ঘরমুখো মানুষের ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে এবং যাত্রীদের ভোগান্তি নিরসনের লক্ষে মোটরসাইকেল টিমসহ ড্রোনের মাধ্যমে মহাসড়ক নিয়ন্ত্রণ করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ পুলিশ প্রধান চৌধুরী আব্দুল্লাহ্ আল-মামুন।
শনিবার (২৪ জুন) দুপুরে আশুলিয়ার নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের বাইপাইল ত্রি-মোড় এলাকায় ঈদযাত্রা উপলক্ষে সড়কে যান চলাচল ও আইনশৃঙ্খলা পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
পুলিশ প্রধান বলেন, গতবার আমরা বলেছিলাম আমাদের সর্বোচ্চটুকু দিয়ে চেষ্টা করবো যেন সাধারণ মানুষ ঈদে ভোগান্তি ছাড়াই বাড়িতে যেতে পারেন। দেশের মানুষ বলেছে আমাদের প্রচেষ্টা সফল হয়েছে। সেই লক্ষে আমাদের সদস্যরা কাজ করেছেন। এবারও আমরা চেষ্টা করবো দেশের মানুষ যাতে নির্বঘ্নে বাড়ি যেতে পারে। সেজন্য, সেই লক্ষ্যে আমাদের পুলিশে সকল ইউনিট যার যার অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালন করছেন।
তিনি আরও বলেন, টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা থেকে যমুনা সেতু পর্যন্ত দুই লেনের সড়ক রয়েছে। সেখানে আমরা যানবাহনের চাপ কমাতে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা পরিবহনগুলো দুই লেন দিয়েই যাওয়ার ব্যবস্থা করবো। আর ঢাকামুখী পরিবহগুলোকে ভূয়াপুর দিয়ে বিকল্প সড়ক ব্যবহার করে এলেঙ্গা দিয়ে বের করে দেওয়া হবে।
চৌধুরী আব্দুল্লাহ্ আল-মামুন বলেন, গতবার আমাদের চ্যালেঞ্জ ছিল একটি এবার আমাদের চ্যালেঞ্জ রয়েছে তিনটি। গতবার আমাদের একটি চ্যালেঞ্জ ছিল সুরক্ষিতভাবে যাত্রীদের বাড়িতে পাঠানো ও ফেরত আনা। এবারের তিনটি চ্যালেঞ্জ হলো পশু হাটের নিরাপত্তা ও পশুবাহী ট্রাকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। এছাড়া এইসময় যে মৌসুমী ফলবাহী পরিবহনের যাতে কোনো সমস্যা না হয় তা নিশ্চিত করা। আমরা সব ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি। ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা আমরা নিশ্চিত করেছি।
তিনি বলেন, আমরা দেশের সকল মানুষকে আশ্বস্ত করতে চাই, জঙ্গিবাদ সন্ত্রাসবাদসহ সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে আমাদের সদস্যরা মাঠে থাকবে। আমরা আরেকটি কথা জানাতে চাই, ঈদে ঢাকা ছেড়ে যারা গ্রামের বাড়িতে যাবেন তারা মূল্যবান সম্পদসহ আবাসনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে যাবেন। আমাদের সকল সদস্য বিভিন্ন ফ্ল্যাট বাড়ি এলাকার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন।
তিনি আরও বলেন, আমরা গরুবাহী পরিবহনের ও হাটের জন্য একটি নির্দেশনা দিয়েছি। গরুবাহী পরিবহন যে হাটে যাবে তারা যেন পরিবহনে হাটের নামসহ ব্যানার পরিবহনের সামনে ও পিছনে দিয়ে দেন। এতে করে সড়কে কেউ গরুবাহী পরিবহন নিয়ে টানাহেঁচড়া করতে পারবে না। করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যদি কেউ এই বিষয়ে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটায় তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ব্যাপারে আমাদের প্রতিনিধিদের নির্দেশনা দেওয়া রয়েছে।
পুলিশ প্রধান বলেন, যে কোনো প্রয়োজনে আপনারা পুলিশ বাহিনীর সহায়তা নিন এবং জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এ কল তরে আমাদের জানান। এই পরিস্থিতিতে আমাদের মোটরসাইকেল টিম সবসময় সড়কে থাকবে। আমাদের সদস্যরা ঠিকঠাক দায়িত্ব পালন করছেন কি না এ ব্যাপারে মনিটরিং করার জন্য পুলিশের সিনিয়র সদস্যরাও মাঠে থাকবেন। যাত্রী সাধারনের নিরাপত্তার জন্য যা করা দরকার আমরা তা করছি।
সব শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে এদেশের সকল মানুষ আমাদের স্বাধীনতার সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য ঐক্যবদ্ধ। যে কোনো ধরনের চক্রান্ত রুখে দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের সামর্থ রয়েছে। বিভিন্ন দেশের মাধ্যমে এদেশের সম্মান, স্বাধীনতা বিনষ্ট করার জন্য দেশীয় যে কুচক্রী মহল জড়িত রয়েছে তাদের চিহ্নিত করার কাজ চলছে। সাথে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একনিষ্ঠভাবে আন্তরিকতার সাথে সেই ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করতে কাজ করছেন।
এসময় তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি চরম অবনতির দিকে ছিল। সেখান থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে আমরা যারা আছি সবাই এক সাথে কাজ করে আইনশৃঙ্খলাকে সমুন্নত রেখেছি। নিরবিচ্ছিন্নভাবে আমরা দায়িত্ব পালন করছি।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি সৈয়দ নুরুল ইসলাম, ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান, ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস ও ট্রাফিক উত্তর) আব্দুল্লাহিল কাফী ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) শাহিদুল ইসলামসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা।