ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ
কম্পিউটার বিজ্ঞানী ও অধ্যাপক
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়
আমাদের শিক্ষা খাতে সরকার পর্যাপ্ত বিনিয়োগ করতে পারে না। শিক্ষায় বিনিয়োগের জন্য যে অঙ্কের সুপারিশ করা হয়, তার অধিকাংশই বিনিয়োগ করা হয় না। তাই বলা যায়, শিক্ষা খাতে বিনিয়োগ অপর্যাপ্ত। আমাদের দেশকে সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার যুদ্ধে সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হলো মানবসম্পদের উন্নয়ন। এছাড়া উন্নয়নের আর কোনো পথ নেই। আমাদের নানা সীমাবদ্ধতা আছে। এ দেশে ভূমির পরিমাণ কম। প্রাকৃতিক বা খনিজ সম্পদ, তেল-গ্যাস ইত্যাদি সীমিত পরিমাণে আছে। সবচেয়ে বেশি যা আছে, তা হলো জনসংখ্যা। এই জনসংখ্যাকে আমরা বলি মানবসম্পদ। এর উন্নয়নে সবচেয়ে জরুরি যে উপাদান, তা হলো শিক্ষা। সঠিক ও কর্মমুখী শিক্ষার মাধ্যমে এই মানবসম্পদকে কাজে লাগালেই আমাদের দেশ প্রগতির পথে এগিয়ে যাবে।
পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোর দিকে তাকালে নানাবিধ বিষয় আমাদের চোখে ধরা পড়ে। যেমন জাপান। তারা প্রযুক্তির দিক দিয়ে খুব সমৃদ্ধ। এই সমৃদ্ধির পিছনে কারণ হলো তাদের মানুষগুলো দক্ষ। আমাদেরকে এগোতে হলে, দক্ষ হতে হলে আমাদের শিক্ষার মানও বাড়াতে হবে। প্রচলিত পাঠদানব্যবস্থার পাশাপাশি এই শিক্ষা হতে পারে অনলাইন স্কুলিং, ভিডিও কনফারেন্সসহ শ্রেণিকক্ষে মাল্টিমিডিয়া ব্যবহারের মাধ্যমে। কস্ট-অ্যাফেক্টিভ, অর্থাত্, সাশ্রয়ী উপায়ে পাঠদানের অনেক ব্যবস্থা রয়েছে এবং এসব প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শহর ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে একই মানের শিক্ষা পৌঁছে দেওয়া সম্ভব। আমাদের চার কোটি শিক্ষার্থীর বিপরীতে সব জায়গায় দক্ষ ও যোগ্য শিক্ষক নেই। অনেক জায়গায় শিক্ষকের সংকট রয়েছে। প্রযুক্তিতে ভর করে স্কুলে পাঠদান করলে এই সংকট মোকাবিলা করা খুব সহজ।
অনলাইন স্কুল নিয়ে কথা হচ্ছে। এটি খুব চমত্কার ধারণা। ওয়েবসাইটের মাধ্যমে নানাধরনের কন্টেন্ট ছড়িয়ে দেওয়া। গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞানসহ বিভিন্ন বিষয়ের কঠিন অধ্যায়গুলোকে সহজ ও প্রাঞ্জল ভাষায় তুলে ধরে ক্লাস নেওয়া যায় অনলাইন স্কুলে। এটি শিক্ষার্থীদের জন্য খুবই উপযোগী। পাশাপাশি মডেল টেস্ট, কুইজও থাকছে। আজকাল ইন্টারনেট সহজলভ্য হচ্ছে, ফলে এই সুবিধাটা একটা শহরের স্কুলের শিক্ষার্থীরা যেভাবে পাবে, তেমনি গ্রামের স্কুলেও পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে।
একটা বিষয়ে লক্ষ করতে হবে, যিনি ক্লাস নেবেন, তিনি যেন একজন নামী বা দক্ষ শিক্ষক হন। হতে পারেন ভিকারুন্নেসা বা নটরডেম বা হলিক্রসের একজন শিক্ষক। তিনি শিক্ষা উপকরণ তৈরি করে দেবেন। যেমন একজন ভালো শিক্ষক বা নামী শিক্ষক একটা ক্লাস নিলেন। সেটা ভিডিও করে অনলাইন স্কুলের মাধ্যমে যেকোনো জায়গায় পৌঁছে দেওয়া হলো। এতে করে একজন শিক্ষকের ক্লাস করতে পারবে হাজার-হাজার শিক্ষার্থী।
তাছাড়া বাড়িতে বসেও যেকোনো বিষয়ের উপর মানসম্মত পাঠ গ্রহণ করতে পারবে আমাদের শিক্ষার্থীরা।
আমরা এখন প্রযুক্তির যুগে বাস করছি। প্রযুক্তিকে ব্যবহার করেই আমাদেরকে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। সাশ্রয়ী উপায় খুঁজে বের করে বিভিন্ন সুবিধা নিতে হবে। প্রযুক্তির উত্কর্ষের এ যুগে শিক্ষাগ্রহণে অনলাইন স্কুল অত্যন্ত চমত্কার একটি মাধ্যম। একে পরিকল্পনামাফিক কাজে লাগাতে হবে।
বাংলায় মুক্ত জ্ঞানের প্রকাশ ‘শিক্ষক ডটকম’
গতানুগতিক নিয়মের শিক্ষাব্যবস্থা যেন পাল্টে যাচ্ছে। তথ্য ও প্রযুক্তির কল্যাণে বর্তমানে নানা বিষয়ে শিক্ষা অর্জন করা সম্ভব হচ্ছে ঘরে বসেই। ডিজিটাল শিক্ষাব্যবস্থার মাধ্যমে দ্রুত যুগোপযোগী বিভিন্ন বিষয় জানতে পারছে একজন শিক্ষার্থী। আর এই শিক্ষা প্রদানে কাজ করছে বেশ কিছু অনলাইন শিক্ষা পোর্টাল। এমনই একটি অনলাইন শিক্ষা পোর্টাল ‘শিক্ষক ডটকম’। শিক্ষক ডটকম বাংলা ভাষায় মুক্ত জ্ঞানের প্রকাশ এবং বিকাশের জন্য একটি অনলাইন প্লাটফর্ম। দেশের সাধারণ মানুষের চাহিদা বিবেচনা করেই তৈরি করা হয়েছে এই শিক্ষামূলক ইউনিভার্সিটি অব আলাবামা অ্যাট বার্মিংহামের সহকারী অধ্যাপক ড. রাগিব হাসানের হাত ধরেই ২০১২ সালের আগস্টে যাত্রা শুরু করে শিক্ষক ডটকম। এটি পরিচালিত হয়ে থাকে সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাসেবার ভিত্তিতে। শিক্ষক ডটকমে বাংলা ভাষায় নানা বিষয়ের উপর অনলাইন কোর্স দেওয়া থাকে। শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে কম্পিউটার বিজ্ঞান, রসায়ন, জ্যোতিবিজ্ঞান, পদার্থ, প্রকৌশলসহ নানা বিষয় বাংলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এখানে। উপযোগী বিষয়ে শিক্ষা প্রদানে ও দেশের স্থানীয় পর্যায়ে শিক্ষাকে পৌঁছে দেওয়ার অন্যতম মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে এই শিক্ষক ডটকম। তাছাড়া বিশ্বের যেকোনো প্রান্ত থেকেই শিক্ষক হিসেবে তার পড়াশোনার উপকরণ বা লেকচার শিক্ষার্থীদের মাঝে পৌঁছে দিতে পারেন এই ই-শিক্ষার মাধ্যমে। প্রতিষ্ঠানটি বিজ্ঞান, প্রকৌশল শিক্ষাসহ অন্যান্য বিষয়ে শিক্ষা প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখায় এরমধ্যে গুগল রাইজ অ্যাওয়ার্ড, ডয়চে ভেলে, গুগল, ইন্টারনেট সোসাইটি কমিউনিটি গ্রান্ট ও আইএসআইএফ পুরস্কার অর্জন করছে। অনলাইন ঠিকানা http://shikkhok.com/
অনলাইনে তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে শিখতে ‘দ্বিমিক কম্পিউটিং স্কুল’
বাংলা ভাষায় তথ্যপ্রযুক্তির জ্ঞান ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে তাহমিদ রাফি ও তামিম শাহরিয়ারের প্রচেষ্টায় যাত্রা শুরু করে ইন্টারনেটভিত্তিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দ্বিমিক কম্পিউটিং স্কুল। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ইচ্ছা ও আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও মানসম্মত শিক্ষা মেলে না, সেই অভাব পূরণ করতে প্রোগ্রামিং ও কম্পিউটার বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সাজানো হয়েছে দ্বিমিক কম্পিউটিং স্কুলের কোর্সগুলো। স্কুলটি একজন দক্ষ সফটওয়্যার বা ওয়েব ডেভেলপার হওয়ার জন্য যুগোপযোগী ও প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো শিখতে যা যা প্রয়োজন তা অনলাইন কোর্সের মাধ্যমে উপস্থাপন করে। দেশের শীর্ষ পর্যায়ের সফটওয়্যার প্রকৌশলী ও ওয়েব ডেভেলপারদের সহযোগিতায় সম্পূর্ণ বাংলায় অনলাইন কোর্সগুলো তৈরি করা হয়েছে। কোর্সগুলোতে ভিডিও লেকচারের পাশাপাশি কুইজ, অ্যাসাইনমেন্ট ও পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। ‘প্রোগ্রামিংয়ে হাতে খড়ি’, ‘ওয়েব কনসেপ্টস’, ‘বিচ্ছিন্ন গণিত’ (ডিসক্রিট ম্যাথমেটিকস্), ‘নেটওয়ার্কিংয়ে হাতেখড়ি’, সি, সি প্লাস প্লাস, জাভা, পাইথন, পিএইচপি, জাভাস্ক্রিপ্ট ইত্যাদি নানা বিষয়ের উপর অনলাইন শিক্ষা দিয়ে থাকে দ্বিমিক কম্পিউটিং স্কুল। তাছাড়া ডাটা স্ট্রাকচার, অ্যালগরিদম, ডিজিটাল লজিক, ডাটাবেজ, ওয়েব ও মোবাইল সফটওয়্যার অ্যাপ্লিকেশন তৈরিসহ বিভিন্ন ধরনের কোর্স পরিচালনা করছে এই প্রতিষ্ঠানটি। এই ই-শিক্ষাব্যবস্থায় কোর্সগুলো এমনভাবে বাছাই ও তৈরি করা হয়েছে যেন এখান থেকে কোর্সগুলো সঠিকভাবে সম্পন্ন করে কাজ করার যোগ্যতা অর্জন করা যায়। শুধু তাই নয়, দ্বিমিক কম্পিউটিং স্কুলের মাধ্যমে শিক্ষা অর্জন করে নিজ উদ্যোগে আউটসোর্সিং করার সুযোগও তৈরি হবে। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটি নিয়মিত আয়োজন করছে ‘প্রোগ্রামিং আড্ডা’। তরুণরা এ উন্মুক্ত আড্ডায় প্রকৌশল, কম্পিউটার বিজ্ঞান, প্রোগ্রামিংসহ নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। অনলাইন ঠিকানা https://goo.gl/QLr7fC
‘টেন মিনিট স্কুল’-এ মাত্র
১০ মিনিটেই পড়া শেষ
অনলাইনে বিনামূল্যে শিক্ষা কার্যক্রম নিয়ে অনেক আগে থেকেই কাজ করছে কিছু উদ্যামী তরুণ। শিক্ষা কার্যক্রমের এই জায়গাটিকে তারা নাম দিয়েছিল ‘টেন মিনিট স্কুল’। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শেষ বর্ষের ছাত্র থাকা অবস্থায় আয়মান সাদিকের হাত ধরে শুরু হয় টেন মিনিট স্কুুলের যাত্রা। উদ্যোগটা দারুণ ছিল বলেই বন্ধুরাও এসে যোগ দেন তার সঙ্গে। জুনিয়র, সিনিয়র ব্যাচমেটরাও আয়মান সাদিকের সঙ্গে কাজ করতে রাজি হন। শুরুটা সেখান থেকেই, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া অসংখ্য উদ্যমী তরুণ-তরুণী যোগ দিয়েছেন তার এই কার্যক্রমে। টেন মিনিট স্কুল নামের এই অনলাইন শিক্ষাকার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে এসএসসি, এইচএসসি থেকে শুরু করে ঢাকা, খুলনা, চট্টগ্রামসহ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ইউনিট, আইবিএ, মেডিক্যাল ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতির বিষয়। এছাড়া বিসিএস, ব্যাংক, সরকারি চাকরির পরীক্ষা প্রস্তুতির পাশাপাশি বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য যাওয়ার লক্ষ্যে IELTS, SAT, G RE, GMAT, TOEFL-এর প্রস্তুতিও নেয়া সম্ভব এই অনলাইন স্কুলের মাধ্যমে। স্কুলটির প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো, যেকোনো একটি বিষয়কে মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যেই আয়ত্ত করার কৌশল বের করে দেওয়া হয়। এ কারণেই এই অনলাইন স্কুলটির নাম ‘টেন মিনিট স্কুল’। আর এ শিক্ষা প্রদান করা হয় বিনামূল্যে। ১০ মিনিটের ছোট ছোট কুইজ পরীক্ষাও রয়েছে এখানে। পরীক্ষা শেষে হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই নম্বর প্রদান করা হয়। যার ফলে উক্ত বিষয়ের উপর শিক্ষার্থীর কতটুকু দখল আছে তা জানা যায় এবং কোথায় কোথায় দুর্বলতা আছে তাও জানা যায়। এর পাশাপাশি অনলাইন স্কুলটি উপযুক্ত দিকনির্দেশনাও দিয়ে থাকে। পাশাপাশি ১০ মিনিট স্কুল ব্যবহারকারী অন্য বন্ধুদের সঙ্গে তুলনা করে শিক্ষার্থী কতটুকু এগিয়ে বা পিছিয়ে আছে তা জানিয়ে দেয়। ওয়েবসাইটে সকল বিষয়ের প্রস্তুতির জন্য টিউটোরিয়াল ও ইনফোগ্রাফিকের ব্যবস্থা রয়েছে। ব্লগ ও মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমেও ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ১০ মিনিট স্কুলের কার্যক্রম। অনলাইন ঠিকানা www.10minuteschool.com
গণিতভীতি দূর করতে ‘গণিত পাঠশালা’
সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে গণিতের প্রতি ভয় দূর করতে গণিতের খুঁটিনাটি নিয়ে চালু হয়েছে ওয়েবসাইটটি। গণিত পাঠশালা ডটকম নামের সাইটটিতে গণিতকে মজার বিষয় হিসেবে উপস্থাপনের চেষ্টা করা হয়েছে। সাইটটির মূল ফিচারে মূল পাতা, গণিত নিয়ে মজার কিছু, গণিতের ইতিহাস, জীবনী, থিওরেম পরিচিতি, প্রতিবেদন, বই-পুস্তক, অন্যান্য, টিউটোরিয়াল নামে বিভাগ রয়েছে। তবে গণিত আগ্রহীদের কাছে সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিভাগটি হলো গণিত নিয়ে মজার কিছু। এতে গণিতের বিচিত্র মিল খুঁজতে গণিত জাদু, গণিত নিয়ে কৌতুক, মজার কিছু সমস্যা, সংখ্যার কারুকাজ, গণিত নিয়ে ধাঁধা ও বেশকিছু মজার গেম রয়েছে। চাইলে এখান থেকে জানা যাবে গণিতের অজানা রহস্যময় ঘটনা। গণিতবিদদের জীবনে ঘটে যাওয়া নানা ঘটনা নিয়ে সাজানো হয়েছে জীবনী বিভাগটি। কঠিন সব গাণিতিক সূত্রকে সহজ করে শেখার জন্য থিওরেম পরিচিতি দারুণ ভূমিকা রাখতে পারে। হাতে কলমে গণিতের মারপ্যাঁচপূর্ণ কিছু পর্বকে সহজে আয়ত্তে আনতে কাজে আসবে টিউটোরিয়াল ফিচার। বই-পুস্তক বিভাগে পাওয়া যাবে গণিত নিয়ে আলোচিত ই-বুক। ওয়েবসাইটটির মূল ফিচারে গণিতের ইতিহাস, গণিত নিয়ে মজার কিছু, গণিতবিদদের জীবনী, বইপুস্তক, টিউটোরিয়ালসহ বিভিন্ন অংশ রয়েছে। হাতেকলমে গণিত শেখার জন্য দারুণ উপযোগী এই ফিচারগুলো। এছাড়া হোমপেজে গণিত শিক্ষক চমক হাসানের কিছু ভিডিও লেকচার দেখতে পাওয়া যায়। গণিতভীতি দূর করে গণিতকে সহজভাবে রপ্ত করাতে দারুণ উপযোগী এই অনলাইন বিদ্যালয়। অনলাইন ঠিকানা www.gonitpathshala.org
সহজ ও মজাদার উপায়ে বিজ্ঞান বুঝতেই ‘বিজ্ঞানযাত্রা’
খ্রিষ্টপূর্ব ১৬০০ থেকে ১৪০০ খিষ্টাব্দের মধ্য সময়ে বিজ্ঞান বিষয়টির সূচনা হয়। অন্য সব মহাকাব্যের মতোই বিজ্ঞানের গল্পও শুরু হয়। মানুষ যখন থেকে চিন্তা করার সক্ষমতা অর্জন করেছে, তখন থেকেই নিরবচ্ছিন্নভাবে প্রকৃতিকে বুঝতে চেয়েছে, ব্যাখ্যা করতে চেয়েছে। মানুষের সেই প্রচেষ্টার ধারাবাহিকতায় ধীরে ধীরে আমরা আজকের বিজ্ঞানসম্মত চিন্তাগুলোর ফল পাচ্ছি। বিজ্ঞানের সব ধারণা ও নতুন নতুন সব আবিষ্কার সম্পর্কে ধারণা দিতেই অনলাইনে ‘বিজ্ঞানযাত্রা’ নামে একটি ওয়েবসাইট কাজ করছে। বিজ্ঞানযাত্রা প্রতিষ্ঠা করেন ফরহাদ হোসেন মাসুম। বিজ্ঞানের নতুন নতুন ঘটনা জানতে ও আপডেট থাকতে এবং সহজ ও মজাদার উপায়ে বুঝতেই বিজ্ঞান শিক্ষার এই ওয়েবসাইটটি চালু করা হয়। বিজ্ঞানযাত্রার প্রতিষ্ঠাতা ফরহাদ হোসেন মাসুম বলেন, ‘আমাদেরকে দুটো জিনিস মনে রাখতে হবে। এক, এই যাত্রা সম্ভব হয়েছে পরিচিত ধারণার বাইরে বের হয়ে নতুন চিন্তা করতে সক্ষম হওয়া ব্যক্তিদের জন্য। আমরা তাদেরকে শ্রদ্ধা জানাই। আর দুই, এ যাত্রা শেষ হয়ে যায়নি। একজনের পর একজন নতুন চিন্তার মশাল বহন করেছেন বলেই আজ আমরা এ পর্যন্ত আসতে পেরেছি। আমাদের প্রজন্মকে আরও বেশি করে বিজ্ঞান নিয়ে ভাবতে হবে, আরও বেশি করে বিজ্ঞানচর্চা করতে হবে। সেই চিন্তার জায়গা থেকেই ‘বিজ্ঞানযাত্রা’র সূত্রপাত। আমাদের চেষ্টা রয়েছে একদম সহজ ভাষায় বিজ্ঞানের বিভিন্ন দিক তুলে ধরার জন্য, যাতে বিজ্ঞানের প্রতি তরুণ সমাজ আগ্রহী হয়। ছোটবেলা থেকে বিজ্ঞানের সংস্পর্শে থাকতে থাকতে একসময় ওরাই বড় বিজ্ঞানী হয়ে উঠবে। পাশাপাশি চেষ্টা করে যাব, কীভাবে চিন্তা করতে হবে, সেই রাস্তাটার সন্ধান দিতে।’
বিজ্ঞানযাত্রা সব বয়সী মানুষের কাছেই সমানভাবে উপভোগ্য হবে বলে মনে করেন ফরহাদ হোসেন মাসুম। এবং তারা নিজ নিজ অবস্থান থেকে বিজ্ঞানের এই যাত্রাকে শক্তিশালী করবেন বলেও মনে করেন তিনি।