• শনিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:০৯ পূর্বাহ্ন

সাত শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিলো আইএমএফ বাণিজ্য ঘাটতি ও মূল্যস্ফীতি বাড়বে

আপডেটঃ : বৃহস্পতিবার, ১২ অক্টোবর, ২০১৭

বাংলাদেশের মোট দেশজ উত্পাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি সাত শতাংশ ছাড়ানোর পূর্বাভাস দিলো আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। সংস্থাটি আশা করছে, চলতি বছর প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৭ দশমিক ১ শতাংশ। যা আগামী দুই বছর সাতের ঘরেই থাকবে বলে আশা করা হয়েছে। সম্প্রতি বিশ্বব্যাংক তাদের পূর্ভাবাস প্রতিবেদনে প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৪ এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) তাদের পূর্বাভাস প্রতিবেদনে ৬ দশমিক ৯ শতাংশের পূর্বাভাস দিয়েছে। সেদিক থেকে আইএমএফ-এর পূর্বাভাস বিশ্বব্যাংক ও এডিবির চেয়ে বেশি।

 

প্রতিবেদনে চলতি অর্থবছর মূল্যস্ফীতি ও বাণিজ্য ঘাটতির আকার বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা করা হয়েছে। সংস্থাটি উল্লেখ করেছে, গেল বছর ৫ দশমিক ৭ শতাংশ থেকে এ বছর মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশের ঘরে উঠতে পারে। তবে আশা করা হয়েছে, ২০১৮ সালে এ হার কিছুটা কমে আসবে। প্রতিবেদনে আশংকা করা হয়েছে, চলতি হিসাবের ঘাটতি বেড়ে যেতে পারে। আন্তর্জাতিক লেনদেনে এ ঘাটতির আকার গেল বছর জিডিপির হিসাবে ধনাত্বক শুন্য দশমিক ৬ ভাগ হতে এবছর শুন্য দশমিক ৭ ভাগ ঘাটতি হতে পারে। ২০১৮ সালে এটি আরো বেড়ে জিডিপির ১ দশমিক ৩ ভাগ পর্যন্ত হতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সাধারণত বৈদেশিক লেনদেনে আয়ের তুলনায় ব্যয় বেশি হলে এ ঘাটতি দেখা দেয়। এদিকে সরকারি হিসাবে চলতি অর্থবছর শেষে প্রবৃদ্ধির হার ৭ দশমকি ৪ শতাংশ আশা করা হচ্ছে। গেল অর্থবছর (২০১৬-১৭) ৭ দশমিক ২ ভাগ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছিল।

 

আইএমএফ প্রকাশিত বিশ্ব অর্থনীতির পূর্বাভাস প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বিশ্ব অর্থনীতির গতি ফিরতে শুরু করেছে। বিশ্ব মন্দার পর গেল ২০১৬ সালেই বিশ্ব অর্থনীতিতে সবচেয়ে কম ৩ দশমিক ২ ভাগ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। আশা করা হয়েছে, ২০১৭ সাল শেষ নাগাদ এ হার ৩ দশমকি ৭ ভাগে উন্নীত হতে পারে। এর আগে এপ্রিল মাসে পূর্বাভাস প্রতিবেদনের চেয়ে অক্টোবরের পূর্বাভাস প্রতিবেদনে কিছুটা উন্নতি আশা করা হয়েছে। বিশেষ করে ইউরোপ, জাপান, উদীয়মান এশিয়া এবং রাশিয়ার অর্থনীতি আগের চেয়ে চাঙ্গা হওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। তবে মন্দার রেশ এখনও কাটেনি। বিশ্বের অনেক দেশেই প্রবৃদ্ধির গতি কমার পূর্বাভাস দিয়েছে আইএমএফ। বিশ্বব্যাপী নিত্য পণ্যের দাম কম রয়েছে। জ্বালানি তেলের মূল্যও কিছুটা উর্ধ্বমুখী হয়েছে এ বছর। তবে গেল বসন্তকালীন সময়ের তুলনায় এখনও নিত্যপণ্যের দাম কম রয়েছে। সেদিক থেকে মূল্যস্ফীতি সহনীয় পর্যায়েই থাকবে। আইএমএফ এর পূর্বাভাস প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, এ বছর ভারতে ৬ দশমিক ৭ ভাগ, পাকিস্তানে ৫ দশমিক ৩ ভাগ, ভূটানে ৫ দশমিক ৯ ভাগ, নেপালে সাড়ে ৭ ভাগ, শ্রীলঙ্কায় ৪ দশমিক ৭ ভাগ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হতে পারে।

 

সম্প্রতি আইএমএফ প্রধান ক্রিস্টিন লাগার্দ হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটিতে এক বক্তৃতায় উল্লেখ করেছেন, বিশ্ব মন্দার পর অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া এখনও চলমান রয়েছে। অনেক দেশ খুব ধীরগতিতে এগুচ্ছে। তিনি বলেন, চীন, ব্রাজিল এবং ভারতের মতো দেশগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক যে ব্যবধান রয়েছে তা কমে আসছে। কিন্তু এ দেশগুলোর ভেতরে যে অর্থনৈতিক অসমতা রয়েছে তা অনেকটাই থেকে যাচ্ছে। তবে বিশ্ব অর্থনীতির জন্য কিছু সুসংবাদও রয়েছে। প্রায় ৭৫ শতাংশ দেশের অর্থনীতি ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। অন্যদিকে ২৫ শতাংশ বা তারও বেশি দেশ প্রবৃদ্ধি করছে না। লাগার্দের মতে আইএমএফের উদ্বেগ সেখানেই। এ পরিস্থিতিতে ধনী দেশগুলোকে অনেক বেশি ব্যয় করতে হবে এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোকে আরো স্পষ্টভাবে যোগাযোগ ছাড়াও সরকারি ঋণ নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে বলে তিনি মনে করেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ