সম্পর্কের গভীরতাকেই নির্দেশ করে।
উল্লেখ্য যে, আলিফা চিন ২০১০ সালে বাংলাদেশ ভ্রমণরত চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) নৌবাহিনীর ভাসমান হাসপাতাল ‘দ্য পিস আর্ক’-এর চীনা চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে জন্মগ্রহণ করেন। সে সময় আলিফার মা গর্ভজনিত জটিলতার মধ্যদিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু স্থানীয় হাসপাতালে আধুনিক প্রযুক্তি না থাকায় তার চিকিৎসা সম্ভব হচ্ছিল না। পরে সে সময় পিস আর্ক চট্টগ্রামে হাজির হলে সেখানেই আলিফার জন্ম হয়। কৃতজ্ঞতা হিসেবে আলিফার বাবা তার সন্তানের নামের শেষ অংশে চিন জুড়ে দেন।
শি জিনপিং তার চিঠিতে এ বিষয়টিও তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, আলিফার এই জন্মও চীন- বাংলাদেশের বন্ধুত্বের একটি অত্যন্ত মর্মস্পর্শী গল্প। শি জিনপিং তার চিঠিতে উল্লেখ করেন যে, আলিফা বড় হয়ে বাংলাদেশ-চীনের বন্ধুত্বের বার্তাবাহক হওয়া এবং চীনের মেডিকেল কলেজে পড়াশোনার ইচ্ছা পোষণ করায় তিনি খুবই আনন্দিত। শি আশা প্রকাশ করেন যে, আলিফা তার তারুণ্যের সর্বোচ্চ ব্যবহার করবে এবং কঠোর পড়াশোনার মাধ্যমে তার পরিবার, সমাজ এবং দেশের মানুষের সেবা করতে সক্ষম হবে।