• শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ১২:৪৬ অপরাহ্ন

উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী ও এমপির স্বজনদের ঠেকাতে আরও কঠোর হবে আ.লীগ

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

আগামী মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে শুরু হচ্ছে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচনে যেন মন্ত্রী-এমপিদের ‘হস্তক্ষেপ’ না থাকে সেটা নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ নিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।

এজন্য মন্ত্রী ও দলীয় এমপির আত্মীয়-স্বজনদের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই নির্দেশনা কার্যকর করা যায়নি। কিছু প্রার্থী সরে দাঁড়ালেও মন্ত্রী-এমপির স্বজন অনেকে রয়ে গেছেন নির্বাচনে। তাই পরিস্থিতি কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণে রাখতে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থার কথা বলছে আওয়ামী লীগ।

এবারের উপজেলা নির্বাচনে দল থেকে প্রার্থী মনোনয়ন না দিয়ে সবার জন্য উন্মুক্ত রাখে আওয়ামী লীগ। এর সুবাদে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন স্থানীয় পর্যায়ের অনেক নেতা। এর মধ্যে মন্ত্রী ও দলের সংসদ সদস্যদের (এমপি) আত্মীয়-স্বজনসহ ঘনিষ্ঠরাও রয়েছেন। এরা প্রার্থী হওয়ায় অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে আওয়ামী লীগের মধ্যেই। এমনকি নির্বাচনকে ঘিরে গ্রুপিং ও দ্বন্দ্ব-সংঘাতের আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে।

আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র বলছে, যেসব জায়গায় মন্ত্রী-এমপিদের স্বজন ও তাদের ঘনিষ্ঠরা প্রার্থী হয়েছেন, সে জায়গায় প্রার্থীদের পক্ষে নির্বাচন প্রভাবিত করতে ওই মন্ত্রী-এমপিদের হস্তক্ষেপের আশঙ্কা করা হচ্ছে। এতে স্বচ্ছ নির্বাচনে বাধা আসার পাশাপাশি দ্বন্দ্ব-সংঘাতের আশঙ্কাও রয়েছে। এই পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে মন্ত্রী-এমপির স্বজনদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের নির্দেশ দেওয়া হয় দল থেকে। কিন্তু প্রার্থীদের অধিকাংশই এ নির্দেশ উপেক্ষা করে নির্বাচনে রয়ে গেছেন। এই পরিস্থিতিতে দলের নীতি-নির্ধাকরা সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা চিন্তা করছেন বলে সূত্রগুলো জানিয়েছে। সাংগঠনিক ব্যবস্থার কথা দলের সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্যেও এসেছে।

সূত্রগুলো আরও জানায়, দলের নির্দেশ না মানায় কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে, কাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সে বিষয়ে দলের কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় সিদ্ধান্ত হবে। মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজন যারা নির্দেশ উপেক্ষা করে নির্বাচনের মাঠে রয়ে গেছেন তারা দলীয় কোনো পদে থাকলে সাংগঠনিক শাস্তি হবে। পাশাপাশি মন্ত্রী-এমপিদের বিরুদ্ধে নির্বাচনে হস্তক্ষেপের সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সে বিষয়টিতেও দলের সভায় সিদ্ধান্ত হবে। আগামী ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সভা আহ্বান করা হয়েছে।

যদিও এতসব চেষ্টার পরও পুরোপুরি হস্তক্ষেপমুক্ত নির্বাচনের ব্যাপারে আওয়ামী লীগের নীতি-নির্ধারকরা নিশ্চিত হতে পারছেন না বলে সূত্রগুলো বলছে।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেন, (মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজন প্রার্থী না সরলে) সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এ বিষয়ে আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদক স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন। সাধারণ সম্পাদক যেটা বলেছেন সেটাই দলের অবস্থান। আগামী ৩০ এপ্রিল দলের কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হতে পারে।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) এক সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, কেউ নির্দেশা অমান্য করলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ আছে দলে। সময় মতো সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আমাদের দলে ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশনের বিষয়টি আছে। দল যার যার কর্মকাণ্ড বিবেচনায় বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কৌশলে ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশন নিয়ে থাকে। চূড়ান্ত পর্যায়ে যারা প্রত্যাহার করবে না এ ব্যাপারে দলের সিদ্ধান্ত সময়মতো নেওয়া হবে।

চার পর্বে অনুষ্ঠেয় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম পর্বের ভোট হবে আগামী ৮ মে। এ নির্বাচনে মনোয়ন প্রত্যাহারের শেষ সময়ের আগেই মন্ত্রী-এমপির স্বজনদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। কিন্তু সে নির্দেশ উপেক্ষা করেই তারা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থেকে গেছেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ