• মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৫৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:

পরিবারের সচ্ছলতা আনতে গিয়েছিলেন কাতার, ফিরলেন লাশ হয়ে

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : বুধবার, ৯ আগস্ট, ২০২৩

পরিবারে সচ্ছলতা আনতে ১০ বছর আগে কাতার যান উজ্জ্বল মিয়া। কিন্তু সচ্ছলতার বদলে লাশ হয়ে ফিরলেন এই রেমিট্যান্স যোদ্ধা। গত ৩০ জুন সেখানে কর্মরত অবস্থায় প্রাণ যায় তাঁর। এর পর গত রোববার বিমানে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসে তাঁর লাশ। সব আইনি প্রক্রিয়া শেষে মঙ্গলবার রাতে নান্দাইল উপজেলার হালিউড়ায় নিজ বাড়িতে এনে তাঁর লাশের দাফন করা হয়।

 

উজ্জ্বল মিয়া (৩৫) হালিউড়া গ্রামের আবদুল লতিফের ছোট ছেলে। কাতার গিয়ে কৃষিশ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। তাঁর পাঠানো টাকায় বাড়িতে ঘর বানিয়ে রঙিন টিনের ছাউনি দেওয়া হয়। কিন্তু সেই ঘরে আর কোনোদিন থাকা হবে না তাঁর।

বুধবার খারুয়া ইউনিয়নের হালিউড়া গ্রামে উজ্জ্বল মিয়ার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় নীরবতা। বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে আছেন অন্য বাড়ির কয়েকজন নারী। উজ্জ্বল মিয়ার স্বজনদের খোঁজ করলে বাড়ির ভেতর থেকে বেরিয়ে আসেন বাবা আবদুল লতিফ ও বড় ভাই সোহেল মিয়া।

সোহেল জানান, কাতারের দোহায় ‘মেসার্স সিক্স কনস্ট্রাক্টশন লিমিটেড’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করত তাঁর ভাই। প্রতিষ্ঠানের কাছাকাছি কৃষি জমিতে সেচ দেওয়াই ছিল তার প্রধান কাজ। পানির বড় সংরক্ষণাগার থেকে জমিতে সেচ দিত। গত ৩০ জুলাই দুপুরে সেচ দিতে গেলে সমস্যা দেখা দেয়। তখন সংরক্ষণাগারে নামেন উজ্জ্বলের এক সহকর্মী। দীর্ঘ সময় পার হয়ে গেলেও ওই সহকর্মী উঠে না আসায় সেখানে নামেন আরেকজন। দ্বিতীয়জনও উঠছেন না দেখে উজ্জ্বল মিয়া অন্য একজন সহকর্মীকে নিয়ে সেখানে নামে। পরে তারা কেউ উঠে না আসায় অবশেষে সেখানে ফোরম্যান পদে কর্মরত এক মিশরীয়ও সেখানে নামেন। কিন্তু সংরক্ষণাগারে নামার পর সবাই সেখানে থাকা বিষাক্ত গ্যাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। সোহেল মিয়া জানান, তাঁর ভাইয়ের মৃত্যু পরিবারের কেউ মেনে নিতে পারছেন না।

উজ্জ্বল মিয়ার বড় সন্তান মিম আক্তার (১৩) জানায়, তার বাবাকে ছোটবেলায় দেখেছে। কিন্তু প্রতিদিন ভিডিওকলে বাবা তার সঙ্গে কথা বলেছেন। এ কারণে মনে হতো তার বাবা তার কাছেই আছেন। পুরোটা সময় সেখানে পাশে চুপ করে বসা ছিলেন ছেলের শোকে কাতর বাবা আবদুল লতিফ। ছেলের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি হু হু করে কেঁদে ওঠেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ