সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান আল সৌদ বলেছেন, ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার আগে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য একটি বিশ্বাসযোগ্য এবং অপরিবর্তনীয় রূপরেখা প্রয়োজন। রবিবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনে প্রকাশিত সাক্ষাৎকারে তিনি এই মন্তব্য করেছেন।
প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান, আমরা এর মাধ্যমে কেবল সুবিধা পেতে পারি। তাই, যেহেতু আমাদের স্থিতিশীলতা প্রয়োজন এবং তা আসতে পারে ফিলিস্তিন ইস্যুত সমাধানের মাধ্যমে।
অক্টোবরে ইরান-সমর্থিত হামাস যোদ্ধারা দক্ষিণ ইসরায়েলে আক্রমণের আগে ইসরায়েল ও সৌদি আরবের নেতারা দুই দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার প্রচেষ্টার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। তারা বলেছিলেন, ধীরে ধীরে একটি কূটনৈতিক বাস্তবতা প্রতিষ্ঠার দিকে অগ্রসর হচ্ছেন, যা মধ্যপ্রাচ্যকে নতুন আকার দিতে পারে।
৭ অক্টোবর হামাসের হামলার জবাবে গাজায় ইসরায়েল বোমাবর্ষণ ও হামলা শুরু করলে মার্কিন মধ্যস্থতায় ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের উদ্যোগের আলোচনা থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেয় সৌদি আরব।
গত কিছুদিন ধরে মার্কিন কর্মকর্তাদের দাবি, গাজায় যুদ্ধের অবসান হলে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনে আগ্রহী সৌদি আরব। আর সৌদি কর্মকর্তারা সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে অস্বীকৃতি না জানালেও বলছেন, এমন কিছুর জন্য স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সুযোগ থাকতে হবে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন গত সপ্তাহে মধ্যপ্রাচ্যে সফর করেন। ইসরায়েলে অবস্থানকালে তিনি বলেছিলেন যে, ইসরায়েলের প্রধান মুসলিম প্রতিবেশী দেশগুলো গাজাকে যুদ্ধের পর পুনর্বাসনে এবং ইসরায়েলের সঙ্গে অর্থনৈতিক সহায়তা চালিয়ে যাবে যদি শেষ পর্যন্ত একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের প্রতিশ্রুতি আসে।
যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলো বলছে, আলাদা নিরাপত্তার জন্য ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা জরুরি। তবে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এমন প্রস্তাবের বিরোধিতা করে আসছেন।
নেতানিয়াহু এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন শুক্রবার ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করেছেন। ফোনে কথা বলার পর বাইডেন বলেন, দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান এখনও সম্ভব। অনেক ধরনের দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান রয়েছে। অনেক দেশ আছে যারা জাতিসংঘের সদস্য না। তাদের নিজস্ব সামরিক বাহিনী নেই।
নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে প্রকাশিত একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সঙ্গে তার কথোপকথনে নেতানিয়াহু তার নীতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, হামাস ধ্বংস হওয়ার পরে ইসরায়েলকে অবশ্যই গাজার ওপর নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে হবে যেনো গাজা আর ইসরায়েলের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে না পারে। এই শর্তটি ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পুরোপুরি বিপরীত।