মাছের ঘেরের পাড়ে বাঁশ ও নেট দিয়ে তৈরি করা হয়েছে মাচা। আর তাতে ঝুলছে সারি সারি অফ সিজনের সবুজ তরমুজ। গাছ ও ফলের পরিচর্যা করছেন চাষি। এ চিত্র নড়াইল সদর উপজেলার দেবভোগ গ্রামে। এ গ্রামের চাষি অরুপ বিশ্বাস দ্বিতীয়বারের মত চাষ করেছেন অফ সিজনের তরমুজ। গত বছর স্বল্প পরিসরে আবাদ করলেও এ বছর বড় বড় তিনটি ঘেরের পাড়ে জেব্রা কিং, কালো মানিক ও রঙ্গিলা জাতের তরমুজের চাষ করেছেন তিনি।
এসব জাতের তরমুজ দেখতে যেমন সুন্দর, খেতেও সুস্বাদু। বিশেষ করে তৃপ্তি জাতের তরমুজ বেশি সুস্বাদু। এই তরমুজ চাষে খরচ কম, একর প্রতি মাত্র ১৫-২০ হাজার টাকা, কিন্তু বিক্রি হয় দেড় থেকে দুই লাখ টাকা। বাজার দরও বেশ চড়া থাকায় কৃষকও খুশি।
জেলায় হাইব্রিড জাতের অফ সিজনের তরমুজ চাষ করে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। কম খরচে বেশি ফলন এবং দাম ভালো পাওয়ায় লাভবান চাষিরা। তাদের সফলতা দেখে অসময়ের তরমুজ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন অনেকেই।
তরমুজ চাষি অরুপ বিশ্বাস ঢাকা মেইলকে বলেন, জুনের মাঝামাঝি সময়ে বীজ রোপণ করে সেপ্টেম্বরে তরমুজ বিক্রি শুরু করেছেন। ইতোমধ্যে ২০০ টাকা দরে ৫০০ তরমুজ বিক্রি করেছি। উৎপাদন খরচ উঠিয়ে প্রায় তিন লাখ টাকা লাভ হবে বলে আশা করছেন তিনি। স্বল্প ব্যয় ও অল্প পরিশ্রমে অধিক লাভ হওয়ায় আগামীতে আরো বেশি জমিতে অমৌসুমে তরমুজের আবাদ করবেন তিনি। অরুপের দেখাদেখি এ অঞ্চলের আরো অনেক কৃষক এই তরমুজের আবাদ করার পরিকল্পনা করছেন।
স্থানীয় কয়েকজন কৃষককের সঙ্গে কথা হয় ঢাকা মেইলের প্রতিবেদকের। এ সময় তারা জানান, তরমুজ চাষি অরুপ দাদা এ চাষে বেশ লাভবান হচ্ছেন। আমরাও তার কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে তরমুজ চাষ করব। তরমুজের বাগান তৈরিতে কৃষি বিভাগের সার্বিক সহযোগিতায় আমরা সফল হওয়ার বিষয়ে আশাবাদী।
নড়াইল সদর উপজেলা কৃষি অফিসার মো. রোকনুজ্জামান ঢাকা মেইলকে বলেন, ঘেরের পাড়ের অব্যবহৃত জমিতে সুস্বাদু, সুমিষ্ট এবং পুষ্টিকর অমৌসুমে তরমুজ চাষ করাতে একদিকে অল্প সময়ে ফল আহরণ করা যায় অন্যদিকে স্বল্প ব্যয়ে অন্যান্য ফসলের তুলনায় বেশি অর্থ আয় করা সম্ভব। এলাকার বেকার তরুণরা অমৌসুমে তরমুজ চাষ করে ভালো লাভবান হতে পারবেন। তারা চাইলে কৃষি বিভাগ থেকে সহযোগিতা করা হবে।