মিয়ানমারের সেনাদের নির্মম নির্যাতনের হাত থেকে প্রাণে বাঁচতে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন রোহিঙ্গারা । ২৫ আগস্ট থেকে এসব শিবিরে জন্ম নিয়েছে ২৮৪ রোহিঙ্গা শিশু এবং প্রায় ১১ হাজার অন্তঃসত্ত্বা নারী রয়েছেন। অন্তঃসত্ত্বা নারী ও নবজাতকের সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে।
উখিয়া ও টেকনাফের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের হিসাবে পাওয়া গেছে এসব তথ্য।
কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র, বালুখালী উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র, কুতুপালং কমিউনিটি ক্লিনিক ও পালংখালী স্বাস্থ্য এবং পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র, রোহিঙ্গা হেলথ ইউনিট, টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র, ১৩টি কমিউনিটি ক্লিনিক, দুটি ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র দুটি, সূর্যের হাসি ও লেদা হেলথ ক্লিনিকের তথ্যমতে, ২৫ আগস্ট থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা অন্তঃসত্ত্বা নারীর সংখ্যা প্রায় ১১ হাজার। এছাড়া নবজাতক জন্ম নিয়েছে ২৮৪ জন।
এর মধ্যে উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রে জন্ম নিয়েছে ২৫ নবজাতক, বালুখালী উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ১১, কুতুপালং কমিউনিটি ক্লিনিকে ৬, পালংখালী স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রে ৬, রোহিঙ্গা হেলথ ইউনিটে জন্ম নিয়েছে ২৮ জন নবজাতক। আর টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রে ও লেদা ক্যাম্পে জন্ম নিয়েছে ২০৮ জন নবজাতক।
এছাড়া উখিয়া ও টেকনাফে গর্ভপাত হওয়া নারীর সংখ্যা প্রায় ১৫ জন। উখিয়ায় বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৫০ জন, আন্তঃবিভাগে চিকিৎসা নিচ্ছেন ১১ জন এবং টেকনাফের উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রে প্রতিদিন বর্হিবিভাগে স্বাস্থ্যসেবা নিচ্ছেন ৬০ জন এবং আন্তঃবিভাগে ১০ জনের মতো স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে থাকেন।
সরেজমিন দেখা গেছে, উখিয়া ও টেকনাফের উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কেন্দ্রগুলোতে রোগীদের উপচেপড়া ভিড়। তবে এখানে বিনামূল্যে ওষুধ ও স্বাস্থ্যসেবা দেয়া হচ্ছে। এছাড়া অন্তঃসত্ত্বা নারী ও নবজাতকের যতœ নেয়া হচ্ছে গুরুত্বসহকারে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রে নবজাতকের জন্ম দিয়েছেন ফরমিন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকারের কাছে তারা কৃতজ্ঞ। তাদের চিকিৎসাসেবা দিচ্ছে, খাবার ও আশ্রয় দিচ্ছে। এ সময় সন্তানের লালন-পালনের দুঃশ্চিন্তায় কেঁদে ফেলেন আরও দুই শিশুর জন্মদাত্রী জোবাইয়েদা ও জয়নুন।
উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রের কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, উখিয়ার বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে এ পর্যন্ত ৭৬ জন নবজাতকের জন্ম হয়েছে। এছাড়া অন্তঃসত্ত্বা নারীর সংখ্যা এখানে প্রায় ৫ হাজার। এছাড়া বহির্বিভাগে প্রতিদিন চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে ৫০ জনকে এবং আন্তঃবিভাগে চিকিৎসা নিচ্ছেন ২৫ জনের মতো। আমরা বিনামূল্যে ওষুধ ও স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছি। সেবার ক্ষেত্রে আন্তরিকতার কোনো ঘাটতি আমরা রাখছি না।
টেকনাফের উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রের ডা. সুমন বড়ুয়া যুগান্তরকে বলেন, আমাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ অন্য স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে অন্তঃসত্ত্বা ৬ হাজার ও নবজাতক ২০৮ জন। এছাড়া গর্ভপাত হওয়া নারীর সংখ্যা ৬ জন। অন্তঃসত্ত্বা নারী ও শিশুদের সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে।