• শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:১২ পূর্বাহ্ন

আদালতের ওপরে কিছু নেই: বুয়েট উপাচার্য

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : সোমবার, ১ এপ্রিল, ২০২৪

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. সত্য প্রসাদ মজুমদার বলেছেন, আদালতের ওপরে কিছু নেই৷ আদালত যদি সিদ্ধান্ত দেয় আমাদের সেটি মেনে নিতে হবে। আবার আমরা অনেক সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকি যেটি আদালতে গেলে আর টেকে না। তবে সিন্ডিকেট বৈঠকেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে।

সোমবার (১ এপ্রিল) দুপুরে উপাচার্যের কার্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধে করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের জারি করা প্রজ্ঞাপন স্থগিত করে হাইকোর্টের দেওয়া নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, এখনও রায়ের কপি পাননি। পেলে আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও বলেন তিনি।

এর আগে দেশের সবচেয়ে প্রাচীন পেশাজীবী প্রতিষ্ঠান ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি) এর প্রেসিডেন্ট ও আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী মো. আবদুস সবুর ও সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী এস এম মঞ্জুরুল হক মঞ্জু হ আইইবি’র বেশ কয়েকজন সদস্য বুয়েটে উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করেন। তারা সবাই বুয়েটের সাবেক শিক্ষার্থী৷

বুয়েট উপাচার্য বলেন, ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউশনের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং কমিটির নেতারা এসেছিলেন। বুয়েটের প্রাক্তন ছাত্ররাও ছিলেন। তারা বুয়েট সম্পর্কে সবসময় ওয়াকিবহাল। তারা তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বুয়েটের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা করেন। বিশেষ করে প্রকৌশলীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা করেন৷ তাদের কথা হলো বুয়েট থেকে পাস করে যেন শিক্ষার্থীরা দেশের জন্য কাজ করেন, মুক্তিযুদ্ধ চেতনায় উদ্বুদ্ধ থাকেন এবং এখান থেকে পাস করে জন্য দেশের বাইরে চলে না যান৷

উপাচার্য বলেন, উনারা চাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা শুধু পড়ালেখা শিখবে না৷ মুক্ত চিন্তা করবে, সাহিত্য শিখবে, রাজনীতি শিখবে, দেশের প্রতি যাদের করণীয় কিছু সম্পর্কে তারা জানবে৷ তাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সেভাবেই হবে যে দেশে থেকে দেশের জন্য কাজ করে যাওয়া৷ না হলে সে কিন্তু চিন্তা করবে যে আমি দেশকে চিনি না শুধু বুয়েট ক্যাম্পাস কেই চিনি। ওনারা বলতে চাচ্ছেন এই বিষয়ে একটা পরিকল্পনা করা দরকার৷ যেখানে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার পাশাপাশি মুক্ত চিন্তার রাজনীতিও করতে পারে৷ আমরা এসব বিষয়ে আমাদের শিক্ষক, ছাত্র একাডেমিক কাউন্সিল এবং সিনডিকেট সভায় আলোচনা করবো।

উপাচার্য বলেন, একটি প্রেক্ষাপটে ২০১৯ সালে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি থাকবে না। এই সিদ্ধান্ত থেকে যদি সরে আসতে হয় তাহলে শিক্ষক-ছাত্র সবাইকে বসে কিন্তু চিন্তা করতে হবে৷ উনারা বলেছেন এ বিষয়ে উনারা সহায়তা করবেন৷ তবে কীভাবে করবো সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

বুয়েট শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ রাব্বির হলের সিট বাতিলের বিষয়ে উপাচার্য বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে রুলস অ্যান্ড রেগুলেশন আছে। অর্থাৎ ২০১৯ সালে যে সিদ্ধান্তটা নেওয়া হয়েছিল সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যদি কেউ সম্পৃক্ত (রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে) থাকে তাহলে ফর গুড (চিরতরে) বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার হয়ে যাওয়ার কথা৷ রাব্বিকে কিন্তু এখনো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়নি। তদন্ত হবে সে পুরোপুরি ইনভল্ব কি না।

সে কিন্তু বলেছিল যে কমিটিতে তার নাম আছে। তাকে বলা হয়েছিল যে তোমার নাম আছে তুমি নামটা উইড্রো করো, সে কিন্তু পদত্যাগপত্র দিয়েছে সেটি এখনও ফাইনাল হয়নি৷ এজন্য তাকে হল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে৷ কিন্তু আইন অনুযায়ী সে কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার হতে পারতো৷ ২০১৯ সালে যে আইন হয়েছে সেটি আমাকে ফলো করতেই হবে। আমি একজনের জন্য ফলো করবো আরেকজনের জন্য করবো না সেটা তো হয় না৷ যদি ভবিষ্যতে নতুন কোনো আইন আসে তাহলে সেটা ফলো করা হবে। আমার যদি কোনো সিদ্ধান্ত নিতে হয় তাহলে আমি আইনটা দেখে দেখে নেবো। কারণ আমাকে যখন কোর্টে যেতে হবে তখন আমি এই আইনটা দেখাবো৷

এর আগে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করে ২০১৯ সালে জারি করা প্রজ্ঞাপন স্থগিত করেন হাইকোর্ট। এর ফলে বুয়েটে ছাত্ররাজনীতিতে আর কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন রিটকারীর আইনজীবী। একইসঙ্গে, বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করে জারি করা প্রজ্ঞাপন কেন অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত। সোমবার (১ এপ্রিল) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ