সুন্দরবনের বাঘ প্রধানত ছয় ধরনের খাদ্য গ্রহণ করে থাকে। এগুলো হলো- মায়া হরিণ, চিত্রা হরিণ, বন্য শুকর, গুইসাপ, শজারু ও বানর। গত প্রায় ৩০ বছরে বাঘের তিনটি খাদ্য- চিত্র হরিণ, বন্য শূকর ও বানরের সংখ্যা বেড়েছে। চিত্রা হরিণ ও বন্য শূকর বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ।
তিন বছর ধরে সুন্দরবনের বাঘের প্রধান খাবারগুলোর ওপরে করা এক গবেষণা জরিপে এমন তথ্য বেরিয়ে এসেছে।
তবে, গবেষকেরা বলছেন, বাঘের খাদ্য হিসেবে পরিচিত এই প্রাণীরাও সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্যের অংশ। ফলে সুন্দরবন রক্ষায় এই প্রাণীদেরও সংরক্ষণ করতে হবে।
জরিপে সুন্দরবনে বাঘের প্রধান খাদ্য চিত্রা হরিণের সংখ্যা বেরিয়ে আসে। গত আশির দশকে সুন্দরবনে এই প্রাণীর সংখ্যা ছিল ৮০ থেকে ৮৫ হাজার। এবারের জরিপে এই সংখ্যা দাঁড়ায় ১ লাখ ৪১ হাজার ৩৫৭টিতে। হরিণের আরেক প্রজাতি মায়া হরিণ। এর সংখ্যা বেশ কমতির দিকে। ইতোমধ্যে ভারতীয় সুন্দরবন অংশে এই প্রজাতিকে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। বাংলাদেশে আশির দশকের জরিপে এই প্রাণীর সংখ্যা ছিল ২ হাজার ২৬৫টি। এবারের জরিপে সর্বসাকুল্যে ৬৮৭টি মায়া হরিণ পাওয়া যায়।
সুন্দরবনে বাঘের আরেকটি প্রিয় খাদ্য হলো- বন শূকর। এবারের জরিপে ৪৫ হাজার ১১০টি বন শূকর পাওয়া গেছে। এর আগের জরিপে প্রাণীটির সংখ্যা পাওয়া গিয়েছিল ২৮ হাজার। সুন্দরবনের বাঘের খাদ্যতালিকায় চিত্রা হরিণের সংখ্যা ৭৯ শতাংশ ও বুনো শূকরের অবদান ১১ শতাংশ।
বাঘের অন্য যে তিনটি খাদ্যের সন্ধান পাওয়া গেছে তা হলো- গুইসাপ, শজারু ও বানর। সুন্দরবনে গুইসাপের সংখ্যা ২৫ হাজার ১২৪টি, শজারু ১২ হাজার ২৪১টি এবং বানর ১ লাখ ৫২ হাজার ৪৪৪টি পাওয়া যায়। এর আগে অবশ্য গুইসাপ ও শজারুর সংখ্যা জরিপ করা হয়নি। তবে আশির দশকে বানরের সংখ্যা জরিপ করে পাওয়া যায় ১ লাখ ২৬ হাজার ২২০টি।
শনিবার (২৯ জুলাই) ছিল আন্তর্জাতিক বাঘ দিবস। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য- বাঘ করো সংরক্ষণ, সমৃদ্ধ হবে সুন্দরবন।