রাজশাহীতে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে যে দুই বোনের মৃত্যু হয়েছে, তারা নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত ছিল না বলে জানিয়েছেন আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরিন।
ওই দুই শিশুর নাম মুনতাহা মারিশা (২) ও মুফতাউল মাশিয়া (৫)।
তাদের নমুনা পরীক্ষার ফলাফল পাওয়ার কথা জানিয়ে ডা. তাহমিনা শিরিন রোববার গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা ওই দুই শিশুর নমুনা সংগ্রহ করে তারা নিপা ভাইরাস আক্রান্ত ছিল কিনা পরীক্ষা করেছি। তাদের দুজনের পরীক্ষায়ই নেগেটিভ ফল এসেছে।
তাদের মৃত্যুর কারণের ব্যাপারে ডা. তাহমিনা বলেন, তারা অন্য কোনো কারণেও মারা যেতে পারে। তাদের মৃত্যুর কারণ অন্য কোনো ভাইরাস কিনা তা আমরা জানার চেষ্টা করছি। এ বিষয়ে আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা প্রয়োজন। আমাদের একটি টিম এরইমধ্যে রাজশাহী রওনা হয়েছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর কারণ জানা যাবে।
এ দুই শিশুর মধ্যে বড় বোন মাশিয়া শনিবার বিকেলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে মারা যায়। চার দিন আগে বুধবার হাসপাতালে নেয়ার পথে মৃত্যু হয় মুনতাহা মারিশার।
ভাইরাসজনিত কারণে তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে চিকিৎসকরা ধারণা করলেও কোন ভাইরাসে তারা আক্রান্ত হয়েছিল তা নিশ্চিত হতে পারেননি। ওই অবস্থায় দুই শিশুর বাবা-মাকে কোথাও যেতে না দিয়ে হাসপাতালেই আইসোলেশনে রাখা হয়।
মারিশা ও মাশিয়ার বাবা-মা সাংবাদিকদের বলেছিলেন, কুড়িয়ে আনা বরই না ধুয়ে খেয়েছিল শিশুরা, তারপরই তাদের জ্বর আসে। পরে তাদের মৃত্যুর কারণ জানতে দুই বোনের নমুনা পাঠানো হয় ঢাকার রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইইডিসিআরে।
প্রসঙ্গত, বুধবার সকালে মারিশার জ্বর আসলে বিকেলে হাসপাতালে নেওয়ার পথেই মাইক্রোবাসে সে মারা যায়। মৃত্যুর পর মা-বাবা লক্ষ করেন মারিশার গায়ে কালো ছোপ ছোপ দাগ উঠেছে। একদিন পর শুক্রবার বড় মেয়ে মাশিয়ার একই লক্ষণ দেখা দেয়। সেও ছোট বোনের মতো বমি করছিল আর ঘন ঘন পানি খাচ্ছিল। লক্ষণ বুঝতে পেরে মা-বাবা দেরি করেননি। রাজশাহীর সিএমএইচে ভর্তি করেন। কিন্তু পরে তাকেও বাঁচানো যায়নি।
উল্লেখ্য, শিশু দুটির বাবা মনজুর রহমান রাজশাহী ক্যাডেট কলেজের গণিত বিভাগের প্রভাষক। তার স্ত্রী পলি খাতুন গৃহিণী। তাদের গ্রামের বাড়ি রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার চুনিয়াপাড়া গ্রামে।