খাদি শব্দের উৎপত্তি গুজরাট থেকে। খাদি বলতে বোঝায়, কার্পাস তুলা থেকে হাতে কাটা সুতায় তৈরি কাপড়। আর এ খাদি বা খদ্দর বাংলাদেশের অন্যতম বুনন ঐতিহ্য। অনেকের কাছেই খাদি জনপ্রিয়। চাহিদা রয়েছে বিদেশেও।
বাংলাদেশে খাদি শিল্পের প্রচার, প্রসার এবং বিবর্তনে যার সবচেয়ে বেশি অবদান তিনি হলেন প্রয়াত শৈলেন্দ্রনাথ গুহ। শৈলেন্দ্রনাথ গুহ প্রয়াত হলে তার ছেলে অরুণ গুহ এ শিল্প ধরে রাখেন। এখন তিনিও প্রয়াত।
খাদি নামকরণ প্রসঙ্গে অরুণ গুহ বলেছিলেন, খাদি নাম নিয়ে অনেকের মধ্যেই মতবিরোধ রয়েছে। তবে অধিকাংশ লোকের ধারণা, খাদি অর্থাৎ খাদ বা গর্ত করে ওই গর্তে বসে এ কাপড় তৈরি করা হয় বলেই একে খাদি বলে। মূলত এ খাদ থেকেই খাদি শব্দের প্রচলন। তবে খাদির মূল বিষয় হচ্ছে হাতে কাটা সুতায় তৈরি কাপড়।
খাদি কাপড়ের বুনন শুরু হয় উনিশ শতকের দিকে। মূলত মসলিন শিল্প বিলুপ্ত হওয়ার পরই এ শিল্পের যাত্রা। কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, ফেনী অঞ্চলে যোগী নামে একটি সম্প্রদায় বাস করত। তারা শুধু নিজেদের ব্যবহারের জন্য চরকায় সুতা কেটে হাতে কাপড় বুনতেন। তারা বেশিরভাগ ধুতি, পৈতা, গামছা তৈরি করতেন। তাদের এ বুননটা ছিল একান্ত গ্রামীণ পর্যায়ে এবং নিজেদের জন্য। কার্পাস তুলা থেকে চরকায় সুতা কেটে হস্তচালিত তাঁতে বোনা এ শিল্পই ১৯১৭-১৯১৮ সালের দিকে খাদি নামে পরিচিতি পায়। সুতার মান ভালো বলে এ অঞ্চলের খাদি কাপড় অনেক প্রসিদ্ধ ছিল। তখন কুমিল্লা, ফেনী, চট্টগ্রামের জোয়ারগঞ্জ, বান্দরবান, রাঙ্গামাটিসহ বিভিন্ন অঞ্চলে কার্পাস তুলার প্রচুর চাষ হতো।
৩ ও ৪ নভেম্বর ঢাকায়
৩ ও ৪ নভেম্বর তৃতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে খাদি দি ফিউচার ফ্রেবিক শো ২০১৭, বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টার। উৎসব উপলক্ষে প্রেস কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয় ৩০ অক্টোবর গুলশান ক্লাবে। এ বছর ১৯ বাংলাদেশি এফডিসিবি ডিজাইনার হলেন- মাহিন খাঁন, কুহু, এমদাদ হক, চন্দনা দেওয়ান, শৈবাল সাহা, বিপ্লব সাহা, লিপি খন্দকার, মারিয়া ইসলাম, ফারাহ আনজুম বারী, শাহরুক আমিন, নওশিন খায়ের, তেনজিং চাকমা, আফসানা ফেরদৌসি, রাকা, ফাইজা আহম্মেদ, রিমা, সারা করিম, ফারা দিবা, রূপু শামস্ । এছাড়াও ৬ জন বিদেশ থেকে আসছেন। তারা হলেন- হিম শন (ভারত) সৌম মন (ভারত), রসন শ (নেপাল), চিম চোদ (ভুটান) জ্যাজ ফ (মালেয়শিয়া) নীল হারাসগভ (শ্রীলংকা) সুকী দাং (থাইল্যান্ড) থেকে ডিজাইনারা খাদি উৎসবে অংশগ্রহন করবেন। উল্লেখ্য, ১০ ও ১১ নভেম্বর গুলশান গার্ডেনিয়া কনভেনশন সেন্টারে খাদি উৎসবে প্রদর্শিত পোশাকগুলো প্রদর্শন ও বিক্রয় করা হবে।