পাষণ্ড বাবার জন্য প্রায় আড়াই মাস মাতৃস্নেহ থেকে বঞ্চিত নবজাতক শিশু হুমায়শা প্রকৃত মায়ের কোলে ফিরেছে। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার শিশু আদালতের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান পালিত মা-বাবা শাকিল দম্পতির কাছ থেকে মা বৃষ্টি আক্তারের কাছে ফিরিয়ে দেন। তবে একই সঙ্গে শিশুটিকে বিচারক তিনমাস পর পর আদালতে হাজির করতে প্রকৃত মাকে নির্দেশ দিয়েছেন। এদিকে শুনানির আগে পালিত মা-বাবা শাকিল দম্পতি শিশুটিকে নিয়ে আদালতে হাজির হন। আদালত আদেশ দেওয়ার পর তারা শিশুটিকে দিতে না চেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তারা বলেন, আমরা শিশু হুমায়শাকে এই আড়াই মাস আদর-যত্নে বড় করেছি। আমরাই এখন ওর বাবা-মা। পরে অবশ্য শিশুটিকে তারা প্রকৃত মা বৃষ্টির হতে তুলে দেন।
উল্লেখ্য, গত ১৬ জুলাই সকালে রাজধানীর উত্তর-পশ্চিম থানাধীন আব্দুল্লাহপুর মাছের আড়ত থেকে মাছ কিনে বাসায় ফিরছিলেন একটি বেসরকারি কোম্পানিতে কর্মরত মো. শাকিল। পথে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের উত্তর পাশে একটি বাচ্চা শিশুর কান্না শুনতে পান। এরপর এগিয়ে গেলে একটি হলুদ শপিং ব্যাগের মধ্যে শিশুটিকে পেয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা করে বাসায় নিয়ে যান। এরপর উত্তরা পশ্চিম থানায় এ বিষয়ে একটি জিডি করেন। জিডির পর পুলিশ শিশুটিকে শাকিলের জিম্মায় প্রদান করেন। অন্যদিকে পুলিশ শিশুটির বিষয়ে শিশু আদালতকে অবহিত করেন। শিশুটি শাকিল দম্পতির কাছে বেড়ে উঠার সময় নাম রাখেন হুমায়শা। অন্যদিকে সন্তানের খবর পেয়ে গত ২৮ আগস্ট প্রকৃত মা বৃষ্টি আক্তার সন্তানকে নিজের কাছে ফিরিয়ে নিতে আদালতে আবেদন করেন। আদালত আবেদনের বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। গত ২৪ সেপ্টেম্বর বৃষ্টি আক্তারই প্রকৃত মা উল্লেখ করে সমাজ সেবা অধিদপ্তরের প্রবেশন অফিসার সুমন মধু প্রতিবেদন দাখিল করেন। বৃষ্টি আক্তারের দাবি, ক্লাস সেভেনে পড়ার সময় গাড়িচালক জনৈক সাগরের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কের পর তাদের বিয়ে হয়। এরপরই সন্তারের জন্ম। জন্মের পর স্বামী সাগর সন্তানটিকে মায়ের অগোচরে রাস্তায় ফেলে যায়। এরপর থেকে সাগরের সাথে বৃষ্টির যোগাযোগ নেই।