একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ইস্যুতে নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার, সেনা মোতায়েন ও নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙে দেয়ার দাবীতে অনড় বিএনপি। জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে এই বিষয়গুলো সুরাহা করে নির্বাচনের আয়োজনের আহবান জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এই দাবিগুলো সরকার ও নির্বাচন কমিশন মেনে না নিলে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। গতকাল জাতীয়তাবাদী যুবদলের ৩৯তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষ্যে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে নির্বাচন না হলে আবার ৫ জানুয়ারী মার্কা নির্বাচন হবে। যা কেউ গ্রহণ করবে না। এর আগে বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বাংলাদেশ লেবার পার্টি আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমরা জানি এত সহজে সব কিছু হওয়ার কথা নয়। সেই কাজটাকে ঠিক জায়গায় পৌঁছানোর জন্য আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। জাতীয় ঐক্য গড়ে উঠলে তাহলেই আমরা গণতন্ত্রের জন্য সফল হবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ২০১৪ সালের আগে সেই ঐক্যের দিকে প্রায় আমরা এগিয়ে গিয়েছিলাম। একেবারে সমস্ত দল, মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল। রীতিমতো বিপ্লব হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু আমরা সফল হতে পারিনি, এই ফ্যাসিস্ট সরকারের নির্যাতন-নিপীড়ন যেটা ঢাকার মধ্যে হয়েছে। এ জন্য সফল হতে পারিনি। হতে পারিনি বলেই যে আমরা পারব না তা নয়। তিনি আরো বলেন, বিএনপি একটি উদার গণতান্ত্রিক দল। বিএনপি সব সময় গণতন্ত্রের পক্ষে কাজ করেছে। আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান একদলীয় (বাকশাল) গণতন্ত্র থেকে দেশকে বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে নিয়ে এসেছিলেন। আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সংসদীয় গণতন্ত্র চালু করেছিলেন। শুধু তাই নয়, ১৯৯৬-এ আওয়ামী লীগের যে আন্দোলন ছিল। জাতীয় পার্টি ও জামায়াতে ইসলামীকে একসাথে মিলে যে তত্ত¡াবধায়ক সরকার দিতে হবে সেই আন্দোলনের ফলে যে জনমত সৃষ্টি হয়েছিল, যে জনমতের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে বেগম খালেদা জিয়া তত্ত¡াবধায়কের যে ব্যবস্থা তা সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন। এ দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য বিএনপি সব সময় চেষ্টা করেছে। নিজের অবস্থান থেকে প্রয়োজনে সরে গিয়েও গণতন্ত্রের জন্য কাজ করেছে। বিএনপির লক্ষ্য হচ্ছে একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা।
সরকারের ব্যর্থতার চিত্র তুলে ধরে এবং কঠোর সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিশ্বের অন্যান্য রাষ্ট্রগুলোকে এখন পর্যন্ত সরকার কনভিনস করতে পারেনি। রোহিঙ্গা ইস্যুতে সরকার সম্পূর্ণভাবে নতজানু ভূমিকা পালন করছে। সরকার কোনোভাবেই একথা বলতে পারবে না যে তারা যে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ছিল তা তারা নিতে পারেনি। রাশিয়া, চীন, ভারত এখনো মায়ানমারের পক্ষে অবস্থান করছে। অথচ সরকার দাবি করছে এই দেশগুলো সরকারের পাশে থাকবে।