সঠিক পথে পরিশ্রম যে সৌভাগ্যের প্রসূতি এ কথাটির ওপর প্রচণ্ড বিশ্বাসী মিম। এ বিশ্বাসের ওপর ভর করেই দ্রুত এ অঙ্গনে ছুটে চলেছেন এ নায়িকা। পাচ্ছেন সাফল্যও। ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই মনের মধ্যে পুষে রেখেছিলেন লুকানো স্বপ্ন। ক্রমেই সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে হেঁটেছেন পরিকল্পনা মাফিক। স্বপ্ন ছুঁতে বা চিত্রনায়িকা খেতাব পেতে বেশি দূর যেতে হয়নি। তার চলচ্চিত্র অভিনেত্রী হয়ে ওঠার প্রথম সিঁড়ি ছিলেন বিখ্যাত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ। প্রয়াত এ লেখকের পরিচালনায় ২০০৮ সালে ‘আমার আছে জল’ ছবিতে দারুণ অভিনয় করার পর থেকেই আলোচনায় উঠে আসেন বিদ্যা সিনহা মিম। এরপর কিছু বিকল্পধারার ছবিতে ভালো করার পর মিম ছুট দেন বাণিজ্যিক ছবির নায়িকা হওয়ার পথে। বিদ্যার দেবী যাকে বর দেন সে তো মেধার গুণে ছুটবেই। এ ছুটে চলার মধ্যেই পরিচালক জাকির হোসেন রাজু পরিচালিত ‘আমার প্রাণের প্রিয়া’ নামের ছবিতে দেশের শীর্ষ নায়ক শাকিব খানের বিপরীতে অভিনয় করেন। শুরু হল বিদ্যার বাণিজ্যিক ছবির নায়িকা খেতাব নিয়ে যাত্রা। ২০০৯ সালে ছবিটি মুক্তি পাওয়ার পরই মিমের লিপে ‘কি জাদু করেছ বলো না ঘরে আর থাকা যে হল না’ বাংলা ছবির দর্শকদের মুখে লেগে থাকে। ফলে পেছনে আর তাকাতে হয়নি তাকে। এরপর ২০১৪ সালে ‘জোনাকির আলো’ ও ‘তারকাঁটা’ নামে দুটি ছবি মুক্তি পায়। চলচ্চিত্র সমালোচকদের কাছে ছবি দুটি প্রশংসা কুড়ালেও ব্যবসায়িকভাবে খুব একটা সাফল্য আসেনি। তাতে কী? যা হওয়ার তা ঠিকই হয়েছে। জোনাকির আলো ছবির জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার হাতে উঠে যায় মিমের হাতে। আর সেই সঙ্গে নায়িকা হিসেবে দর্শকদের হৃদয়ে স্থান করে নেন। পরের বছর ২০১৫ সালে ‘পদ্ম পাতার জল’ ও যৌথ প্রযোজনার ছবির ‘ব্ল্যাক’ মুক্তি পেলেই আপাদমস্তক নায়িকা খেতাব মিলে মিমে ললাটে। তবে ব্ল্যাকে কিছুটা স্বল্প বসনে উপস্থাপিত হওয়ার দরুন খানিকটা সমালোচিতও হন এ তারকা। গেল বছর বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে মুক্তি পায় মিম অভিনীত আলোচিত ছবি ‘সুইটহার্ট’। এতে চিত্রনায়ক রিয়াজ ও বাপ্পির উপস্থিতিতে নিজেকে দারুণভাবে মেলে ধরেছেন এ নায়িকা। এর পরই মুক্তি পায় অনন্য মামুন পরিচালিত ‘আমি তোমার হতে চাই’। এ ছবিটিও মিমকে বাণিজ্যিক ছবির নায়িকা হিসেবে উঁচুতে তুলে ধরে। তাই এখন মানহীন কাজের প্রতি কোনো আগ্রহ নেই মিমের মধ্যে। বছরে একাধিক ছবি মুক্তির চেয়ে ভালো মানের একটি ছবিতে অভিনয়ের পক্ষে এ তারকা। তাই তো অভিনয়ের ব্যাপারে ভেবেচিন্তেই নিজের সিদ্ধান্ত জানাচ্ছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘প্রায় প্রতি মাসেই একটি করে ছবিতে কাজের প্রস্তাব আসে। কিন্তু নিজের চরিত্রের সঙ্গে না যাওয়াতে সেগুলোতে অভিনয় করা হয় না। সংখ্যা বাড়ানোর প্রয়োজন নেই আমার। আমি ভালো কাজ দিয়ে সবার মাঝে বেঁচে থাকতে চাই।’ কিছুদিন আগে কলকাতায় মুক্তি পেয়েছে সৃজিত মুখার্জির ‘ইয়েতির অভিযান’। এখন ঢাকায় চলছে উত্তম আকাশের ‘আমি নেতা হব’ ছবির শুটিং। এ ছবিতেও তার নায়ক শাকিব খান। তাই বলা যায়, দেশের শীর্ষ নায়কের পাশে থেকে মিমের উড়ে চলা এখন শুধু সময়ের ব্যাপার।