• বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৪১ অপরাহ্ন

ব্যপক গ্রেফতারের মধ্যেই মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চলছে ইসরাইলবিরোধী বিক্ষোভ

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসির জর্জ ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটিতে ইসরাইলবিরোধী বিক্ষোভ - ফাইল ছবি

মার্কিন কর্তৃপক্ষের গ্রেফতারসহ নানা কঠোর পদক্ষেপ সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ইসরাইলবিরোধী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে। বিক্ষোভকারীদের অন্যতম দাবি, গাজার যুদ্ধ থেকে মুনাফাকারী ইসরাইল-সম্পর্কিত কোম্পানিগুলো থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনিয়োগ প্রত্যাহার করা। ইসরাইলের কাছে অস্ত্র, প্রযুক্তি এবং অন্যান্য পণ্য বিক্রিকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথেও সম্পর্ক ছিন্ন করার দাবি তারা জানাচ্ছে। গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আহ্বানও তারা জানাচ্ছে।

শিক্ষার্থীরা বিখ্যাত অনেক ব্যক্তির সমর্থনও পেয়েছে। এমনকি তাদের দাবি পোর্টল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয় মেনে নিয়েছে।

ক্যাম্পাসে বিক্ষোভের মুখে পোর্টল্যান্ড স্টেট ইউনিভার্সিটি জানিয়েছে, তারা বোয়িং কোম্পানির কাছ থেকে উপহার ও মঞ্জুরি গ্রহণ থেকে বিরত থাকবে। উল্লেখ্য, বোয়িং তাদের ওয়েবসাইটে জানিয়েছে, ইসরাইলি সামরিক বাহিনী বর্তমানে ৯টি বোয়িং পণ্য ব্যবহার করে। আর বোয়িং ইসরাইলি অর্থনীতিতে ৩.৫ বিলিয়ন ডলারের ভূমিকা রাখে।

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের অন্তত ৪০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়েছে ইসরাইলবিরোধী বিক্ষোভ। ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে ইসরাইলের চলমান যুদ্ধবিরোধী এই প্রতিবাদের সূচনা হয় দেশটির কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। এরপর তা দ্রুত সময়ের মধ্যে গোটা দেশের বিভিন্ন ক্যাম্পাসে। বিক্ষোভ সামাল দিতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। এতে চাপে পড়েছে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন।
বিক্ষোভ থামাতে বিভিন্ন পদক্ষেপে ব্যর্থ হওয়ার পর ক্যাম্পাসে পুলিশ ডাকে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট কর্তৃপক্ষ। আটক করা হয়েছে ৫৫০ জন শিক্ষার্থীকে। কোথাও কোথাও শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের নির্যাতনের বিষয়টিও সামনে এসেছে। কিন্তু তাতেও সমাধান হয়নি। উল্টা বিশ্ববিদ্যালয় সিনেট প্রেসিডেন্ট মিনোশি শফিকের বিরুদ্ধে তদন্ত চেয়ে প্রস্তাব পাস হয়েছে। প্রস্তাবটি ৬২-১৪ ভোটে পাস হয়।

এনবিসি টুডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, আমেরিকা জুড়ে ৪০টিরও বেশি ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। এসব ক্যাম্পাসে তাঁবু তৈরি করে গাজায় ইসরাইলি হামলা বন্ধের দাবি করছেন শিক্ষার্থীরা।

জানা গেছে, বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে বোস্টনের ইমারসন কলেজেও। সেখান থেকে কমপক্ষে ১০০ শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়। এছাড়া ওহাইও স্টেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২৪ জনের বেশি শিক্ষার্থীকে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশি।

জর্জিয়ার ইমোরি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর গত বৃহস্পতিবার রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে পুলিশ। ওই দিন দর্শন বিভাগের প্রধান নো লি ম্যাকাফিকে আটকের পরপরই ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়ায়। আটকের আগে তিনি আটলান্টা পুলিশকে শিক্ষার্থীদের তাঁবুর দিকে এগোনোর একটি ভিডিও পোস্ট করেছিলেন। তিনি ওই সময় পুলিশকে থামতে বলার পর তাকে আটক করা হয়। ইমোরি বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতির অধ্যাপক ক্যারোলিন ফোহলিনকেও আটক করে পুলিশ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, নিজের পরিচয় দেয়ার পরও তাকে মাটিতে ফেলে দিয়ে হাতে হাতকড়া পরানো হয়।

ওহাইওতেও পুলিশের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার রাতে শিক্ষার্থীদের আটক করা হয়। ওই দিন রাতে অন্তত ৩০ জনকে আটক করা হয়।

এদিকে লস অ্যাঞ্জেলেসের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়েও ছড়িয়ে পড়েছে উত্তেজনা। সেখানে ইসরাইলপন্থী ও প্যালেস্টাইনপন্থী শিক্ষার্থীরা মুখোমুখি অবস্থান নিয়ে পরস্পরবিরোধী স্লোগান দিচ্ছেন।

মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিক্ষোভে লাগাম টানতে আইনপ্রণেতাদের ক্রমবর্ধমান চাপের সম্মুখীন হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এরই জেরে বিক্ষোভের কেন্দ্রস্থল কলাম্বিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় সিনেট বিক্ষোভ সামাল দেয়ার ক্ষেত্রে প্রশাসনের কার্যক্রম তদন্ত শুরু করেছে।
সূত্র : সিএনএন এবং অন্যান্য


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ