সউদী ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান ব্যক্তিগতভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ‘বড় অর্থনৈতিক পরিণতির’ হুমকি দিয়েছিলেন যদি বাইডেন প্রশাসন তেল উৎপাদন কমানোর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেয়। সম্প্রতি মার্কিন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত একটি নতুন প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
ওয়াশিংটন পোস্ট দ্বারা প্রাপ্ত একটি গোপনীয় নথি অনুসারে, জ্বালানির চড়া দামের সময় তেল উৎপাদন কমানোর বিষয়ে সউদীর সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে মার্কির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সউদী আরবের জন্য অনির্দিষ্ট ‘পরিণাম’ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়ার পরে ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান এ হুমকি দিয়েছেন। তিনি ব্যক্তিগতভাবে জানিয়েছেন যে, ‘তিনি মার্কিন প্রশাসনের সাথে আর লেনদেন করবেন না’ এবং ‘ওয়াশিংটনের জন্য প্রধান অর্থনৈতিক পরিণতির’ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
ডিসেম্বরের ফাঁস হওয়া দ্বিতীয় নথিতে সতর্ক করা হয়েছে যে, সউদী বেইজিং থেকে ড্রোন, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, ক্রুজ মিসাইল এবং গণ নজরদারি ব্যবস্থা সংগ্রহ করে চীনের সাথে তার ‘লেনদেন সম্পর্ক’ প্রসারিত করার পরিকল্পনা করছে। জুলাই থেকে শুরু করে প্রতিদিন আরও ১০ লাখ ব্যারেল তেল উৎপাদন কমানোর সউদী আরবের সাম্প্রতিক প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও বাইডেন এখনও এ বিষয়ে কোন পদক্ষেপ নিতে পারেননি।
ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, এয়ার ন্যাশনাল গার্ডসম্যান জ্যাক টেক্সেইরার ফাঁস হওয়া পেন্টাগনের তথ্যের অংশ হিসেবে গোপনীয় নথিগুলো প্রকাশ করা হয়েছে। ক্রাউন প্রিন্স সরাসরি মার্কিন কর্মকর্তাদের এ হুমকি দিয়েছেন নাকি ইলেকট্রনিক গুপ্তচরবৃত্তির মাধ্যমে তা পাওয়া গেছে তা স্পষ্ট নয়। ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের একজন মুখপাত্র সংবাদপত্রকে বলেছেন, ‘আমরা সউদী আরবের এ ধরনের হুমকির বিষয়ে অবগত নই।’
বাইডেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা সউদী কর্মকর্তাদের কাছে বারবার অনুরোধ করেছেন অপরিশোধিত তেলের উৎপাদন বাড়াতে কারণ জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ায় মুদ্রাস্ফীতির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। বাইডেনের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা, জ্যাক সুলিভান, মোহাম্মদের সাথে দেখা করতে যাওয়ার কয়েক সপ্তাহ পর পররাষ্ট্র সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন মঙ্গলবার দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করতে ক্রাউন প্রিন্সের সাথে দেখা করেছিলেন। ব্লিঙ্কেনের সফরটি বেশিরভাগই মানবাধিকার এবং মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে, সউদীর তেল সরবরাহ আরও কমানোর সিদ্ধান্তের প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিক্রিয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। সূত্র: নিউইয়র্ক পোস্ট।