বর্ষাকালে সর্দি-কাশি, জ্বর, পেটখারাপ ছাড়াও আর যে অসুখের আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়, তা হলো ‘কনজাংটিভাইটিস’, যেটি চোখ ওঠা নামে পরিচিত। চারপাশের অনেকেই এই অসুখে ভুগছেন। এই রোগের প্রাথমিক লক্ষণ চোখ লাল হয়ে যাওয়া। এছাড়াও যন্ত্রণা, চোখে অস্বস্তি, চোখ থেকে অনবরত পানি পড়ার মতো সমস্যা তো রয়েছেই। বড়দের তো হয়ই, এই রোগের হাত থেকে নিস্তার নেই শিশুদেরও।
বছরের অন্য সময়ও হতে পারে। তবে এই রোগের মৌসুম হলো বর্ষাকাল। বর্ষায় সবচেয়ে বেশি ভোগায় চোখের এই সমস্যা। কনজাংটিভাইটিস সাধারণত তিন ধরনের হয়— ‘অ্যালার্জিক কনজাংটিভাইটিস’, ‘ইনফেকটিভ কনজাংটিভাইটিস’ এবং ’কেমিক্যাল কনজাংটিভাইটিস।’ ধুলোবালি, কোনো খাবার, ওষুধ থেকে অ্যালার্জিক কনজাংটিভাইটিস হতে পারে। বিভিন্ন ব্যাক্টেরিয়া ও ভাইরাস থেকে সাধারণত ইনফেকটিভ কনজাংটিভাইটিস হয়। আর কোনো রাসায়নিক পদার্থ থেকে সাধারণত কেমিক্যাল কনজাংটিভাইটিস হয়।
অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্রথমে এক চোখে সমস্যা শুরু হয়। পরে অন্য চোখও আক্রান্ত হয়। অনেকেই প্রাথমিকভাবে এই রোগটি হালকাভাবে নেন। ফলে সময় মতো চিকিৎসা শুরু না হওয়ায় এই রোগ দীর্ঘমেয়াদী হতে পারে। এতে ক্ষতি হতে পারে কর্নিয়ারও। তাই চোখ লাল হয়ে যাওয়া, চোখে খচখচ করা, আলোয় কষ্ট পাওয়া, চোখের নিচের অংশ লাল হয়ে ফুলে যাওয়ার মতো লক্ষণ দেখা দিলে অতি অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া জরুরি।
এই রোগ অত্যন্ত ছোঁয়াচে। তাছাড়া কিছু নিয়ম মেনে না চললে সুস্থ হতেও বেশ অনেকটা সময় লেগে যায়।
১) কনজাংটিভাইটিস হলে চোখে ঘন ঘন হাত দেয়া ঠিক হবে না। ওষুধ দেয়ার সময় ছাড়া চোখে যেন হাত না যায়, সে দিকে লক্ষ্য রাখুন।
২) ওষুধ কিংবা ড্রপ দেয়ার পর হাত ধুয়ে নিতে ভুলবেন না। ওই হাত অন্য কোথাও স্পর্শ করলে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে।
৩) প্রথম থেকে সাবধান থাকুন। কনজাংটিভাইটিসের লক্ষণ দেখা দিতে শুরু করলেই চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করুন। ফেলে রাখলে মুশকিলে পড়তে হতে পারেন।
৪) রোগীর জামাকাপড়, তোয়ালে, চশমা, বালিশ, বিছানার চাদর অন্য কেউ ব্যবহার না করাই ভালো। এগুলোর মাধ্যমে অন্য কারো আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে।
৫) এ সময় বেশি টিভি, ফোন না দেখাই ভালো। টিভি, ফোনের আলোয় চোখে অস্বস্তি বাড়তে পারে। কনজাংটিভাইটিস হলে যতক্ষণ চোখ বন্ধ করে থাকা যায়, ততই ভালো।