• মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৪০ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:

ফাইন্যান্স কোম্পানি আইন-২০২৩ এর চূড়ান্ত অনুমোদন

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : মঙ্গলবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২৩
ছবি: সংগৃহীত

ফাইন্যান্স কোম্পানি আইন-২০২৩ এর চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সোমবার (২৩ অক্টোবর) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ফাইন্যান্স কোম্পানি আইন, ২০২৩ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

নতুন ফাইন্যান্স কোম্পানি আইন অনুসারে, তিনটি কারণে কাউকে ইচ্ছেকৃত ঋণখেলাপি হিসেবে গণ্য করা যাবে।

দুই মাসের মধ্যে অর্থপরিশোধ না করলে ইচ্ছেকৃত ঋণখেলাপির বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করা যাবে। এছাড়া তিনি বিদেশ যেতে পারবেন না, ট্রেড লাইসেন্স নিষেধাজ্ঞাও থাকবে।

যে তিনটি কারণে কাউকে ইচ্ছেকৃত ঋণখেলাপি ঘোষণা করা যাবে সেগুলো হলো

সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যদি সময়মতো ঋণ পরিশোধ না করেন।
যে কারণে দেখিয়ে ঋণ দিয়েছেন সেই কারণে ব্যবহার না করে যদি অন্য কারণে ব্যবহার করেন।
যেসব কাগজপত্র জমা দিয়ে ঋণ নিয়েছিলেন পরে সেগুলো যদি ভুয়া বলে চিহ্নিত হয়।
বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, বিদ্যমান আইনে একজন ব্যক্তি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কত শতাংশ শেয়ার ধারণ করতে পারবেন এটি বেঁধে দেওয়া ছিল না। এখন বলা হচ্ছে, একই পরিবার থেকে ১৫ শতাংশের বেশি শেয়ার নেওয়া যাবে না।

তিনি বলেন, বর্তমান আইনে পরিচালকদের সংখ্যা নির্দিষ্ট ছিল না। এখন এটিকে দুইজন স্বতন্ত্র এবং সব মিলিয়ে ১৫ জন পরিচালক থাকতে পারবেন। তবে একটি পরিবার থেকে শেয়ারের পরিমাণ ৫ শতাংশের কম হলে একজন পরিচালক থাকবেন। পাঁচ শতাংশের বেশি হলে সর্বোচ্চ দুজন থাকতে পারবেন। এক পরিবার থেকে দুজনের বেশি পরিচালক থাকতে পারবেন না।

 

তিনি আরও বলেন, বিদ্যমান আইনে পরিচালকের কোনো মেয়াদ বেঁধে দেওয়া ছিল না। এখন পরিচালকের মেয়াদ তিন বছর করা হচ্ছে। পরপর তিন মেয়াদে পরিচালক থাকতে পারবেন।

ব্যাংক সাবসিডিয়ারি কোম্পানি তৈরি করতে পারে। নতুন আইনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়া আর্থিক প্রতিষ্ঠান সাবসিডিয়ারি কোম্পানি করতে পারবে না।

সুদ মওকুফের বিষয়ে বিদ্যমান আইনে কোনো নির্দেশনা ছিল না। এখন বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি ছাড়া সুদ মওকুফ করা যাবে না। সম্পূর্ণ সুদ কখনো মওকুফ করা যাবে না। কস্ট অব ফান্ড অবশ্যই আদায় করতে হবে।

মাহবুব হোসেন বলেন, কিছু কিছু ক্ষেত্রে জরিমানা ও শাস্তি বাড়ানো হয়েছে। লাইসেন্সের শর্ত না মানার শাস্তি ১০ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা করা হচ্ছে। বিধিবিধান লঙ্ঘন করে ঋণ দিলে বিদ্যমান আইনে প্রতিষ্ঠানকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা দিতে হয়। এটিকে সংশোধন করে বলা হয়েছে, ১০ লাখ টাকা বা ছাড়কৃত ঋণের বিদ্যমান স্থিতির মধ্যে যেটি বেশি সেটি প্রত্যেক পরিচালক ও কর্মকর্তাকে জরিমানা হিসেবে দিতে হবে।

যখন একজন ব্যক্তি ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপি হবেন, তখন বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের একটা তালিকা রাখবে। তালিকা হওয়ার পর যখন তারা নোটিশ পাবেন, সেই নোটিশ পাওয়ার দুই মাসের মধ্যে ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি ঋণগ্রহীতার কাছে তার প্রাপ্য অর্থ পরিশোধে ব্যর্থ হলে, সংশ্লিষ্ট ফাইন্যান্স কোম্পানি ক্ষেত্রমতে তার পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন ক্রমে তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করবে এবং এই রূপ মামলা সংশ্লিষ্ট ঋণ বা অগ্রিম বা পাওনা আদায়ের ক্ষেত্রে অর্থ ঋণ আদালতের কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করবে না। মানে তার বিরুদ্ধে সহসা মামলা করা যাবে।

মাহবুব হোসেন আরও বলেন, যখন তিনি ইচ্ছেকৃত ঋণখেলাপির তালিকাভুক্ত থাকবেন, তখন বাংলাদেশ ব্যাংক সংশ্লিষ্ট সংস্থার কাছ থেকে ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপির তালিকা প্রস্তুত করতে পারবে এবং বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা, ট্রেড লাইসেন্সে নিষেধাজ্ঞা, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি), যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মগুলোর নিবন্ধকের (আরজেএসসি) কাছ থেকে কোম্পানি নিবন্ধনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারবে। মানে যখন সে ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি হিসেবে চিহ্নিত থাকবেন পরবর্তী কোনো বিজনেস করার ক্ষেত্রে অথবা বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা থাকবে।

দুই মাসের মধ্যে যদি উনি শোধ না করেন সরাসরি ফৌজদারি মামলা করা যাবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ