• শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৪ পূর্বাহ্ন

ফ্রান্সে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আশ্রয় আবেদন বাংলাদেশিদের

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : বৃহস্পতিবার, ২৫ জানুয়ারী, ২০২৪
ছবি সংগৃহীত

শরণার্থী ও রাষ্ট্রহীন ব্যক্তিদের সুরক্ষার জন্য নির্ধারিত ফরাসি দফতর (অফপ্রা) জানিয়েছে, গত বছর ফ্রান্সে সর্বমোট এক লাখ ৪২ হাজার সুরক্ষা আবেদন জমা হয়েছে। টানা ছয় বছরের মতো শীর্ষে আছে আফগান আশ্রয়প্রার্থীরা। খবর ইনফোমাইগ্রেন্টসের।

মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) ২০২৩ সালের প্রাথমিক আশ্রয় পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে শরণার্থী ও রাষ্ট্রহীন ব্যক্তিদের সুরক্ষার জন্য নির্ধারিত ফরাসি দপ্তর (অফপ্রা)।

অফপ্রা জানিয়েছে, ২০২২ সালের তুলনায় গত বছর ফ্রান্সে আশ্রয় আবেদন বেড়েছে ৮.৬%। যদিও কোভিড ১৯ জনিত স্বাস্থ্যবিধি পুরোপুরি শেষ না হওয়ায় ২০২২ সালে আশ্রয়প্রার্থীদের আসার হার হ্রাস পেয়েছিল।

অফপ্রার পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে নথিভুক্ত হওয়া মোট আবেদনের মধ্যে এক লাখ ৩৬ হাজার ৭০০টিরও বেশি আবেদনের সিদ্ধান্ত দিয়েছে অফপ্রা। যার মধ্যে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত পেয়েছে প্রায় ৩৩% আবেদন। ২০২২ সালের তুলনায় এই হার চার শতাংশ বেশি।

সংস্থাটি আরো জানায়, গত বছর অফপ্রাতে জমা হওয়া আশ্রয় আবেদন নিষ্পত্তি করতে গড়ে সময় লেগেছে ৪ মাসের মতো। আগের বছর লেগেছিল ৫ মাসের মতো।

শীর্ষে আফগানরা, দ্বিতীয় বাংলাদেশিরা

ফরাসি আশ্রয় বিষয়ক দপ্তর ব্যখ্যা করেছে, ২০২৩ সালে প্রথমবারের মতো আশ্রয় আবেদনকারীদের মধ্যে শীর্ষে আছে আফগানরা। ১৭ হাজার ৫০০টির বেশি প্রথম আশ্রয় আবেদন জমা করেছেন আফগানরা। এ নিয়ে টানা ছয় বছর ধরে ফ্রান্সে সর্বোচ্চ আশ্রয় আবেদনকারী দেশের তালিকায় আছে আফগানিস্তান।

আফগানিস্তানে তালেবান ক্ষমতায় আসার পর দেশটির পরিস্থিতি আরও অবনতি হয়েছে। নারী শিক্ষা বন্ধ করে দেওয়াসহ নানা পদক্ষেপ নিয়েছে তালেবান কর্তৃপক্ষ। সংকটের পর থেকে হাজার হাজার আফগান দেশ ত্যাগ করে ইউরোপের রুটে আছেন।

২০২২ সালের ন্যায় এবারও দ্বিতীয় শীর্ষ তালিকায় আছে বাংলাদেশিরা। ২০২৩ সালে মোট আট হাজার ৬০০ জন বাংলাদেশি প্রথম বারের মতো ফ্রান্সে আশ্রয় আবেদন করেছেন।

বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংঘাত এবং বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে কর্তৃত্ববাদী শাসনের অভিযোগ আছে। এছাড়া দেশটিতে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাস্তুচ্যুত হওয়া ও কোভিড পরবর্তী নাজুক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির মতো উল্লেখযোগ্য সমস্যা আছে।

রেডিও ফ্রান্স ইন্টারন্যাশনালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘দূরদর্শী আইকন’ হিসেবে ক্ষমতার মেয়াদ শুরু করলেও ক্রমেই কর্তৃত্ববাদী শাসন ব্যবস্থার দিকে ঝুঁকে পড়েছেন টানা চতুর্থ বারের মতো ক্ষমতায় আসা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

করোনা মহামারির পর থেকে বাংলাদেশের অর্থনীতির বেশ কিছু খাতে দেখা দিয়েছে স্থবিরতা। সেই সঙ্গে বাড়ছে মূল্যস্ফীতির মতো বিষয়। কয়েক বছর আগেও এক ইউরোর বিপরীতে বাংলাদেশি টাকার মান ছিল ৮০ থেকে ৯৫ টাকা। এখন সেটি ১৩০ টাকা ছুঁয়েছে।

এনজিও অক্সফাম জানিয়েছে, “বাংলাদেশে দারিদ্র্য চরম আকার ধারণ করেছে। দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকই প্রতিদিন এক ডলারেরও কম আয় করে।”

আট হাজার ৫০০ আবেদন নিয়ে তৃতীয় সর্বোচ্চ সুরক্ষা আবেদন করেছেন তুরস্ক থেকে আসা আশ্রয়প্রার্থীরা।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের বিরুদ্ধেও কর্তৃত্ববাদী শাসনের অভিযোগ আছে। দেশটিতে হাজার হাজার অধিকারকর্মী, সাংবাদিক ও রাজনৈতিক কর্মীদের আটকের সুস্পষ্ট অভিযোগ রয়েছে।

আট হাজার আবেদন নিয়ে তালিকার চতুর্থ দেশ কঙ্গো। সাত হাজার আবেদন নিয়ে আফ্রিকার আরেক দেশ গিনির নাগরিকেরা আছেন পাঁচ নম্বরে।

বেড়েছে প্রশাসনিক নথি প্রদানের সংখ্যা

ফ্রান্সে রিফিউজি স্ট্যাটাস অথবা সাবসিডিয়ারি প্রটেকশন পেয়েছেন এমন ব্যক্তিদের মধ্যে ২০২৩ সালে মোট ৬৪ হাজার ৯০০টি পরিচয় পত্র বা জন্ম নিবন্ধন সনদ ইস্যু করেছে অফপ্রা।

বিগত বছরগুলোতে নথি প্রদানে ধীরগতির কারণে গত বছর এ সংক্রান্ত বিভাগে জনবল বাড়িয়ে কাজের গতি বাড়ানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে অফপ্রা।

২০২২ সালে জন্ম সনদ প্রদানের সংখ্যা ছিল ৪৩ হাজার ৫৫০। অর্থাৎ গত বছর ৪৯ শতাংশের বেশি পরিচয় পত্র জারি করেছে সরকারি এই দপ্তর।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ