রাশিয়ার তেল পরিশোধনাগারে হামলা, তেল রপ্তানিকারক দেশগুলোর উৎপাদন কমানোর চিন্তা এবং চীনে চাহিদা বৃদ্ধির আভাস- সব মিলিয়ে কয়েকদিন ধরেই তেলের বাজার ছিল অস্থির। এর জেরে সোমবার (১ এপ্রিল) বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম বেড়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, এদিন অপরিশোধিত তেলের আন্তর্জাতিক বেঞ্চমার্ক ব্রেন্টের দাম ব্যারেলপ্রতি ২৪ সেন্ট বা ০.৩ শতাংশ বেড়ে ৮৭ দশমিক ২৪ ডলারে দাঁড়িয়েছে। এর আগে, গত সপ্তাহে ব্রেন্টের দাম বেড়েছিল ২ দশমিক ৪ শতাংশ।
সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের (ডব্লিউটিআই) দামও বেড়েছে। এদিন ব্যারেলপ্রতি ২৮ সেন্ট বা ০.৩ শতাংশ বেড়ে ডব্লিউটিআই বিক্রি হচ্ছে ৮৩ দশমিক ৩৫ ডলারে। গত সপ্তাহে এর দাম বেড়েছিল ৩ দশমিক ২ শতাংশ।
এ নিয়ে টানা তিন মাস উভয় তেলের দামই বাড়লো। গত মাসের মাঝামাঝি থেকে ব্রেন্টের দাম ব্যারেলপ্রতি ৮৫ ডলারের ওপরে রয়েছে।
ইস্টার উৎসবের ছুটির কারণে বেশ কয়েকটি দেশে লেনদেন বন্ধ থাকায় সোমবার বাণিজ্যের পরিমাণ কম হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সম্প্রতি তেল উৎপাদন সীমিত রাখার সিদ্ধান্ত আগামী জুন মাস পর্যন্ত বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে রপ্তানিকারক দেশগুলোর জোট (ওপেক) এবং তাদের মিত্ররা (ওপেক প্লাস)। এর ফলে গ্রীষ্মকালে উত্তর গোলার্ধের দেশগুলোতে অপরিশোধিত তেলের সরবরাহ চাপের মুখে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
রাশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী আলেকজান্ডার নোভাক গত শুক্রবার বলেছেন, তাদের সংস্থাগুলো দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে রপ্তানির পরিবর্তে অন্যান্য ওপেক প্লাস সদস্যদের সঙ্গে সমানভাবে উৎপাদন কমানোয় মনোনিবেশ করবে।
পাশাপাশি, ইউক্রেনের ড্রোন হামলায় রাশিয়ার বেশ কয়েকটি তেল শোধনাগার অচল হয়ে পড়েছে। এতেও রুশ জ্বালানি রপ্তানি কমবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক কখন সুদের হার কমাবে, তার দিকে নজর রাখছেন বিনিয়োগকারীরা। বিশ্বের বৃহত্তম তেল উৎপাদক দেশটিতে সুদের হার কমলে সেটি বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং তেলের চাহিদা উভয়ের জন্য ইতিবাচক হবে বলে আশা করছেন তারা।
বিরূপ আবহাওয়ার কারণে যুক্তরাষ্ট্রে গত ডিসেম্বরের তুলনায় জানুয়ারিতে অপরিশোধিত তেলের উৎপাদন অন্তত ছয় শতাংশ কমে গিয়েছিল।
তেলের বাজারে আশা দেখাচ্ছে চীনের অর্থনৈতিক পরিস্থিতিও। দেশটিতে মার্চ মাসে গত ছয় মাসের মধ্যে প্রথমবারের মতো উৎপাদন কার্যক্রম বেড়েছে। এর ফলে বিশ্বের বৃহত্তম অপরিশোধিত তেল আমদানিকারক চীনে তেলের চাহিদা বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।
সূত্র: রয়টার্স