ভারী বৃষ্টিপাত এবং উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তাপাড়ে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় রংপুরে ৪০ সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এতে ডুবে গেছে চরের আমন ও শাক-সবজির ক্ষেত। অনেকে গবাদী পশু নিয়ে বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন। এছাড়া ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, দুধকুমার নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।
রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, শনিবার সকাল ৯টায় ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার এবং কাউনিয়া পয়েন্টে ৪১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এছাড়া উজানের ঢলে ধরলা নদী কুড়িগ্রাম পয়েন্টে বিপৎসীমার ৯৭ সেন্টিমিটার, তালুক শিমুলবাড়ি পয়েন্টে ১ দশমিক ৪৮ সেন্টিমিটার, দুধকুমার নদী পাটেশ্বরী পয়েন্টে ৪২ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্র নদী নুনখাওয়া পয়েন্টে ৫৪ সেন্টিমিটার, চিলমারী পয়েন্টে ৫৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
রংপুরে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় গঙ্গাচড়ার নোহালী ইউনিয়নের চর বাগডোহরা, চর নোহালী, বৈরাতি, কোলকোন্দ ইউনিয়নের চিলাখাল, মটুকপুর, বিনবিনার চর, লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নের চর ইচলী, শংকরদহ, বাগেরহাট,কাউনিয়া উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের ঢুষমারার চর, পাঞ্জরভাঙ্গা, চরগদাই, গোপিডাঙ্গা, নিজপাড়া ও তালুক শাহবাজপুর, টেপামধুপুর ইউনিয়নের চরগোনাই, হরিচরন শর্মা, বিশ্বনাথ চর, আজমখাঁ চর, টাপুর চর, হয়বৎ খা, পীরগাছা উপজেলার ছাওলা ইউনিয়নের হাগুড়িয়া হাশিম, শিবদেব এলাকার কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এসব এলাকায় বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে।
গঙ্গাচড়ার জয়রাম ওঝার কৃষক আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, তিস্তার পানি বাড়ায় আমনের ক্ষেতসহ অন্যান্য ফসল ডুবে গেছে। এছাড়াও চরের মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে।
লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদী বলেন, আমার ইউনিয়নে প্রায় দেড় হাজার পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। অনেকস্থানে ক্ষেতের ফসল পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে।
রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, উত্তরাঞ্চল ও এর উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে উত্তরের নদ-নদীর পানি বেড়েছে। তিস্তা নদীর পানি ডালিয়া ও কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করছে। পানি বৃদ্ধির কারণে নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।