• মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৪৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:

কুড়িগ্রামে নদীভাঙনে ভিটেমাটি হারিয়েছে শতাধিক পরিবার

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : রবিবার, ২০ আগস্ট, ২০২৩

কুড়িগ্রামে সবগুলো নদ-নদীর পানি কমে দেখা দিয়েছে নদীভাঙন। গত দুই সপ্তাহ ধরে ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তা নদীর ভাঙনের শিকার হয়ে ভিটেমাটি ও ফসলি জমি হারিয়েছেন জেলার শতাধিক পরিবার। নদী শাসনের স্থায়ী ব্যবস্থা না থাকায় সারা বছরই এমন দুর্ভোগে পড়ে এই অঞ্চলের মানুষজন। ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব মানুষজন কেউ আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘরে, কেউ খোলা আকাশের নিচে কেউ আবার স্বজনদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। এমন অবস্থায় নদীভাঙন থেকে মুক্তি পেতে স্থায়ী সমাধানের দাবি জানিয়েছেন ভাঙনকবলিত মানুষজন।

জানা গেছে, কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুরের বজরা, চিলমারীর শাখাতি মনতলা ও গাজির পাড়া এলাকায় তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে শতাধিক ভিটেমাটি বিলীন হয়েছে। সহায় সম্বলহীন মানুষজন তাদের আসবাবপত্র নিয়ে পড়েছে বিপাকে। জমিজমা না থাকায় রাস্তার ধারে, অন্যের জমিতে কোনোরকম ঠাঁই নেওয়ার চেষ্টা করছেন তারা। অন্যদিকে ভাঙনের কবলে পড়ে কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত পল্লী বিদ্যুৎতের সাবমেরিন প্রকল্পটিও হুমকির মুখে পড়ে আছে।

ওই এলাকার আসমা বেগম বলেন, নদী তো সব শেষ করে দিয়েছে। সাত-আট দিন ধরে রাতে পলিথিন টাঙিয়ে আছি। গ্রামের অনেক মানুষ আমাদের মতো কষ্টে আছে। টাকা-পয়সা জমিজমা থাকলে শহরে বাড়ি করতাম। এ অবস্থায় সরকার যদি নদীর ভাঙন বন্ধে কাজ করতো তাহলে আমাদের এই অভাবী মানুষগুলোর খুবই উপকার হতো

একই এলাকার বাসিন্দা মিন্টু মিয়া অভিযোগ করে বলেন, কোটি টাকা ব্যয়ে পল্লী বিদ্যুতের সাবমেরিন প্রকল্পটি ভাঙনের কবলে পড়লেও পানি উন্নয়ন বোর্ড ও পল্লী বিদ্যুতের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা নীরব রয়েছে। শেষে ইউপি চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় পাঁচ-ছয় দিন ধরে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ জন মানুষ সেটি উদ্ধারে কাজ করেছি। নয়তো আশপাশের প্রায় ২০ হাজার মানুষ বিদ্যুৎ থেকে বঞ্চিত হবে।

কুড়িগ্রামে নদীভাঙনে ভিটেমাটি হারিয়েছে শতাধিক পরিবার

চিলমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বলেন, গত দুই সপ্তাহ ধরে শাখাহাতি, মনতলা ও গাজির পাড়া এলাকায় তীব্র ভাঙন শুরু হয়। বিষয়টি আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ বিভিন্ন দপ্তরে জানিয়েছি। এ ব্যাপারে আশানুরূপ অগ্রগতি দেখতে পাচ্ছি না। নদীভাঙনে ওই এলাকাগুলোতে প্রায় ৯০টি পরিবার ভোগান্তিতে পড়েছে। এদের কেউ কেউ আবাসন প্রকল্পসহ বিভিন্ন এলাকায় আশ্রয় নিয়েছেন। অনেকেই খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

চিলমারী পল্লীবিদ্যুৎ অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল বলেন, ভাঙনের কবলে পড়ে নদীর তীরবর্তী দুই-তিনটি বিদ্যুতিক খুঁটি নদীতে চলে গেছে। ওখানে ভাঙনের হুমকির মুখে পড়ে আছে পল্লী বিদ্যুৎতের সাবমেরিন প্রকল্পের ক্যাবল। আমরা দ্রুত সেটাকে অন্য স্থানে সরিয়ে নেওয়ার জন্য কাজ করছি।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়নের বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, আমাদের লোক শাখাতির আশপাশের এলাকায় সরেজমিন দেখে এসেছে। আমাদের করার কিছু নাই। কেননা প্রকল্পের বরাদ্দ না থাকায় তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্রে ভাঙন রোধে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ