• রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:৩৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম:

সেরা কলেজে এক দিন

আপডেটঃ : রবিবার, ৮ অক্টোবর, ২০১৭

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজগুলোর মধ্যে টানা দ্বিতীয়বার সেরার স্বীকৃতি পেয়েছ রাজশাহী কলেজ। সুখবর পেয়ে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রতিক্রিয়া কী, জানতে গত বৃহস্পতিবার হাজির হই কলেজ প্রাঙ্গণে।

রিপন মাহমুদ ও শারমিন জাহান—দুজনেই রাজশাহী কলেজের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী। কেমন করে এল এই সাফল্য, সে প্রসঙ্গেই কথা হচ্ছিল দুজনের সঙ্গে। রিপন বললেন, ‘আমাদের কলেজে যেদিন ইনকোর্স পরীক্ষা থাকে, সেদিনও ক্লাস করতে হয়। পরীক্ষার অজুহাতে ক্লাস বাদ যায় না।’ শারমিন জাহানের বক্তব্য, ‘শিক্ষার্থীদের ক্লাসমুখী করতে আরও নানা উদ্যোগ আছে এই কলেজে। নিয়মিত ক্লাস করলে তো আসলে ভালো ফল না করে উপায় নেই।’

শুধু পরীক্ষার ফলই নয়, আরও ৩১টি সূচকের ভিত্তিতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজগুলোর মধ্যে ‘র‍্যাঙ্কিং’ করা হয়েছিল। গত মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলন করে তথ্যটি জানিয়েছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হারুন–অর–রশিদ। তিনি জানান, ২০১৬ সালের পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে এই ক্রম তৈরি করা হয়েছে। এর আগে ২০১৫ সালে প্রথমবার যখন র‍্যাঙ্কিং করা হয়েছিল, তখনো প্রথম স্থানে ছিল রাজশাহী কলেজ।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ হবিবুর রহমান বললেন, ‘গত মাসে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রাজশাহীতে এসেছিলেন। অন্য কাজে এলেও তিনি রাজশাহী কলেজ ঘুরে গেছেন। এসেই বললেন, “সেরা কলেজটা দেখতে এলাম। আমি রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্র ছিলাম। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সেমিনার রুমটা দেখতে চাই।” শুধু রাষ্ট্রবিজ্ঞানেরই নয়, আরও বেশ কয়েকটি বিভাগের সেমিনার রুম ঘুরে গেছেন তিনি।’ এ বছর চতুর্থ বর্ষের ফলাফলটাও জানালেন হবিবুর রহমান। সমাজকর্ম বিভাগ থেকে ১৩৪ জন, হিসাববিজ্ঞান বিভাগ থেকে ১২৬ জন, ব্যবস্থাপনা বিভাগ থেকে ১২৩ জন, ইসলামের ইতিহাস বিভাগ থেকে ১২২ জন এবং অর্থনীতি ও ভূগোল বিভাগ থেকে ১১০ জন শিক্ষার্থী প্রথম শ্রেণি পেয়ে পাস করেছেন। কলেজের ৯১টি ক্লাসরুমে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর লাগানো হয়েছে। শিক্ষকদের দেওয়া হয়েছে ৪৫৫টি কম্পিউটার। তা ছাড়া বিশেষায়িত শ্রেণিকক্ষ (বিজ্ঞান ল্যাব, কম্পিউটার ল্যাব) রয়েছে ২৩টি।

কলেজ কর্তৃপক্ষ সব সময়ই ক্লাসে উপস্থিতির জন্য উৎসাহিত করেন। শিক্ষার্থীরা মনে করেন, এটাই তাঁদের বড় শক্তির জায়গা। ক্লাসে উপস্থিত থাকার ব্যাপারে সচেতনতা বাড়াতে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় ব্যানার লাগানো হয়েছে। নির্ধারিত সংখ্যক ক্লাসে উপস্থিত না থাকলে অভিভাবকসহ শিক্ষার্থীদের ডেকে ক্লাসে আসার পরামর্শ দেওয়া হয়।

সেরা কলেজ হওয়ার পেছনে কারণ আছে আরও। শিক্ষার্থীরা এখানে বিনা মূল্যে ওয়াই-ফাই সুবিধা পান। প্রশাসন ভবনের দোতলায় লাগানো হয়েছে এলইডি সাইনবোর্ড, যার মাধ্যমে কলেজের যাবতীয় তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। কলেজটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে বিভিন্ন জায়গায় ডাস্টবিন বসানো হয়েছে। গাছে গাছে লাগানো হয়েছে নামফলক। ধূমপানমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে কলেজ ক্যাম্পাস। পড়াশোনার পাশাপাশি সহশিক্ষা কার্যক্রমেও এগিয়ে রয়েছে রাজশাহী কলেজ। এখানে ২৮টি সংগঠন সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে সহশিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

সেরার স্বীকৃতি পাওয়ার পর রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের দায়িত্ব বেড়ে গেছে আরও। তাঁরা জানেন, মুকুট অর্জনের চেয়ে রক্ষা করা কঠিন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ