চাঁদে অবতরণের আর বেশি দেরি নেই। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর তৈরি চন্দ্রযান-৩-এর ল্যান্ডার বিক্রম এখন চাঁদের খুব কাছাকাছি অবস্থান করছে। আগামী বুধবার ভারতীয় সময় অনুযায়ী ঠিক সন্ধ্যা ৬টা ৪ মিনিটে চাঁদের মাটিতে পা রাখার কথা।
কিন্তু বিক্রম কোথায় অবতরণ করবে? চাঁদের দক্ষিণ মেরুর দুর্গম খানাখন্দে ভরা মাটিতে বিক্রমের প্রয়োজন অপেক্ষাকৃত মসৃণ জমি। আপাতত বিক্রমের নিরাপদ স্থানে অবতরণের সন্ধানে রয়েছে ইসরো।সোমবার ইসরো কয়েকটি ছবি শেয়ার করেছে। চাঁদের বুকে পা রাখার আগে ঘুরে ঘুরে নিরাপদ অবতরণের স্থান খুঁজছে বিক্রম। তার ক্যামেরা দিয়ে তোলা ছবিগুলোই প্রকাশ করেছে ইসরো।
সামাজিক মাধ্যম এক্সের (টুইটার) এক পোস্টে ইসরো লিখেছে, ‘এগুলো চাঁদের অনেক দূরের দিকের ছবি। বিক্রমের মধ্যকার ল্যান্ডার হ্যাজার্ড ডিটেকশন অ্যান্ড অ্যাভয়েড্যান্স ক্যামেরা (এলএইচডিএসি) দিয়ে এই ছবিগুলো তোলা হয়েছে। এই বিশেষ ক্যামেরা চাঁদের মাটিতে অবতরণের জন্য নিরাপদ স্থান খুঁজতে সাহায্য করে।
চাঁদের জমিতে পাথর ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। সেই সঙ্গে রয়েছে অনেক ছোট বড় গর্ত। উঁচু ঢিবিও প্রতিবন্ধক হয়ে উঠতে পারে। ইসরোর প্রাথমিক লক্ষ্য হলো পাথর বা গর্ত এড়িয়ে অপেক্ষাকৃত ফাঁকা স্থান আগে চিহ্নিত করা। তারপর সেখানে বিক্রমকে নামানো হবে।
বুধবার সন্ধ্যায় রোভার প্রজ্ঞানকে নিয়ে পাখির পালকের মতো চাঁদের মাটিতে নামবে চন্দ্রযান-৩-এর ল্যান্ডার বিক্রম। চন্দ্রাভিযানের এই পর্যায়টিই সবচেয়ে কঠিন বলে মনে করা হচ্ছে। চার বছর আগে এই পর্যায়ে এসেই ব্যর্থ হয়েছিল চন্দ্রযান-২। তবে এবার তেমন সম্ভাবনা নেই বলেই দাবি ইসরোর। বড় কোনো বিপত্তি না হলে চাঁদের মাটিতে শিগগির নামতে চলেছে বিক্রম। সেদিকে তাকিয়ে আছে পুরো ভারত।
ইসরোর এক কর্মকর্তা জানান, চন্দ্রযান-৩ এর ল্যান্ডার বিক্রমকে এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যে, সব সেন্সরসহ তার দুটি ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে গেলেও ২৩ আগস্ট সেটি চাঁদের মাটিতে নামতে পারবে। তবে এর প্রোপালশন সিস্টেম ঠিকমতো কাজ করতে হবে। নাহলে সব পরিকল্পনাই ভেস্তে যাবে।
অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টারের ‘লঞ্চিং প্যাড’ থেকে গত ১৪ জুলাই দুপুর ২টা ৩৫ মিনিটে চন্দ্রযান-৩ এর সফল উৎক্ষেপণ করা হয়। বুধবার বিকেলে উৎক্ষেপণের ৪১ দিন পর ল্যান্ডার বিক্রমের চাঁদের মাটি ছোঁয়ার কথা। এই অভিযান সফল হলে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া এবং চীনের পর চতুর্থ দেশ হিসেবে চাঁদে মহাকাশযান অবতরণে নাম উঠে আসবে ভারতের।