রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নিবিড় পর্যবেক্ষণে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জ্বর কিছুটা কমেছে। তবে শারীরিক অবস্থা আগের মতোই রয়েছে। অ্যান্টিবায়োটিকের মাধ্যমে বিভিন্ন জটিলতা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন চিকিৎসকরা।
এর আগে তাঁর ফুসফুসে পানি জমে যাওয়ায় স্বাস্থ্যের অবনতি হলে সিসিইউতে ভর্তির সুপারিশ করে মেডিকেল বোর্ড। তবে সিসিইউতে না নিয়ে সিসিইউ সুবিধা সংযুক্ত কেবিনেই চিকিৎসা চলছে তাঁর।
মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) রাতে মেডিকেল বোর্ডের সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানান, চিকিৎসকরা খালেদা জিয়াকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছেন। ভালো-মন্দ নিয়ে এখনই বলার সময় আসেনি। একেবারে ভালো, একেবারে খারাপ কোনোটিই বলা সম্ভব নয়।
জাহিদ হোসেন জানান, ফুসফুসে পানি জমে স্বাস্থ্যের অবনতি হলে মেডিকেল বোর্ডের সুপারিশে সিসিইউ সুবিধাযুক্ত কেবিনে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
মেডিকেল বোর্ডের আরেক সদস্য জানান, প্রতিদিনই খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের একাধিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং সে অনুয়ায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। লিভারের মতো জটিল সমস্যার শতভাগ চিকিৎসা এদেশে সম্ভব নয়। এরপরও বোর্ড সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে।
তিনি আরও জানান, রক্তের হিমোগ্লোবিন, প্রেসার, ডায়বেটিসসহ স্বাস্থ্যের প্রায় সবক’টি প্যারামিটারই উঠানামা করছে। অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে তা কিছুটা নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা চলছে। এ পর্যন্ত যেসব টেস্টের ফলাফল এসেছে, কয়েকটিতে বোর্ড উদ্বিগ্ন। খালেদা জিয়াকে আরও কয়েকদিন হাসপাতালে থাকতে হবে।
গত ৮ আগস্ট সন্ধ্যায় খালেদা জিয়াকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ৭৬ বছর বয়সী সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, চোখের সমস্যাসহ বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছেন।
কিন্তু লিভারে পানি বেড়ে যাওয়ায় যে কোনো সময় অন্য জটিলতা দেখা দিতে পারে। এর ফলে শরীরের ওজন বেড়ে গেছে। শ্বাস-প্রশ্বাসে কষ্ট হচ্ছে। ব্লাড প্রেশার ও ডায়াবেটিস ওঠানামা করছে।
এর আগে গত জুনেও তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সে সময় তাঁকে পাঁচ দিন হাসপাতালে থাকতে হয়। তখন এনজিওগ্রাম করা হলে তাঁর হৃদযন্ত্রে তিনটি ব্লক ধরা পড়ে। এর একটিতে রিং পরানো হয়।
খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, লিভার ও হৃদরোগে ভুগছেন। তাঁর পরিপাকতন্ত্রে রক্তক্ষরণ ও লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হওয়ার কথা জানিয়েছেন মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা।
২০২১ সালে এপ্রিলে করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে অসুস্থতার কারণে তাঁকে একাধিকবার হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছে।