ব্যয়বহুল বিয়ে শব্দটা অপরিচিত নয়। বিয়ের আয়োজনে কোটি কোটি টাকা ঢালতেও অনেকে কার্পণ্য করেন না। কিন্তু ব্যয়বহুল বিবাহবিচ্ছেদ কখনো শুনেছেন? ভাবনায় পড়ে গেলেন তো? বিবাহবিচ্ছেদও ব্যয়বহুল হয়; বরং অনেক ক্ষেত্রে তো এটি বিয়ের থেকেও ব্যয়বহুল। বলিউডের কয়েকজন আলোচিত তারকার ব্যয়বহুল বিবাহবিচ্ছেদের কথা থাকছে এখানে। তাঁদের একেকজনের বিবাহবিচ্ছেদের পেছনে যত ব্যয় হয়েছে, তা দিয়ে কয়েকজন ব্যক্তি রীতিমতো ধুমধাম করে বিয়ের কাজ সেরে ফেলতে পারতেন।
সুজান খান ও হৃতিক রোশন
বিয়ের ১৪ বছর পর হৃতিক-সুজানের সংসার ভেঙে যাওয়ায় অনেকেই অবাক হয়েছিলেন। আজ অবধি তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদের আসল কারণ জানা যায়নি। অন্য সব দম্পতির মতো বিবাহবিচ্ছেদের পর তাঁরা মুখ দেখাদেখি বন্ধ করেননি। দুজন এখনো একে অন্যের সঙ্গে পরিবারের সদস্যের মতোই আচরণ করেন। দুই ছেলেকে নিয়ে একসঙ্গে নানা জায়গায় ঘুরতেও যান। কিন্তু তাই বলে বিবাহবিচ্ছেদের পর নিজের খোরপোশের টাকা আদায় করতে ভোলেননি সুজান। সাবেক স্বামীর কাছে তিনি ভরণপোষণের জন্য ৪০০ কোটি রুপি দাবি করেছিলেন। হৃতিক অবশ্য পরে তাঁকে বুঝিয়ে-শুনিয়ে ৩৮০ কোটি রুপি নিতে রাজি করান।
কারিশমা কাপুর ও সঞ্জয় কাপুর
বলিউড তারকা কারিশমা কাপুরের সঙ্গে ২০০৩ সালে বিয়ে হয় সঞ্জয় কাপুরের। পারিবারিক বন্ধু সঞ্জয়ের সঙ্গে বিয়ের কয়েক বছর পর থেকেই তাঁদের সম্পর্ক ভালো যাচ্ছিল না। এরপর কারিশমা আলাদা থাকতে শুরু করেন। আনুষ্ঠানিকভাবে এই দম্পতির বিচ্ছেদ ঘটে গত বছর। ব্যবসায়ী সঞ্জয়ের কাছ থেকে বিচ্ছেদের পর ভরণপোষণের জন্য সাত কোটি রুপি আদায় করতে পেরেছেন লোলো (কারিশমার ডাকনাম)।
সঞ্জয় দত্ত ও রিয়া পিল্লাই
১৯৯৮ সালে ভালোবেসে রিয়া পিল্লাইয়ের সঙ্গে ঘর বেঁধেছিলেন বলিউড তারকা সঞ্জয় দত্ত। এটি ছিল সঞ্জয়ের দ্বিতীয় বিয়ে। ২০০৫ সালে রিয়া আর সঞ্জয়ের আনুষ্ঠানিক বিচ্ছেদ হয়। ছাড়াছাড়ির পর আনুষ্ঠানিক বিচ্ছেদ হওয়ার আগ পর্যন্ত সঞ্জয় তাঁর স্ত্রীর কেনাকাটা ও মুঠোফোনের বিল বহন করতেন বলে গুজব আছে। এরপর রিয়া টেনিস তারকা লিয়েন্ডার পেজের সঙ্গে প্রেম করেন। লিয়েন্ডারের সঙ্গে একটি সন্তান জন্ম দেওয়ার পরও সঞ্জয়কে তাঁর সাবেক স্ত্রীর হাতখরচ দিতে হতো। রিয়াকে আট কোটি রুপি ও একটি দামি গাড়ি দিয়ে পরে এই ঝামেলার সমাপ্তি ঘটান সঞ্জয়।
প্রভু দেবা ও রমলাথ
দক্ষিণ ভারতীয় চিত্রতারকা প্রভু দেবার বিবাহবিচ্ছেদ হয় ২০১১ সালে। সাবেক স্ত্রী রমলাথকে প্রভু তালাকের পর ভরণপোষণের জন্য ১০ লাখ রুপি দেন। এটুকু পড়েই যাঁরা ভ্রু কুঁচকে ভাবছেন, এ আর এমন কী? সাধারণ মানুষের পক্ষেও এই খোরপোশ দেওয়া সম্ভব। তাঁরা জেনে রাখুন, বিচ্ছেদের পর প্রভু দেবা রমলাথকে দিয়েছিলেন দুটি গাড়ি ও এক বিশাল ভিলা বাড়ি, যাঁর দাম ২০ থেকে ২৫ কোটি রুপি।
সাইফ আলী খান ও অমৃতা সিং
সাইফ আলী খান বয়সে অমৃতা সিংয়ের চেয়ে অনেক ছোট। তাই তাঁদের প্রেম আর বিয়ে কোনোটাই মেনে নিতে পারেনি সাইফের পরিবার। মা-বাবার অমতেই সাইফ বিয়ে করেন অমৃতাকে। তাঁদের সংসারে দুই সন্তান সারা ও ইব্রাহিম। বিয়ের পর অমৃতা অভিনয় ছেড়ে দিয়েছিলেন। সাইফও তখন বলিউডে ফ্লপ নায়ক হিসেবেই পরিচিত। খুঁটিনাটি সমস্যা নিয়ে ধীরে ধীরে এই দুজনের সম্পর্কে তিক্ততা দিন দিন বাড়তে থাকে। ১৩ বছরের সংসার রূপ নেয় বিবাহবিচ্ছেদে। তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদকে এখন পর্যন্ত বলিউডের অন্যতম ব্যয়বহুল বিবাহবিচ্ছেদ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যদিও এর সঠিক পরিমাণ কারও জানা নেই। কিন্তু সবাই জানেন, তালাকের সময় সাইফের সঙ্গে অমৃতার চুক্তি হয় যে সাইফের মোট সম্পদের অর্ধেকের মালিক হবেন অমৃতা। ইন্ডিয়া টাইমস