• বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১১:০২ অপরাহ্ন

রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরা অসম্ভব :জাতিসংঘ

আপডেটঃ : বৃহস্পতিবার, ১২ অক্টোবর, ২০১৭

রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর খুবই পরিকল্পিত, সমন্বিত এবং পদ্ধতিগতভাবে নিষ্ঠুরতা চালাচ্ছে মিয়ানমার। এর ফলে রোহিঙ্গা মুসলিমরা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিচ্ছে। এই নিষ্ঠুরতার মাধ্যমে মিয়ানমার বুঝিয়ে দিচ্ছে, তাদের কেবল থেকে দেশ থেকে বের করাই নয়, তারা যাতে দেশে আর না ফিরতে পারে। আর রোহিঙ্গাদের ওপর নীপিড়ন গত ২৫ আগষ্টের আগেই শুরু হয়। অথচ মিয়ানমার সরকার বলে আসছে, ২৫ আগষ্ট পুলিশ ও সেনা পোস্টে আরসার হামলার পরই অভিযানে নামে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। গতকাল বুধবার জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়।

 

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে জাতিসংঘ। সংস্থাটির মানবাধিকার অফিসের একটি দল কক্সবাজারে অবস্থান করা রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলেছে। এসব রোহিঙ্গারা গত ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে ২৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বাংলাদেশে এসেছে। রোহিঙ্গাদের ওপর কেবল নিরাপত্তা বাহিনীই নির্যাতন চালাচ্ছে না, রাখাইনের বৌদ্ধদের একটি অংশও তাদের ওপর অত্যাচার করছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। ৬৫ জন রোহিঙ্গা মুসলিমের সাক্ষাত্কার নিয়েছে জাতিসংঘ।প্রতিবেদনে জাতিসংঘ মানবাধিকার অফিসের প্রধান জেইদ আল হুসেইনের বরাত দিয়ে বলা হয়, রোহিঙ্গাদের রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক অধিকারকে অস্বীকার করছে মিয়ানমার। তারা ষড়যন্ত্র করেই এটা করছে যাতে রোহিঙ্গারা আর মিয়ানমারে ফিরতে না পারে। রিপোর্টে নির্যাতনের ফলে রোহিঙ্গাদের মধ্যে যে ভয়, শারীরিক এবং মানসিক চাপ সৃষ্টি হয়েছে তার ভবিষ্যত প্রভাবের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। সাড়ে ৫ লাখের বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। যারা এখনো রাখাইনে আছে তাদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে জাতিসংঘ।

 

১২ বছর বয়সী এক বালিকা জানান, ‘মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী একদিন তাদের বাড়িতে আসে। এসেই গুলি চালাতে শুরু করে। তারা আমার বোনকে আমার সামনেই গুলি করে। ওই বোনের বয়স মাত্র সাত বছর। সে কান্নাকাটি করছিল এবং আমাকে দৌড়ে পালাতে বলছিল। আমি তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করি। কিন্তু আমাদের চিকিত্সার জন্য কোনো ধরনের ব্যবস্থা ছিল না। তার এত রক্তপাত হয়েছিল যে একদিন পরই সে মারা যায়। আমি নিজেই তাকে কবর দিই।’

 

রিপোর্টে জানানো হয়, হামলার আগে ঘোষণা দেওয়া হয়, এখানে তোমাদের থাকার কোনো অধিকার নেই, তোমরা বাংলাদেশে চলে যাও। না গেলে তোমাদের বাড়ি-ঘর পুড়িয়ে দেওয়া হবে এবং তোমাদের হত্যা করা হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ