যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা এই সপ্তাহে প্রায় দু’বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো বৈঠকে মিলিত হলেন। প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে দু’দেশের সামরিক বাহিনীর জাহাজ ও বিমানের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা ও আগ্রাসী ঘটনা নিয়েই কথা বলা উদ্দেশ্য তাদের।
তৎকালীন হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরের পরে হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর পুনরায় হাওয়াইয়ে বুধবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত চলা এই আলোচনা একটি নতুন সূচনারই ইঙ্গিত দিচ্ছে। তাইওয়ান একটি স্ব-শাসিত দ্বীপরাষ্ট্র হলেও চীন এটিকে নিজের বলে দাবি করে।
এদিকে তাইওয়ানের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনকে হস্তক্ষেপ বলে সমালোচনা করেছেন চীনের কর্মকর্তারা।
যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা জানান, মিলিটারি মেরিটাইম কনসালটেটিভ অ্যাগ্রিমেন্ট (এমএমসিএ) ওয়ার্কিং গ্রুপ গত কয়েক বছরের নিরাপত্তা সম্পর্কিত ঘটনাবলী নিয়ে পর্যালোচনা করেছে। তারা চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে অপারেশনাল নিরাপত্তা ও পেশাদারিত্ব বজায় রাখার উপায় নিয়ে আলোচনা করেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, গত কয়েক মাসে যুক্তরাষ্ট্রের এবং পিপলস লিবারেশন আর্মির বিমান ও জাহাজের অনিরাপদ আচরণ হ্রাসের কারণে আমাদের উৎসাহ বেড়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলের প্রধান আর্মি কর্নেল ইয়ান ফ্রান্সিস এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, ‘ইন্দো-প্যাসিফিক যেসব অঞ্চলে আন্তর্জাতিক আইন অনুমোদন করা সাপেক্ষে যুক্তরাষ্ট্র সেখানে নিরাপদে ও পেশাদারিত্বের সাথে কার্যক্রম চালিয়ে যাবে। এবং আমরা এই দায়িত্ব গুরুত্বের সাথে নিচ্ছি। দুর্ঘটনা ও ভুল যোগাযোগ এড়াতে পিএলএ এবং ওই অঞ্চলের অন্য সব সামরিক বাহিনীর সাথে খোলামেলা, সরাসরি ও স্পষ্ট যোগাযোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
এর আগে, সান ফ্রান্সিসকোতে গত নভেম্বরে এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনমিক কো-অপারেশন শীর্ষ সম্মেলনের অবকাশে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে একটি বৈঠক করেন।
এই সপ্তাহের বৈঠকে উভয়পক্ষের প্রায় ১৮ জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা অংশ নেন বলে জানা গেছে। এদিকে দক্ষিণ চীন সাগরে বেইজিং প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণ এবং তাইওয়ানকে জোরপূর্বক তার অধীনে আনার ইচ্ছা ব্যক্ত করেছে। বাইডেন বলেন, তারা তাইওয়ানের প্রতি তাদের সমর্থন অব্যাহত রাখবেন। হামলা থেকে তার সৈন্যরা গণতান্ত্রিক দ্বীপটিকে রক্ষা করবে।
বেইজিং দক্ষিণ চীন সাগরে প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণ এবং প্রয়োজনে শক্তি প্রয়োগ করে তাইওয়ানকে তার নিয়ন্ত্রণে আনার ইচ্ছা জোরালভাবে প্রকাশ করেছে।
বাইডেন বলেন, মার্কিন সেনা বাহিনী হামলা থেকে গণতান্ত্রিক দ্বীপটিকে রক্ষা করবে।
২০২২ সালের আগস্টে পেলোসির তাইওয়ান সফরের পরে, চীন তাইওয়ান প্রণালীতে বার বার তার যুদ্ধজাহাজ এবং বিমান নিয়ে দ্বীপটির নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার জন্য তাইওয়ানের চারপাশ থেকে আগ্রাসী পদক্ষেপ নিয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া তাইওয়ান এবং জাপানের পৃথক অর্থনৈতিক অঞ্চলে চীনগুলি চালিয়েছে এবং ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে।
সূত্র : ভয়েস অব আমেরিকা