ভারত ও বাংলাদেশের সেনাবাহিনী আগামী সপ্তাহ থেকে ভারতের মিজোরামের ভাইরেংটিতে বিদ্রোহ দমন ও জঙ্গল যুদ্ধ স্কুলে এক নিবিড় যুদ্ধ মহড়া শুরু করতে যাচ্ছে। দ্বিপাক্ষিক সামরিক সম্পর্ক জোরদারের সামগ্রিক নীতির অংশ হিসেবে এ মহড়া অনুষ্ঠিত হবে।
আগামী ৬ থেকে ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত এই ‘মহড়া সম্প্রীতি’ অনুষ্ঠিত হবে। আধা-পার্বত্য জঙ্গলময় এলাকায় বিদ্রোহ-দমন ও সন্ত্রাসবাদ দমন অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি দু’দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে অভিযান সক্ষমতা জোরদার করাই মহড়া সম্প্রীতির লক্ষ্য।
একজন কর্মকর্তা জানান, ভাইরেংটির এ মহড়া সম্প্রীতি-তে মাঠ প্রশিক্ষণ মহড়াও অন্তর্ভুক্ত থাকবে যাতে থাকবে হেলিকপ্টার বাহিত অভিযান ও আইইডি নিষ্ক্রিয়করণ এবং মেঘালয়ের উমরোই সেনানিবাসে মিলাপ নামে অভিহিত একটি কমান্ড পোস্ট মহড়া।
দু’ সেনাবাহিনী ১৩ নভেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিহারের দানাপুর সেনানিবাসে সন্ত্রাস-বিরোধী অভিযান বিষয়ক এক যৌথ প্রশিক্ষণ ক্যাপসুল আয়োজন করবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর জুনিয়র কমান্ডারদের এ ধরনের অভিযান কার্যকরভাবে পরিচালনার প্রশিক্ষণ দেয়াই ক্যাপসুলের প্রধান লক্ষ্য।
সন্ত্রাস-দমন ক্ষেত্রে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার প্রত্যাশী ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী বাংলাদেশ সামরিক বাহিনীর ‘সক্ষমতা তৈরির’ লক্ষ্যে কাজ করছে যার মধ্যে রয়েছে প্রশিক্ষণ ও মহড়া থেকে সামরিক সরবরাহ ও প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি পর্যন্ত। বাংলাদেশ হচ্ছে ভারতের আরেক প্রতিবেশী যেখানে গত কয়েক বছর ধরে চীন কিছুটা কৌশলগত প্রবেশ লাভ করেছে।
ভারত তার সামরিক স্থাপনা ও একাডেমিগুলোতে প্রতি বছর বিভিন্ন কোর্সের ৯০টি শূন্যপদ বালাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর জন্য প্রদান করে। মহারাষ্ট্রের আহমেদনগরে যান্ত্রিক পদাতিক রেজিমেন্টাল সেন্টারে ১শ’ বাংলাদেশী সৈন্যের জন্য বিশেষ ভাবে প্রণীত প্রশিক্ষণ কর্মসূচিও রয়েছে।
এ ছাড়াও ভারতীয় সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী তাদের বাংলাদেশ প্রতিপক্ষের সাথে নিয়মিত ভাবে স্টাফ পর্যায়ে বৈঠক করে। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, ভারত দু’দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে ভবিষ্যৎ সহযোগিতার খসড়া প্রণয়নের জন্য ২০০৯ সাল থেকে বাংলাদেশের সাথে সরাসরি আর্মি টু আর্মি স্টাফ বৈঠক অনুষ্ঠিত করে আসছে।
এ বৈঠকের মূল্যায়ন করা যায় এ থেকে যে ভারত অল্প কিছু দেশের সাথেই শুধু অনুরূপ সরাসরি স্টাফ বৈঠক করে যাদের মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইসরাইল, ফ্রান্স, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও সিঙ্গাপুর।
অনুরূপ ভাবে দ্বিপাক্ষিক নৌবাহিনী সহযোগিতা ঐতিহ্যগত ভাবেই খুব শক্তিশালী যার মধ্যে রয়েছে সক্ষমতা তৈরি ও সক্ষমতা বৃদ্ধি উদ্যোগের পাশাপাশি প্রশিক্ষণ, পোর্ট কল, প্যাসেজ এক্সারসাইজের মাধ্যমে অপারেশনাল মিথস্ক্রিয়াসহ ব্যাপক ভিত্তিক কার্যক্রম। বাংলাদেশ নৌবাহিনী ভারত মহাসাগর সিম্পোজিয়ামের (আইওএনএস) বর্তমান সভাপতি। উল্লেখ্য, আইওএনএস হচ্ছে ভারতীয় নৌবাহিনীর চালু করা বহুমুখী নৌসহযোগিতা প্ল্যাটফরম।