একত্রে একসাথে কখন কিছুটা সময় কাটানো হয়? পাশাপাশি কখন বসা হয়? এর প্রশ্নের উত্তরগুলোতেই ‘ভালোলাগা’ জড়িত। আর ভালোলাগার গাঢ় প্রলেপটাই ভালোবাসা।
এর সহজ মানেটা দাঁড়ালো ভালোলাগা থেকেই কিন্তু পাশাপাশি বসা। কারো সঙ্গে কিছুটা সময় একান্তে কাটানো। এই প্রথাটা শুধু মানুষকূলেই নয়। পশু-পাখি এবং প্রাণিকুলেও প্রচালিত।
শেষ বিকেলে পার্কে বা নির্জনে তরুণ-তরুণী বা মানব-মানবীরা শুধু একান্তে সময় কাটায় না। পাখিযুগলও প্রকৃতির নির্জনে ডুব দেয়। পাখি দম্পতিরা ডানায় ভর করে কিছুটা সময় কাটানো পর তার সাথীর সঙ্গে একান্তের বন্ধনে জড়ায়। পাখিদের ভালোবাসা তাই একান্তে একত্রিত।
প্রকৃতি এমন চমৎকার দৃশ্যগুলো হরহামেশাই ঘাটে। তবে আমাদের চোখে তা মাঝে মাঝেই ধরা পড়ে। তখন একরাশ ভালোলাগা হৃদয়কে আকুল করে!
প্রকৃতিতে ঋতুরাজ বসন্ত চলে এসেছে। এই ঋতুই প্রকৃতিকে চির তারুণ্যদীপ্ত করে তুলে। পাখিরাও এই ঋতুতেই প্রিয় সাথীটির সাথে ভালোলাগা এবং ভালোবাসায় জড়ায়। আর এখানেই একত্রে বসে থাকার বিষয়টি দারুণভাবে মুগ্ধতা ছড়ায়। তাদের মতো করে কূজনে কিংবা গভীর নিঃশব্দে তার উপলব্ধি করে, দুইজনেই দু’জনের পরিপূরক। কাউকে বাদ দিয়ে আসলে কেউ নয়। প্রকৃতির এমন নির্জনার মাঝেই পাখিযুগলরা প্রতিশ্রুতিশীল হয়, পরবর্তী প্রজন্মের চিহ্নটুকু ছড়িয়ে দেবে পাখিরাজ্যের শাখা-প্রশাখায়।
ছবিতে দেখা যাচ্ছে, গভীর সৌন্দর্য ছড়িয়ে দুটি ‘ভাতশালিক’ (Common Myna) একত্রে বসে রয়েছে। গাছের ডালে নীরব একাকিত্বের তাদের এই মৌনমুখর দৃশ্যাবলি। আলোকচিত্রটুকু ধারণ করতে প্রায় ১০-১৫ মিনিট গড়ে গেল। ততটা সময় দেখা গেল, কারো মুখে কোনো উচ্চারণ নেই, কণ্ঠে কোনো ভাষা নেই। শুধুই সংস্পর্শময় নীরবতার গভীর প্রহর।
এ ভাতশালিক আমাদের প্রতিবেশী পাখি। প্রায়ই আমাদের বাসাবাড়ির আশেপাশে তাদের দেখা যায়। এদের খাদ্যতালিকার পছন্দের খাবার হিসেবে রয়েছে ভাত। সেজন্য তার নামের সাথে ‘ভাত’ শব্দটি জুড়ে গিয়ে তার একমাত্র পরিচিতিটুকুর জানান দিচ্ছে।
ভালোলাগাটুকু ঘিরেই তো ভালোবাসা। পাখিরাও সে ভালোলাগার প্রহরজুড়েই পাড়ি দেয় ভালোবাসার প্রান্তর। সেই প্রান্তরে কিচিরমিচির ডাক নিয়ে আসন্ন ‘ভাতশালিক’ এর নতুন এক প্রজন্ম। প্রকৃতি তাই একান্তের একত্রিত এমন অনুভূতিগুলোর কাছে বড় বেশি ঋণী।