ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কথা সরাসরি অস্বীকার করেছেন সেদেশের এক কর্মকর্তা। যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এবিসি নিউজ শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) ভোরে ওই হামলার কথা জানালেও হোসেইন দালিরিয়ান নামে সেই কর্মকর্তা বলেন, সীমানার বাইরে থেকে ইসফাহান বা অন্য কোনো অঞ্চলে কোনো ধরনের এয়ার অ্যাটাক (বিমান/ক্ষেপণাস্ত্র হামলা) হয়নি।
এবিসি নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, ভোরে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী ইরানি ভূখণ্ডে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে। তবে কী আকারের বা কতটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে, তা তৎক্ষণাৎ জানানো হয়নি।
ওই সময় কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানায়, ইরানের মধ্যাঞ্চলীয় ইসফাহান শহরের একটি বিমানবন্দরের কাছে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ শোনা গেছে। তবে বিস্ফোরণের কারণ জানা যায়নি।
ইরানের জাতীয় সাইবার স্পেস কেন্দ্রের মুখপাত্র হোসেইন দালিরিয়ান ক্ষেপণাস্ত্র হামলার খবর নাকচ করে দিয়ে তার ‘এক্স’ অ্যাকাউন্টে লেখেন, ‘ইসরায়েল কেবল কোয়াডকপ্টার (ড্রোন) ওড়ানোর ব্যর্থ ও হাস্যকর চেষ্টা চালিয়েছিল। সেগুলো ভূপাতিত করা হয়েছে। ’ খবর বিবিসির।
ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমও প্রায় একই সুরে বলেছে, সম্ভাব্য টার্গেটকে প্রতিহত করতে বিভিন্ন এলাকায় ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সচল করা হয়। তবে কোথাও সরাসরি বিস্ফোরণ বা এমন কিছুর খবর মেলেনি।
তারা আরও বলেছে, পরমাণু স্থাপনাসহ দেশের সব স্থাপনা নিরাপদ ও অক্ষত আছে।
রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ইরনা জানিয়েছে, ভোরে কিছু এলাকায় ফ্লাইট চলাচল বাতিল হলেও আশঙ্কা কেটে গেছে। তেহরানের ইমাম খোমেনী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও মেহরাবাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল আবার শুরু হয়েছে।
গত ১ এপ্রিল সিরিয়ায় ইরানের কনস্যুলেটে হামলা হয়। ওই হামলায় বেশ কজন ইরানি কমান্ডারসহ ১৩ জনের প্রাণ যায়। তেহরানের অভিযোগ, ইসরায়েল ওই হামলা চালিয়েছে। তেলআবিব হামলার দায় স্বীকার না করলেও নাকচও করেনি।
আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে কনস্যুলেটে ওই হামলার জবাব দেওয়ার কথা বলে ইরান। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৩ এপ্রিল ইসরায়েলে তিন শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে তারা। পাশাপাশি ইরাক, সিরিয়া ও ইয়েমেনে থাকা তাদের মিত্ররাও ওই হামলায় অংশ নেয়। তবে মিত্রদের সহযোগিতায় প্রায় সব ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্রই ভূপাতিত করে ইসরায়েল।
এ নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ালে পশ্চিমা দেশসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দুপক্ষকেই সংযত আচরণের পরামর্শ দেয়। তবে ইসরায়েল বারবার সেই হামলার ‘পাল্টা জবাব’ দেওয়ার কথা বলে আসছিল।
তাদের হুঁশিয়ার করে ইরানও বারবার বলে আসছে, ইসরায়েল এ ধরনের পাল্টা আঘাত করলে তাদের ‘কঠোর জবাব’ দেওয়া হবে।