জলার গ্রামে গ্রামে এখন সবুজ মাল্টার উৎসব চলছে। মাল্টা বিক্রি করে ভালো দাম পেয়ে খুশি চাষিরা। অন্যদিকে ভোক্তারা ফরমালিনমুক্ত তাজা মাল্টা কিনতে পেরে আনন্দিত। বিশেষ করে কুমিল্লার আদর্শ সদর, সদর দক্ষিণ, বরুড়া, লালমাই, নাঙ্গলকোট, দেবিদ্বারসহ কয়েকটি উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে মাল্টার চাষ করা হচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর কুমিল্লার সূত্র জানায়, কুমিল্লার বিভিন্ন উপজেলায় প্রায় ৩০ একর জমিতে মাল্টার চাষ হচ্ছে। এ ছাড়া বিচ্ছিন্ন ভাবে ১০/১৫টি করে চারা লাগাচ্ছেন গৃহস্থরা। সব মিলিয়ে তিন শতাধিক চাষি মাল্টা চাষে জড়িত। তাদের উৎপাদিত মাল্টা কুমিল্লা নগরীর কান্দিরপাড় ফল দোকানসহ বিভিন্ন উপজেলার দোকানে বিক্রি হচ্ছে।
কুমিল্লার বরুড়া পৌর এলাকার উত্তরের গ্রাম মুগুজি। গ্রামের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আবদুর রব মাল্টার বাগান করে বেশ সাফল্য পেয়েছেন। তিনি জানান, দীর্ঘদিন প্রবাসে ছিলেন। দেশে এসে স্থানীয় বাজারে ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু করেন। বাড়ির পাশে নিজের কিছু জমি ছিল। পরিকল্পনা করলেন ফলের বাগান করবেন। ইউটিউবে মাল্টার চাষ ও সম্ভাবনা দেখলেন। তিনি চার বছর আগে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তারিক মাহমুদুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তার সহযোগিতা নিয়ে ১৭ শতক জমিতে মাল্টা চাষ করেন। তার ভালো ফল দেওয়া গাছ থেকে মৌসুমে প্রতিটি থেকে ৩৫ কেজির মতো মাল্টা পেয়েছেন। এ মাল্টা আকারের বড়, মিষ্টিও খুব। তিনি বাজারের পাইকারের কাছে মাল্টা বিক্রি করেন না। গ্রামের মানুষের কাছে কম দামে বিক্রি করেন, যাতে এ ফল সবাই কিনতে পারে।
জেলা বীজ প্রত্যয়ন কর্মকর্তা তারিক মাহমুদুল ইসলাম বলেন, দেশের শতভাগ মাল্টা আমদানি করতে হয়। এদেশে ভারত, চীন থেকে বেশি মাল্টা আসে। যার অধিকাংশ ক্ষতিকর ক্যামিকেল যুক্ত। দেশের উৎপাদিত মাল্টা এখন বাজারে পাওয়া যায়। যা দেশের মাল্টার পাঁচ ভাগ চাহিদা পূরণ করছে। এ গতি অব্যাহত থাকলে আগামী পাঁচ বছর পর নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে মাল্টা রপ্তানি করা যাবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ্উপ-পরিচালক আইউব মাহমুদ বলেন, মাল্টার চাষ করতে অনেকে আগ্রহী। তারা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসে যোগাযোগ করছেন। কুমিল্লায় প্রচুর মাল্টা চাষের সম্ভাবনা রয়েছে। মাল্টার বাগান করতে আগ্রহীদের আমরা পরামর্শ ও সহযোগিতা করছি।