সিলেট টেস্টে দুর্দান্ত বোলিং করে প্রথম ইনিংসে শ্রীলঙ্কাকে ২৮০ রানে অলআউট করার পর ব্যাটিং ব্যর্থতায় পড়েছে বাংলাদেশও। ব্যাটারদের ব্যর্থতায় নিজিদের প্রথম ইনিংসে ১৮৮ রানেই অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ। যার ফলে প্রথম ইনিংস শেষে লঙ্কানদের লিড ৯২ রানের।
সিলেট টেস্টে শেষ বিকেলে ব্যাট করতে নেমে ১০ ওভারে ৩২ রান তুলতেই টাইগাররা হারিয়ে ফেলে ৩ উইকেট। এরপর দ্বিতীয় দিনের শুরুতে ব্যাটিংয়ে নামেন মাহমুদুল হাসান জয় ও নাইটওয়াচম্যান তাইজুল ইসলাম। শুরু থেকেই দেখেশুনে খেলতে থাকেন তারা। ১৫ ওভার পর্যন্ত খেলে করেন ৫৩ রান। কিন্তু এরপরেই ঘটে ছন্দপতন।
লাহিরু কুমারার বলে দ্বিতীয় স্লিপে সিলভাকে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরের ফেরেন জয়। আউট হওয়ার আগে ১২ রান করেছেন এই ব্যাটার। তার বিদায়ে ভাঙে ২২ রানের জুটি। মাহমুদুল হাসান জয়ের বিদায়ের পর শাহাদাত হোসেন দিপুর সঙ্গে জুটি বাঁধেন তাইজুল ইসলাম। এই জুটিতে ঘুরে দাঁড়াতে থাকে বাংলাদেশ। তবে দলীয় ৮৩ রানে দিপুর বিদায়ে ৩০ রানেই ভেঙে যায় এই জুটি।
২৬ বলে ১৮ রান করা দিপু লাহিরু কুমারার বলে প্রথম স্লিপে ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফিরে যান সাজঘরে। তার বিদায়ে ৮৩ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে বাংলাদেশ।
৮৩ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর জুটি গড়েন তাইজুল ইসলাম ও লিটন দাস। এই জুটিতে ভর করে ২৮ ওভার ৩ বলে দলীয় শতক তুলে নেয় বাংলাদেশ। এই জুটির কল্যাণে বিপর্যয় কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াচ্ছিল বাংলাদেশ। আর তখনই টাইগার শিবিরে আবারও আঘাত হানেন লাহিরু কুমারা।
লাহিরু কুমারার বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরে যান লিটন দাস। আউট হওয়ার আগে করেন ৪৩ বলে ২৫ রান। তার বিদায়ে ১২৪ রানেই ৬ উইকেট হারালো বাংলাদেশ।
লিটনের বিদায়ের পর মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গে জুটি বাঁধেন তাইজুল। সপ্তম উইকেটে ৮ রান যোগ করার পর লাঞ্চ বিরতিতে গেছেন তারা। যার ফলে মধ্যাহ্নবিরতির আগে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৩২ রান করেছে বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে শ্রীলঙ্কার চেয়ে ১৪৮ রানে পিছিয়ে থেকে লাঞ্চ বিরতিতে যায় বাংলাদেশ।
বিরতি থেকেই ফিরেই সাজঘরে ফিরে যান একপ্রান্ত আগলে রাখা তাইজুল ইসলামের। ক্যারিয়ারের প্রথম অর্ধশতকের দ্বারপ্রান্তে থাকা তাইজুল ৮০ বলে ৪৭ রান করে কাসুন রাজিতার বলে কুশল মেন্ডিসের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফিরে যান তিনি।
তাইজুলের পথ ধরে সাজঘরে ফিরে যান মেহেদী হাসান মিরাজও। তাকেও ফেরান কাসুন রাজিতা। কাসুন রাজিতার বলে নিশান মাদুশকার হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান মিরাজ। তার বিদায়ে ১৪৭ রানেই ৮ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
১৪৭ রানে ৮ উইকেট হারানোর পর জুটি গড়েন খালেদ আহমেদ ও শরিফুল ইসলাম। শুরু থেকেই এই দুই ব্যাটার দেখেশুনে খেলতে থাকেন। তবে দলীয় ১৮৭ রানে শরিফুল ইসলামের বিদায়ে ৪০ রানে ভেঙে যায় এই জুটি।
দশম উইকেটে খালেদ ও নাহিদ রানা মিলে মাত্র ১ রান যোগ করতে সক্ষম হন। যার ফলে ৫৩ ওভার ১ বলে ১৮৮ রানে প্রথম ইনিংস শেষ করলো বাংলাদেশ। যার ফলে প্রথম ইনিংস শেষে লঙ্কানদের লিড ৯২ রানের। এর আগে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে খালেদ আহমেদের ঝোড়ো বোলিংয়ে ৫৭ রানেই ৫ উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। ৫৭ রানেই ৫ উইকেট হারানোর পর জুটি গড়েন কামিন্দু মেন্ডিস ও ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা। এই জুটিতে ভর করে ২২ ওভারে ৯২ রান নিয়ে লাঞ্চ বিরতিতে যায় শ্রীলঙ্কা। লাঞ্চ থেকে ফিরে জোড়া অর্ধশতক তুলে নেন এই দুই ব্যাটার।
তাদের জুটিতে ভর করে দ্বিতীয় সেশনটা নিজেদের করে নে শ্রীলঙ্কা। দ্বিতীয় সেশনে লঙ্কানদের কোনো উইকেটই ফেলতে পারেনি বাংলাদেশ। বিনা উইকেটে ১২৫ রান তুলে নেয় এই সেশনে তারা। যার ফলে দ্বিতীয় সেশন শেষে ৪৯ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ২১৭ রান তুলে নিয়েছে শ্রীলঙ্কা। চা পানের বিরতি থেকে আরও ভয়ঙ্কর হয়ে এই জুটি। এই দুই ব্যাটারই তুলে নেন সেঞ্চুরি। তারপর লঙ্কান শিবিরে আঘাত হেনে এই দুই সেঞ্চুরিয়ানকে ফেরান অভিষিক্ত নাহিদ রানা। যার ফলে আবারও খেলায় ফেরে বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত ৬৮ ওভার খেলে সব উইকেট হারিয়ে ২৮০ রান তুলতে সক্ষম হয় শ্রীলঙ্কা।
এরপরেই ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। ব্যাটিংয়ে নেমে তারাও দ্রুত উইকেট হারাতে থাকে। ১০ ওভারে ৩২ রান তুলতেই টাইগাররা হারিয়ে ফেলে ৩ উইকেট। লঙ্কানদের চেয়ে ২৪৮ রানে পিছিয়ে থেকে প্রথম দিনের খেলা শেষ করে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় দিনের শুরুতে দ্রুত উইকেট হারিয়ে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৩২ রান করে লাঞ্চ বিরতিতে যায় বাংলাদেশ।
লাঞ্চ বিরতি থেকে ফিরে দ্রুত দুই উইকেট হারিয়ে বসে বাংলাদেশ। নবম উইকেটে খালেদ ও শরিফুলের ৪০ রানের জুটিতে ভর করে ৫১ ওভার ১ বলে সব উইকেট হারিয়ে ১৮৮ রান তুলতে সক্ষম হয় বাংলাদেশ।