• মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:২৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম:
সামরিক শাসন জারি করলেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ভারত অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখে কাজ করতে চায় ফের খারিজ মাস্কের ৫৬ বিলিয়ন ডলার পারিশ্রমিকের আবেদন বিজেপি ক্ষমতা হারানো হাসিনার চেয়ে বেশি পাগল হয়েছে : রিজভী ভারতীয় হাইকমিশনারকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জরুরি তলব বিশ্বের যেকোনো দেশের তুলনায় বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নিরাপদ: মাহমুদুর রহমান ত্রিপুরা আগরতলায় বাংলাদেশ দূতাবাসে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ ভারতের ৪৭৩০০১ শূন্যপদে সরকারি চাকরিতে নিয়োগের নির্দেশ ভারতে আগরতলায় বাংলাদেশি দূতাবাসে উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের হামলা! ভারত সরকারকে মমতার অনুরোধ বাংলাদেশে শান্তিরক্ষী পাঠাতে ব্যবস্থা নিতে

একটি টাকাও তছরুপ হয়নি: আত্মপক্ষ সমর্থনে খালেদা

আপডেটঃ : বৃহস্পতিবার, ১৯ অক্টোবর, ২০১৭

বিচারাধীন এই মামলা নিয়ে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘বিচার বিভাগে হস্তক্ষেপ’ করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।

গ্রেপ্তারি পরোয়ানা মাথায় নিয়ে দেশে ফেরার পরদিন বৃহস্পতিবার ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট ও এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় জামিন নেন খালেদা।

পরে বিচারক মো. আখতারুজ্জামান এতিমখানা দুর্নীতি মামলায় দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা খালেদার আত্মপক্ষ সমর্থনের শুনানি শুরু করেন।

আত্মপক্ষ সমর্থনে বেলা সোয়া ১২টা থেকে এক ঘণ্টা লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া।

এরপর তিনি পরবর্তী সময়ে বাকি বক্তব্য শেষ করার অনুমতি চাইলে আদালত তা মঞ্জুর করে ২৬ অক্টোবর শুনানির পরবর্তী দিন ঠিক করে দেন। জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট মামলাও একই দিনে আদালতে আসবে।

এতিমদের জন্য বিদেশ থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় এ মামলা দায়ের করে দুদক।

তদন্ত শেষে ২০০৯ সালের ৫ অগাস্ট তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে অভিযোগপত্র দেন। তার পাঁচ বছর পর ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ অভিযোগ গঠন করে খালেদাসহ ছয় আসামির বিচার শুরু করেন।

সাক্ষ‌্যগ্রহণ শেষে এ মামলায় খালেদা জিয়ার আত্মপক্ষ সমর্থনের কথা ছিল চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি। কিন্তু দফায় দফায় তার আইনজীবীদের সময়ের আবেদন ও বিচারকের প্রতি অনাস্থার আবেদনে তা পিছিয়ে যায়।

বৃহস্পতিবার সেই আত্মপক্ষ সমর্থনের শুরুতে খালেদা বলে, জিয়াউর রহামানের নামে এতিমখানা স্থাপনের জন্য বিদেশ থেকে যে অনুদান এসেছিল, তা এতিমখানার কল্যাণেই ব্যয় হয়েছে। সেই ব্যয়ের পর বাকি অংশ ব্যাংকে গচ্ছিত রাখা হয়েছে।

“প্রতিটি পয়সা গচ্ছিত রয়েছে।  ব্যাংকের সুদ যুক্ত হয়ে সেই টাকা এখন অনেক বেড়েছে। একটি টাকাও তছরুপ বা অপচয় করা হয়নি।”

নিজেকে নির্দোষ দাবি করার পাশাপাশি খালেদা তার ছেলে মুদ্রা পাচার মামলায় সাত বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত তারেক রহমানকেও নির্দোষ দাবি করেন।

ঘুষ হিসেবে আদায়ের পর ২০ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগে করা ওই মামলায় ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ মো. মোতাহার হোসেন ২০১৩ সালের ১৭ নভেম্বর তারেককে বেকসুর খালাস দিয়েছিলেন। কিন্তু দুদকের আপিলে হাই কোর্ট গতবছর ২১ জুলাই বিএনপির জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে সাত বছরের কারাদণ্ড ও ২০ কোটি টাকার অর্থদণ্ড দেয়।

পরিবার নিয়ে ২০০৮ সাল থেকে যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত তারেক রহমানের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনা হত্যাচেষ্টাসহ দুর্নীতি, রাষ্ট্রদ্রোহ ও মানহানীর অভিযোগে কয়েক ডজন মামলা রয়েছে।

খালেদা জিয়া বলেন, “তারেক রহমানকে মুদ্রা পাচারের একটি মামলার বানোয়াট অভিযোগ থেকে বেকসুর খালাস দিয়েছিলেন একটি আদালত। সেই বিচারককে শাসক মহল হেনস্তা এবং হয়রানির উদ্দেশ্যে এমন তৎপরতা শুরু করে যে তিনি আত্মরক্ষার জন্য বিদেশে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। সেই বিচারক নিজের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। এসব ঘটনা অহরহই ঘটছে।

দেশের সর্বোচ্চ আদালতের সঙ্গে শাসক মহলের ‘বিরোধ’ সম্প্রতি প্রায় প্রকাশ্য রূপ নিয়েছে মন্তব্য করে খালেদা বলেন, “মনে পড়ছে ফখরুদ্দীন (২০০৭-২০০৮ সময়ের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান ফখরুদ্দীন আহমদ) ও মঈনুদ্দিনের (তখনকার সেনাপ্রধান জেনারেল মইন উ আহমেদ) অসাংবিধানিক শাসনামলের কথা।

“তখন দেশের নেতানেত্রীদের হয়রানি করার উদ্দেশ্যে কোর্ট কাচারির বাইরে জাতীয় সংসদ ভবনে বিশেষ ট্রাইব্যুনালের এজলাস বসেছিল। ”

জিয়া এতিমখানা ও দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলাতেও কেন আদালত পাড়ার বাইরে আলিয়া মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে বিশেষ এজলাস বসানো হয়েছে- সেই প্রশ্ন তোলেন বিএনপি চেয়ারপারসন।

পরে তিনি নিজেই বলেন, “এটা করা হয়েছে প্রশাসনিক সিদ্ধান্তে। ক্ষমতাসীনদের উদ্দেশ্যই ছিল এটা।

এসব মামলা নিয়ে সংবাদপত্রে আসা খবর থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য উদ্ধৃত করে খালেদা জিয়া বলেন, “‘এতিমদের টাকা মেরেছেন, আবার আদালতে একদিন আসেন তো  দশদিন যান না’- তার এই বক্তব্য বিচার বিভাগে হস্তক্ষেপের শামিল।”

খালেদার পক্ষে জামিন আবেদনের শুনানিতে ছিলেন ব্যারিস্টার জমির উদ্দীন সরকার, আবদুর রেজাক খান, এ জে মোহাম্মদ আলী ও সানাউল্লাহ মিয়া। অন্যদিকে দুর্নীতি দমন কমিশনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল।

এতিমখানা দুর্নীতি মামলার আসামিদের মধ্যে খালেদা জিয়া জামিনে এবং মাগুরার সাবেক সাংসদ কাজী সালিমুল হক কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ কারাগারে আছেন। খালেদার বড় ছেলে তারেক রহমান আছেন লন্ডনে।

আর সাবেক মুখ্য সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান মামলার শুরু থেকেই পলাতক।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ