• শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৩৩ পূর্বাহ্ন

ইউক্রেনকে ক্লাস্টার বোমা দেওয়া নিয়ে বেকায়দায় যুক্তরাষ্ট্র

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : রবিবার, ৯ জুলাই, ২০২৩
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এটিকে ‘খুব কঠিন সিদ্ধান্ত’ বলে অভিহিত করেন।

ইউক্রেনকে ক্লাস্টার বোমা সরবরাহের ঘোষণা দিয়ে বেকায়দায় আছে যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটনের সিদ্ধান্তে বেশ কয়েকটি মার্কিন মিত্র দেশ অস্বস্তি প্রকাশ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র শুক্রবার নিশ্চিত করে যে তারা ইউক্রেনে বিতর্কিত অস্ত্র পাঠাচ্ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এটিকে ‘খুব কঠিন সিদ্ধান্ত’ বলে অভিহিত করেন।

প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাজ্য, কানাডা, নিউজিল্যান্ড এবং স্পেনের মতো ঘনিষ্ঠ মার্কিন মিত্র সাফ জানিয়ে দিয়েছে যে তারা এই অস্ত্র ব্যবহারের ঘোর বিরোধী।

১০০টিরও বেশি দেশ ক্লাস্টার বোমা নিষিদ্ধ করেছে। কারণ এগুলো বেসামরিক মানুষের জন্য ভয়াবহ বিপদ ডেকে আনে। এগুলোতে সাধাণরত অনেকগুলো ছোট বোমা থাকে, যেগুলো বিস্তৃত অঞ্চলে নির্বিচারে প্রাণ কেড়ে নিতে পারে। শুধু তাই-নয়, অবিস্ফোরিত বোমাগুলো বছরের পর বছর মাটিতে পড়ে থাকতে পারে। তারপর যে কোনও সময় বিস্ফোরিত হতে পারে।

মার্কিন সিদ্ধান্তের বিষয়ে নিজেদের অবস্থান সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেন, ‘যুক্তরাজ্য সেই ১২৩টি দেশের মধ্যে যারা ক্লাস্টার যুদ্ধাস্ত্রের কনভেনশনে সই করেছে। এটি অস্ত্র উৎপাদন বা ব্যবহার নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি এগুলোর ব্যবহারকে নিরুৎসাহিত করে।’

নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ক্রিস হিপকিন্স সুনাকের চেয়ে আরও এক ধাপ এগিয়ে। তিনি বলেন, ‘অস্ত্রগুলো নিরপরাধ লোকদের ব্যাপক ক্ষতি করে। এগুলো দীর্ঘস্থায়ী প্রভাবও ফেলতে পারে।’

হিপকিন্স বলেন, ‘ইউক্রেনে ক্লাস্টার বোমা ব্যবহারের বিরুদ্ধে নিউজিল্যান্ডের আপত্তি সম্পর্কে হোয়াইট হাউসকে জানানো হয়েছে।’

স্পেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্গারিটা রোবেলস সাংবাদিকদের বলেছেন, এ ধরনের অস্ত্র এবং বোমা ইউক্রেনে পাঠানো যাবে না। চুক্তির বিষয়ে আমরা দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

এদিকে কানাডিয়ান সরকার বলছে, শিশুদের ওপর বোমার সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে তারা বিশেষভাবে উদ্বিগ্ন। কারণ এগুলো কখনও কখনও বহু বছর ধরে বিস্ফোরিত হয় না৷

কানাডা আরও বলেছে, ক্লাস্টার বোমা ব্যবহারের বিরুদ্ধে তারা। দেশটি ক্লাস্টার যুদ্ধাস্ত্রের কনভেনশন সম্পূর্ণরূপে মেনে চলে।

যুক্তরাষ্ট্র, ইউক্রেন এবং রাশিয়া ওই চুক্তিতে সই করেনি। আর তাই মস্কো এবং কিয়েভ উভয়ই যুদ্ধের সময় ক্লাস্টার বোমা ব্যবহার করেছে।

 

ক্লাস্টার বোমা কী?

ক্লাস্টার যুদ্ধাস্ত্র হলো একটি বোমা যা বাতাসে উন্মুক্ত হয় এবং বিস্তৃত এলাকাজুড়ে ছোট ছোট ‘বোমা’ ছিটিয়ে দেয়। বোমাগুলো একই সময়ে একাধিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করে, যেমন- ট্যাংক ও সামরিক সরঞ্জাম।

যুদ্ধের জন্য যুক্তরাষ্ট্র এবং মিত্ররা ইতোমধ্যে ইউক্রেনকে যে কামানগুলো সরবরাহ করেছে — যেমন হাউইটজার — তা একটি সাধারণ ১৫৫ মিমি গোলার ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। ক্লাস্টার বোমার ভিত্তিও একই। ইতোমধ্যে যুদ্ধক্ষেত্রে এমন গোলার ব্যাপক ব্যবহার হচ্ছে।

আগের যুদ্ধগুলোতে ক্লাস্টার বোমায় বোমার সংখ্যা ছিল বেশি। হাজার হাজার ছোট অবিস্ফোরিত বোমাগুলো তাজা অবস্থায় রয়ে যেত। নিক্ষেপের কয়েক দশক পরও এগুলো বিস্ফোরিত হয়ে মানুষকে হত্যা ও পঙ্গু করেছে। যুক্তরাষ্ট্র সর্বশেষ ২০০৩ সালে ইরাকের যুদ্ধে এই বোমা ব্যবহার করেছিল। সংঘাত জনবহুল স্থানে ছড়িয়ে পড়ার পর এগুলো ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বৃহস্পতিবার মার্কিন ব্রিগেডিয়ার মো. জেনারেল প্যাট রাইডার বলেছেন, প্রতিরক্ষা দফতরের অস্ত্রশস্ত্রের একাধিক রূপ রয়েছে এবং আমরা যেগুলো দেওয়ার কথা বিবেচনা করছি সেগুলোর অবিস্ফোরণের হার ২ দশমিক ৩৫ শতাংশ।

আরো পড়ুন   বাংলাদেশে মার্কিন হস্তক্ষেপ নিয়ে যা বলল ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ