উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে আবারও বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছে তিস্তা নদীর পানি। পানি নিয়ন্ত্রণে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১১ জুলাই) সকাল ৯টায় তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পয়েন্টে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ১৩ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমার দশমিক ২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তা নদীর স্বাভাবিক পানিপ্রবাহ ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ডালিয়া ডিভিশন সূত্র জানায়, জুনের শুরু থেকে তিস্তার পানি বাড়া-কমার মধ্যে আছে। ৫ জুলাই তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছিল। এরপর ওইদিন বিকেল থেকে পানি কমতে শুরু করে। পরে স্বাভাবিক হলেও আজ আবার বাড়ছে পানি।
ডিমলা উপজেলার কালিগঞ্জ, ঝারসিংহেসর, খগারচর, জুয়ার চর, বাংলাপাড়া, উত্তর খড়িবাড়ী, বাইশপুকুর ও জলঢাকা উপজেলার ফরেস্টের চর, ভাবনচুর, ডাউয়াবাড়ীসহ বেশ কয়েকটি চরে পানি ওঠা-নামার মধ্যে আছে। ফলে এসব অঞ্চলে বসবাস করা মানুষদের গরু-ছাগল নিয়ে পড়তে হচ্ছে বিপাকে। কিছু কিছু জায়গায় ভাঙন দেখা দিয়েছে।
টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার সফিয়ার রহমান বলেন, বরাবরই আমার এলাকার তলিয়ে যায়। নদীতে একটু বাড়লেই এখানে পানি ওঠে। আমি সার্বক্ষণিক এলাকার খোঁজখবর নিচ্ছি।
ডিমলার ছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ বলেন, ‘পানি বাড়া-কমার মধ্যে আছে। আশঙ্কা করছি বড় কোনো বন্যা হতে পারে। বড় বন্য হলে আমাদের অনেক ক্ষতি হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন বলেন, বন্যা নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গ্রামপুলিশ দিয়ে স্থানীয়দের সতর্ক করা হয়েছে। বন্যা মোকাবিলায় আমরা সার্বক্ষণিক চেষ্টা করছি।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদ্দৌলা বলেন, পানি রাত থেকে বাড়তে শুরু করে। ভোর ৬টায় বিপৎসীমার দশমিক ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। সকাল ৯টায় তা বেড়ে বিপৎসীমার দশমিক ২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় বরাবরই আমরা মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা করছি। কোথাও কোনো সমস্যা হলে তা মোকাবিলায় পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রস্তুত আছে।