মালিতে নিযুক্ত শান্তিরক্ষী মিশন। ছবি: সংগৃহীত
জাতিসংঘকে কোনো দেরি না করে শান্তিরক্ষী মিশন সরিয়ে নিতে বলেছে মালির সামরিক শাসক গোষ্ঠী। তারা দাবি করছে, এই বাহিনী দেশটির নিরাপত্তা ইস্যুগুলো মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়েছে।
জানা গেছে, পশ্চিম আফ্রিকার এই দেশটিতে শান্তিরক্ষী মিশনে ১৩ হাজার বিদেশি সৈন্য অবস্থান করছে। এর মধ্যে বাংলাদেশি সৈন্যের সংখ্যা প্রায় দেড় হাজার।
শুক্রবার (১৬ জুন) জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলের এক মিটিংয়ে শান্তিরক্ষী বাহিনীকে সরিয়ে নেয়ার তাগাদা দেন মালির অন্ত বর্তীকালীন সামরিক শাসক গোষ্ঠীর পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুলায়ে দিওপ।
এ অবস্থায় মালিতে জাতিসংঘের শান্তি মিশনের প্রধান এল ঘাসিম ওয়ানে বলেছেন, আয়োজক দেশের সম্মতি ছাড়া জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা ‘প্রায় অসম্ভব’। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘এটি এমন এক সিদ্ধান্ত যা জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলকে এখনই নিতে হবে।’
মালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী দাবি করেছেন-শান্তিরক্ষী মিশন প্রায় এক দশক ধরে কাজ করলেও দেশটির সহিংস পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকেই গেছে। এর ফলে এই বাহিনীর প্রতি মালির সাধারণ মানুষের আস্থার সংকট দেখা দিয়েছে এবং শান্তিরক্ষী বাহিনীকে বিদায় করার জন্য তারা বিক্ষোভও করেছে।
জানা গেছে, মালিতে মোতায়েন করা শান্তিরক্ষী বাহিনীর কাজের ওপর দেশটির সামরিক শাসকেরা একের পর এক বিধিনিষেধ আরোপ করছে এবং তাদের ঔপনিবেশিক শক্তি ফ্রান্সের সঙ্গে দীর্ঘদিনের জোট ভেঙে দিয়েছে।
শান্তিরক্ষী বাহিনী বিদায় করার পর মালিতে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য জাতিসংঘের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার প্রস্তাব রেখেছে দেশটির সেনাবাহিনী।
২০১৩ সালে মালিতে শান্তিরক্ষী মিশন শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত এ বাহিনীর ৩০০ জনের বেশি সৈন্য নিহত হয়েছে। এই পরিসংখ্যানটি মালির শান্তি মিশনকে বিশ্বের সবচেয়ে মারাত্মক মিশনে পরিণত করেছে।
মালির রাজনৈতিক সংঘাত নিরসনে এক দশক ধরে চলা শান্তি মিশন দেশটির ইসলামি গোষ্ঠীগুলোর সহিংসতার বিস্তার ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে। এ অবস্থায় সংকট নিরসনে দেশটির সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা করছে রাশিয়ার ‘ওয়াগনার গ্রুপ’র ভাড়াটে যোদ্ধারা।
এদিকে মালিতে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনের কার্যক্রম শেষ হওয়ার কথা আগামী ২৯ জুন। তবে এই মিশনের মেয়াদ বাড়ানোর সুপারিশ করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতেরেস।