বিশ্ব বিখ্যাত ব্রিটিশ-আমেরিকান সাংবাদিক এবং সর্বাধিক বিক্রিত লেখক মেহেদি হাসানের সাথে সাক্ষাতকারে পিটিআই চেয়ারম্যান ও পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এ মন্তব্য করেন।
মেহেদি হাসান পাকিস্তানের বর্তমান গণতন্ত্র এবং মানবাধিকার নিয়ে ইমরান খানের মতামত জিজ্ঞাসা করে সাক্ষাৎকারটি শুরু করেন। পিটিআই চেয়ারম্যান জবাবে বলেন, পাকিস্তান যখন একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল ঠিক তখনই দেশ একটি সম্পূর্ণ “গণতন্ত্রের ধ্বংস”এর মত পরিস্থিতি প্রত্যক্ষ করছে।
পাকিস্তানের সমালোচনা করে ইমরান খান বলেন, “আইনের শাসন, গণতন্ত্র এবং সমৃদ্ধি একসাথে চলে। কিন্তু আজ যখন দেশে আপনার আইনের শাসন নেই। পাকিস্তানে একটি অঘোষিত সামরিক আইন আছে, তখন সামনে শুধুই অন্ধকার।
মেহেদি হাসান জানতে চান, ইমরান খান কি বিশ্বাস করেন যে, এই বছরের অক্টোবরে যদি সময়মতো নির্বাচন হয়, তবে তার “অবরোধিত দল” এখনও জয়লাভ করতে পারবে কিনা এবং তিনি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন কিনা?
জবাবে ইমরান খান বলেন, তার ক্ষমতাচ্যুতির পরে ৩৭টি উপনির্বাচনের মধ্যে তার দল ৩০টিতে জয় পেয়েছেন।
উল্লেখ্য, বেশ কয়েক বছর ধরেই সংকটের আবর্তে ঘুরপাক খাচ্ছে পাকিস্তান। অর্থনৈতিক ধস ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা মিলিয়ে খাদের কিনারায় চলে গেছে দেশটি। যে কোনো সময় দেউলিয়া হয়ে যেতে পারে। এতে দক্ষিণ এশিয়ার মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটির সংকট আরও তীব্র হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকেই সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে এক ধরনের যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন ইমরান খান। আগাম নির্বাচনের দাবিতে শাহবাজ শরিফের সরকারকে ক্রমাগত চাপ দিয়ে আসছিলেন তিনি। সেনাবাহিনীর সঙ্গে তার অভিযোগ পাল্টা-অভিযোগের খেলা চলছিল। এতে জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক মাঠে উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে।
আগামী অক্টোবরে দেশটির জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। দক্ষিণ এশীয় দেশটির রাজনীতিতে এখন ভোটের উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে। রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যেই পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। ২০১৯ সালে নেয়া সাড়ে ৬০০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ কর্মসূচি সচল করতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে চুক্তি করতে চাচ্ছে পাকিস্তান সরকার। কিছু শর্ত পূরণ করতে না-পারায় গেল নভেম্বর থেকে এই অর্থনৈতিক কর্মসূচি স্থবির হয়ে আছে। কিন্তু পাকিস্তানের অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা কাটিয়ে উঠতে হলে এই ঋণ খুবই দরকার।
এছাড়াও ১১০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ কিস্তি ছাড় দিতে বেশ কিছু শর্তজুড়ে দিয়েছে আইএমএফ। যাতে রুপি বিনিময় হার আরও উদার করার পাশাপাশি কর বাড়াতেও বলা হয়েছে। এসব শর্ত মানতে পাকিস্তান সরকার কতটা সফল হবে; তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।