শারদীয় দুর্গাপূজার বিজয়া দশমী আজ। দেবী দুর্গার প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব।
মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) দশমীর প্রতিমা বিসর্জনের দিন সকালেও পূজা অর্চনায় নারীদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
সনাতন ধর্মালম্বীদের তথ্য মতে, শুক্রবার (২০ অক্টোবর) মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে ঘোড়ায় চড়ে দেবী দুর্গার আবির্ভাব হলেও পরিসমাপ্তি ঘটবে মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) বিজয়া দশমীর প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে।
আজ সকাল ১০টার কিছুটা আগে থেকেই দশমী বিহিত পূজা শুরু হয়। পূজা শেষে দর্পণ বিসর্জন দেওয়া হবে। পরে স্থানীয় আয়োজনে সন্ধ্যার কিছুটা পূর্বে বিজয়া শোভাযাত্রাসহ প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হবে। প্রতিমা বিসর্জন শেষে ভক্তরা শান্তিজল গ্রহণ করবেন।
সম্মিলিতভাবে বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে ও পূজা-অর্চনার মন্ত্র পাঠের মধ্য দিয়ে শুরু হবে বিজয়ার শোভাযাত্রা।
এর আগে সোমবার (২৩ অক্টোবর) ছিল শারদীয় দুর্গোৎসবের মহানবমী। মা দেবী দুর্গাকে বিদায়ের আয়োজনে বিষণ্ণ মন নিয়েই উৎসবে মেতেছিলেন হিন্দু ধর্মাবলম্বী নারী-পুরুষ। দিনটির প্রধান আকর্ষণ ছিল মণ্ডপে মণ্ডপে আরতি প্রতিযোগিতা। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে বিভিন্ন পূজামণ্ডপ ঘুরে ঘুরে দেখা ও পূজা অর্চনা করায় ছিল তাদের মূল লক্ষ। ৫ দিন দিনব্যাপী এই শারদ উৎসবের জন্য আরও একটি বছর সনাতন ধর্মালম্বী সকলকে অপেক্ষা করতে হবে।
গেটে ও মণ্ডপের ভেতরে নানা রংয়ের সাজসজ্জা ও আলোকসজ্জায় সন্ধ্যা ও রাতকে উজ্জ্বল করে ভক্তরা মেতে উঠেছিলেন নাচ, গান ও আরতি নিবেদনে। সেই সঙ্গে দিনভর পুরোহিতদের চণ্ডী পাঠ। মণ্ডপে মণ্ডপে ভক্তদের কীর্তন বন্দনা। সকাল থেকে পূজা অর্চনা শেষে যথারীতি পুষ্পাঞ্জলি, প্রসাদ বিতরণ ও আরতি করা হয়।
এবছর মেহেরপুর জেলায় মোট ৪৩টি পূজামণ্ডপ স্থান পেয়েছে। তার মধ্যে মেহেরপুর সদরে ১৪টি, মুজিবনগর উপজেলায় ৭টি ও গাংনী উপজেলায় ২২টি।
গাংনী কেন্দ্রীয় পূজা মণ্ডপের সভাপতি শ্রী সুশান্ত কুমার পাত্র জানান, এবার মা দুর্গা এসেছে ঘোড়ায় চড়ে ফিরেও যাবেন ঘোড়ায় চড়ে। তবে ভক্ত পূজারীদের দেহের মধ্যে অশুভ শক্তির নিয়ন্ত্রণ, সর্বাঙ্গীণ মঙ্গল ও বিশ্ব শান্তির বার্তা দিয়েছেন।
পূজামণ্ডপগুলোতে উৎসুক জনতাসহ সনাতন ধর্মালম্বী নারী পুরুষের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ করা গেছে। পূজামণ্ডপের প্রধান সড়কের উভয় পাশে বসেছে মেলা। ধর্ম যার যার উৎসব সবার সকল ধর্মের নারী পুরুষের উপস্থিতি সেটাই প্রমাণ করে। সন্তানের আবদার পূরণ করতে মেলার দোকানগুলোতে মুসলিম নারী-পুরুষের উপস্থিতিও ছিল চোখে পড়ার মতো। হাজার হাজার ভক্ত, পূজারি এবং দর্শনার্থীরা মণ্ডপগুলোতে ঘুরে ঘুরে প্রতিমা দর্শন করেছেন।