দরিদ্র পরিবারের শফিকুল ‘সুখের’ আশায় বিদেশ পাড়ি জমিয়েছিলেন। প্রায় ১৩ বছর পর মায়ের কাছে ফেরার আশ্বাস দিয়েছিলেন ছেলে শফিকুল ইসলাম। কথা ছিল, এসে বিয়ে করে করবেন। শফিকুল ফিরে এসেছে মায়ের কাছে। তবে জীবন্ত নয়, লাশ হয়ে।
রোববার (১৬ জুলাই) সকালে গ্রামের বাড়ি মেহেরপুরের গাংনীর কাষ্টদহ গ্রামে পৌঁছেছে তার মরদেহ। সোমবার (১০ জুলাই) সকালে দক্ষিণ আফ্রিকায় শফিকুলের হাত-পা বাঁধা গলা কাটা মরদেহ উদ্ধার করে তার সহকর্মীরা।
নিহত ব্যক্তি কাষ্টদহ গ্রামের মৃত আজিজুল ইসলামের ছেলে শফিকুল ইসলাম।
পারিবারিক সূত্র জানায়, শফিকুল ইসলাম তার পরিবারের সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে প্রথমে পাড়ি জমায় কাতারে। সেখানে ১২ বছর থাকার পর বাড়ি ফিরে আসে। সংসারে মা-ভাই ও বোনদের সুখের জন্য আবারও পাড়ি জমান সুদূর আফ্রিকায়। নাগরিকত্ব পেতে সেখানে একটি বিয়ে করেন শফিকুল। পরে সেখানে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। বেশ ভালোই যাচ্ছিল দিন। এভাবে কেটে যায় ১৩টি বছর। কিছু দিন পর আফ্রিকান স্ত্রীর সঙ্গে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। এরপর থেকে শফিকুলকে বিভিন্ন সময়ে জিম্মি করে অর্থ আদায় করা হতো। পরিবারের লোকজন মুক্তিপণ দেওয়ার পর শফিকুলকে দেশে ফিরে আসতে বলে এবং বিয়ে করে সংসার করতে বলেন মা।
এদিকে শফিকুলও মায়ের কথায় রাজি হয়। বিয়ের জন্য মেয়ে দেখার কাজটিও করছিলেন তার বন্ধুরা। এরই মাঝে ঘটে বিপত্তি। গত সোমবার আফ্রিকায় তার দোকানের পাশ থেকে শফিকুলের হাত-পা বাঁধা গলা কাটা মরদেহ উদ্ধার করে। বিষয়টি বাড়িতে জানানো হয়। এরপর থেকে গোটা পরিবারে নেমে আসে শোকের ছায়া। অপেক্ষা করতে থাকে শফিকুলের মরদেহটি একবারের জন্য হলেও দেখার। পরে রোববার (১৬ জুলাই) সকালে শফিকুলের মরদেহ এসে বাড়িতে পৌঁছায়। এ সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবারের লোকজন ও আত্মীয়-স্বজনরা।
গাংনী থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাক জানান, বিষয়টি শুনেছি। পুলিশের একটি টিম শফিকুল ইসলামের বাড়িতে পাঠানো হয়েছে।